Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

আজ ভোটযুদ্ধে কালিয়াগঞ্জ, কড়া নিরাপত্তায় উপনির্বাচনের প্রস্তুতি সারা

এমন পরিস্থিতিতে পুলিশ-প্রশাসনের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে থানায় বসিয়ে রাখার অভিযোগ তুলে সরব হল বিজেপি। ওই দলের নেতাদের নালিশ, ভোট লুট করতে রবিবার সকাল থেকে রায়গঞ্জ ও কালিয়াগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় বহিরাগত দুষ্কৃতীদের জড়ো করেছে তৃণমূল।

ভোট-যাত্রা: বুথের পথে। কালিয়াগঞ্জের ডিসিআরসি থেকে ইভিএম নিয়ে হাঁটা ভোটকর্মীদের। ছবি: চিরঞ্জীব দাস

ভোট-যাত্রা: বুথের পথে। কালিয়াগঞ্জের ডিসিআরসি থেকে ইভিএম নিয়ে হাঁটা ভোটকর্মীদের। ছবি: চিরঞ্জীব দাস

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালিয়াগঞ্জ শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০১৯ ০২:৩৭
Share: Save:

সোমবার সকাল হলেই ভোট কালিয়াগঞ্জে। তার আগে ওই বিধানসভা কেন্দ্রের কত বুথে থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী, কতগুলি বুথই বা স্পর্শকাতর— রবিবারও তা স্পষ্ট করল না জেলা পুলিশ ও প্রশাসন।

এমন পরিস্থিতিতে পুলিশ-প্রশাসনের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে থানায় বসিয়ে রাখার অভিযোগ তুলে সরব হল বিজেপি। ওই দলের নেতাদের নালিশ, ভোট লুট করতে রবিবার সকাল থেকে রায়গঞ্জ ও কালিয়াগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় বহিরাগত দুষ্কৃতীদের জড়ো করেছে তৃণমূল। একইসঙ্গে বিজেপির দাবি, ভোটের লুটের চেষ্টা করা হলে এ বার সাধারণ মানুষই তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবেন। যদিও তৃণমূল নেতৃত্বের তরফে ওই অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিষয়ে বিজেপির অভিযোগ মানেননি জেলাশাসক তথা জেলা নির্বাচনী আধিকারিক অরবিন্দকুমার মিনা, জেলা পুলিশ সুপার সুমিত কুমার। এ দিন দুপুরে রায়গঞ্জের পলিটেকনিক কলেজে ভোটসামগ্রী বিতরণ ও গ্রহণকেন্দ্র ঘুরে দেখেন দু’জনেই। সেখানে তাঁরা বলেন, ‘‘কালিয়াগঞ্জে কত বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে ও কতগুলি বুথ স্পর্শকাতর তা বলা সম্ভব নয়। কে, কী অভিযোগ তুলছেন তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না।’’

প্রশাসনিক সূত্রে খবর, কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে ২৭০টি বুথ রয়েছে। সোমবার সকাল ৭টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ। দু’সপ্তাহ আগে কালিয়াগঞ্জে পাঁচ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী এসেছে। তার পর আর কেন্দ্রীয় বাহিনী আসেনি। ১৩৫টি বুথে ওয়েব কাস্টিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে। তার মাধ্যমে ক্যামেরার সাহায্যে কলকাতা ও দিল্লির দফতরে বসে বুথের নির্বাচন প্রক্রিয়া সরাসরি দেখতে পারবেন আধিকারিকেরা।

জেলা নির্বাচন দফতরের এক আধিকারিকের বক্তব্য, যে সমস্ত বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন থাকে না, সাধারণ ভাবে সে সব বুথে কমিশনের নজরদারিতে ভোট প্রক্রিয়া স্বাভাবিক রাখতে ওয়েব কাস্টিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়। ফলে সেই নিয়ম অনুযায়ী কালিয়াগঞ্জের ৫০ শতাংশ বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন না থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।

এ দিন রায়গঞ্জে দলের জেলা কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেন বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ লাহিড়ী। তিনি অভিযোগ করেন, গত বছর পঞ্চায়েত নির্বাচনে কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের বরুণা, রাধিকাপুর, ভাণ্ডার, মালগাঁও ও মোস্তাফানগর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার শতাধিক বুথে সন্ত্রাস চালিয়েছে তৃণমূল। কোথাও বুথজ্যাম করে বিরোধী ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে ঢুকতে বাধা দিয়েছে, কোথাও শাসকদলের নেতা-কর্মীরা বুথে ঢুকে পুলিশের সামনে ছাপ্পা ভোট দিয়েছেন। বিশ্বজিতের কথায়, ‘‘পুলিশ ও প্রশাসন গোড়া থেকেই কালিয়াগঞ্জ থানা ও বিভিন্ন ক্যাম্পে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে বসিয়ে রেখেছে। ওই পাঁচটি গ্রাম পঞ্চায়েতের বেশির ভাগ বুথ এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের টহলে পাঠানো হয়নি।’’ তাঁর নালিশ, ‘‘পুলিশ ও প্রশাসনের মদতে ভোট লুট করতে রায়গঞ্জ ও কালিয়াগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় তৃণমূল বাইরে থেকে দুষ্কৃতীদের জড়ো করেছে। তৃণমূল কোনও বুথে ভোট লুটের চেষ্টা করলে এ বার সাধারণ মানুষ একজোট হয়ে লুটেরাদের উপযুক্ত জবাব দেবেন।’’

এ নিয়ে তৃণমূলের কালিয়াগঞ্জের নির্বাচনী পর্যবেক্ষক তথা রাজ্যের শ্রম দফতরের প্রতিমন্ত্রী গোলাম রব্বানির বক্তব্য, ‘‘বিজেপি মিথ্যা অভিযোগ তুলে পুলিশ, প্রশাসন ও তৃণমূলকে চাপে রেখে ও সন্ত্রাস চালিয়ে কালিয়াগঞ্জে ভোটে জেতার ছক করেছে। কিন্তু মানুষ এনআরসি রুখতে ও উন্নয়নের স্বার্থে নির্বাচনে তৃণমূলকে জয়ী করার শপথ নিয়েছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kaliyaganj Assembly By Election Tight Security
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE