Advertisement
E-Paper

ভিন্ রাজ্যে নিখোঁজ বাগানের শ্রমিক, এক কিশোরও

ভিন রাজ্যে কাজ করতে গিয়ে শুধু তিনি নন, নিখোঁজ হয়েছে ডুয়ার্সের ওই চা বাগানের এক কিশোরও।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:২২
অসহায়: পরন্তুশ ওরাওঁ পরিবার। —নিজস্ব চিত্র।

অসহায়: পরন্তুশ ওরাওঁ পরিবার। —নিজস্ব চিত্র।

এক বছর আগে কেরলে কাজ করতে গিয়েছিলেন বানারহাটের বন্ধ রেড ব্যাঙ্ক চা বাগানের এক শ্রমিক। প্রথম মাস তিনেক বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ থাকলেও তারপর আর খোঁজ নেই তাঁর। বারবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। এখন নিদারুণ অর্থ কষ্টে দিন কাটছে পরন্তুশ ওরাওঁ এর স্ত্রী পুত্র পরিবারের।

ভিন রাজ্যে কাজ করতে গিয়ে শুধু তিনি নন, নিখোঁজ হয়েছে ডুয়ার্সের ওই চা বাগানের এক কিশোরও। ২০১১ সালে দ্বিতীয়বার রেড ব্যাঙ্ক চা বাগান বন্ধ হওয়ার পর চার্চ লাইনের বাসিন্দা বাবলু ওঁরাওয়ের ১২ বছরের ছেলে পদু ওঁরাও প্রতিবেশীর সঙ্গে দিল্লিতে কাজে গিয়েছিল। প্রথম কয়েকমাস ছেলের খোঁজ জানলেও তারপর প্রায় ১০ বছর ছেলের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ নেই পরিবারের। বাগানের যে ব্যক্তি ওই কিশোরকে দিল্লিতে কাজে নিয়ে গিয়েছিল তিনি কিছুদিন পর নিজেই অসুস্থ হয়ে বাগানে ফিরে এসে মারা যান। তারপর ছেলের আর কোনও খোঁজ পায়নি পরিবারের লোকজন। ওই কিশোরের কাকা এতোয়া ওড়াঁও বলেন, “দোকানে কাজ করে ভাল উর্পাজন হবে বলে এক প্রতিবেশী আমার ভাইপোকে দিল্লিতে কাজে নিয়ে গিয়েছিল। তিনি অসুস্থ হয়ে মারা যাওয়ার পর আর ভাইপোর খোঁজ মেলেনি।’’

কেরলে কাজ করতে যাওয়ার পর প্রথম তিন মাস বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ থাকলেও তারপর আর পরন্তুশের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেনি তাঁর পরিবার। তিন ছেলে ও দুই মেয়েকে নিয়ে দারুণ অর্থকষ্টে দিন কাটছে তাঁর স্ত্রীর। টাকার অভাবে দুই ছেলে ও এক মেয়ের পড়াশোনা বন্ধ। নদীতে পাথর ভেঙে দিনে ১৩০-১৫০ টাকা উপার্জনে কোনওমতে সচল রেখেছেন সংসারের চাকা। সবিতা ওঁরাও বলেন, “স্বামীর খোঁজ নেই। পাঁচ সন্তানকে নিয়ে খুব কষ্টে দিন কাটছে। অনেকেই বলেছিল থানায় জানিয়ে কোনও লাভ হবে না। তাই থানায় যাইনি।’’ তাঁর কথায়, ‘‘মানুষটা কোথায় কী ভাবে আছেন, কিছুই জানি না।”

দার্জিলিং জেলা আইনি সহায়তা কেন্দ্রের কো-অর্ডিনেটর অমিত সরকার জানান, ‘‘বুধবার আমরা বাগানে সমীক্ষা করতে গিয়ে নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা দু’টি জানতে পারি। তারপরেই বৃহস্পতিবার নিখোঁজ দু’জনের খোঁজ পেতে জলপাইগুড়ির জেলাশাসক, পুলিশ সুপার, মানবাধিকার কমিশন ও হাইকোর্টে লিখিতভাবে আবেদন করেছি।”

জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার জানান, “নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার ঘটনা জানা নেই। তবে তাঁদের পরিবারের সদস্যরা এসে আমার সঙ্গে দেখা করলে বিস্তারিত জেনে ব্যবস্থা নেব।”

বানারহাট সাংগঠনিক ব্লক তৃণমূলের সভাপতি ও চা শ্রমিক নেতা রাজু গুরুঙ্গ বলেন, “নিখোঁজ পরিবারের পক্ষ থেকে আমাকে কিছু জানানো হয়নি। আমি ওই দু’টি পরিবারে খোঁজ নিচ্ছি। নিখোঁজরা কী অবস্থায় আছে তা জানার চেষ্টা করব।’’ এই বাগানের প্রায় দেড়’শ জন কিশোর-কিশোরী ও শ্রমিক ভিন রাজ্যে কাজে গিয়েছেন।

Missing Person বানারহাট
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy