শেষ মুহূর্তে। কোচবিহারে রং হচ্ছে বিশ্বকর্মা মূর্তি। —নিজস্ব চিত্র।
হামানদিস্তায় কাঁচ গুঁড়ো করতে হতো। সেই গুঁড়ো দিয়ে তৈরি হতো মাঞ্জা। ধারালো সুতোয় বাঁধা ঘুড়ি সামলানোর লাটাইও নকশাকাটা। বিশ্বকর্মা পুজোর দিন আকাশে লড়াই। প্রবীণদের অনেকের মধ্যেই ঘুড়ির লড়াইয়ের স্মৃতি টাটকা।
আজ, শনিবার কোচবিহারের সীমান্ত শহর দিনহাটায় ঘুড়ি উৎসবের আয়োজন হয়েছে। নানা বাহারি ঘুড়ির জোর পাল্লা হবে সীমান্ত ছোঁয়া আকাশে। যদিও, উত্তরবঙ্গের সর্বত্র ঘুড়ির তেমন চাহিদা নেই। তবে বাজারে রং-বে-রঙের ঘুড়ির পসরা। ঘুড়ির তেমন বাজার কাটতি না থাকলেও সব্জির বাজারদর আকাশছোঁয়া। কোচবিহার থেকে বালুরঘাট সর্বত্রই লাফিয়ে বেড়েছে সব্জির দাম। বিশ্বকর্মা পুজোর আগে বাজারদরের ঊর্দ্ধগতি দেখে উদ্বেগে ক্রেতারা। কয়েক সপ্তাহ পার হলেই উৎসবের মরসুম শুরু। তখন বাজার আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা। যদিও, ব্যবসায়ীদের একাংশের দাবি, মাসখানেকের মধ্যে শীতের শাক-সব্জি বাজারে আসতে শুরু করবে তখন দর খানিকটা হলেও কমবে।
ঘুড়ি উৎসব
আজ শনিবার বিকেলে দিনহাটা স্টেশন লাগোয়া এলাকায় ঘুড়ি উৎসবের আয়োজন হয়েছে। স্টেশন রোড (মুক্তধারা) সুর্বণজয়ন্তী সার্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির এবার সুর্বণজয়ন্তী। তারাই উৎসবের উদ্যোক্তা। শতাধিক ঘুড়ি কিনেছেন আয়োজকরা। কমিটির কর্তা অসীম নন্দী-র দাবি, “শহরের আকাশ রঙিন ঘুড়িতে ঢেকে দেব।” উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, উৎসাহী আগ্রহীদের কিছু সংখ্যককে আগে আসলে আগে পাবেন ভিত্তিতে লাটাইও দেওয়া হবে।
ক্রেতারা কই
প্লাস্টিকের ঘুড়ি নিয়েই পসরা সাজিয়েছিলেন রাজু অগ্রবাল। জলপাইগুড়ির দিনবাজারে প্রতিবছরই ঘুড়ির বাজার বসে। এবারেও নানা রঙে সেজেছে বাজার। কিন্তু ক্রেতা কোথায়? রাজুবাবু জানালেন সকাল থেকে মাত্র ১০টি ঘুড়ি বিক্রি হয়েছে। লাটাই বিক্রি হয়েছে পাঁচটি। ঘুড়ি নিয়ে আক্ষেপ রয়েছে প্রবীণদের। প্রবীণ লেখক উমেশ শর্মা বলেন, ‘‘কিছুদিন আগেও শহরের আকাশে বাহারি ঘুড়ি উড়তে দেখা যেত। এখন কমতির দিকে হলেও, কিছু ঘুড়ি এখনও উড়তে দেখা যায়।’’
বাজার চড়েছে
রাতারাতি দর বেড়েছে বাজারের। কোচবিহারের বাজারগুলিতে এদিন আপেল ১৪০ টাকা, আঙুর ৫০০ টাকা, শশা ৩৫ টাকা, আম ১০০ থেকে ৩০০ টাকা, কুল ১২০ টাকা কেজি প্রতি বিক্রি হয়েছে। কলা একটি ৩ থেকে ৪ টাকা বিক্রি হয়েছে। আনারস, আখ একটি ৪০ টাকা করে বিক্রি হয়েছে। একটি তালের দাম ছিল ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, একটি ডাবের দাম টাকা। আজ, শনিবার বিশ্বকর্মা পুজোর সকালে ওই জিনিসের দাম আরও খানিকটা বেড়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। দাম বেড়েছে সব্জিরও।
কেন বাড়ল দাম
চাহিদা বাড়ায়, প্রভাব পড়েছে দামেও। এমনই দাবি ব্যবসায়ীদের। রায়গঞ্জের মোহনবাটি বাজারের সব্জি ব্যবসায়ী কমল সাহা দাবি করেছেন, বিভিন্ন পুজোর দিনে সব্জির চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় পাইকারি বাজারে কেজি প্রতি বিভিন্ন সব্জির দাম গড়ে ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়ে যায়। তবে জোগান স্বাভাবিক থাকলে দাম বাড়ার কথা নয়। অভিযোগ, জোগান যেমনই থাকুক, ব্যবসায়ীদের একাংশ ইচ্ছে করে সরবরাহ কমিয়ে দাম বাড়িয়ে দেয়। এ ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে বলে অভিযোগ একাংশ বাসিন্দাদের। কোচবিহারের জেলাশাসক পি উলগানথন বলেন, ‘‘বিভিন্ন বাজারে নজরদারি শুরু হয়েছে। কোথাও কোনও অভিযোগ পেলেই অভিযান চালানো হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy