Advertisement
E-Paper

নগদের অভাবে ধান চাষের সঙ্কট গভীর

পর্যাপ্ত নগদ নেই। তাই মাঠেই পড়ে রয়েছে আমন। কারণ, নগদে মজুরি না দিতে পারায় ধান কাটার লোক মিলছে না। অবশ্য নোটের আকালে ধান কেটেও খদ্দের মিলছে না বাজারে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০১৬ ০২:২৩

পর্যাপ্ত নগদ নেই। তাই মাঠেই পড়ে রয়েছে আমন। কারণ, নগদে মজুরি না দিতে পারায় ধান কাটার লোক মিলছে না। অবশ্য নোটের আকালে ধান কেটেও খদ্দের মিলছে না বাজারে। তাই সুবল বর্মন, হরেন রায় কিংবা শেখ মহম্মদের মতো অনেক চাষিই দু’দফায় বাজারে গিয়েও ধান নিয়ে ফিরে এসেছেন বাড়িতে। আলুচাষিদের সমস্যাও কম নয়। নগদের অভাবে তাঁরা বীজ কেনা, বীজতলা তৈরি, সার সংগ্রহের কাজও ঠিকঠাক করতে পারছেন না। ফলে ফালাকাটা থেকে ধূপগুড়ি কিংবা খড়িবাড়ি, কোচবিহার অথবা তপন, গঙ্গারামপুরের চাষিরা অনেকে শঙ্কিত।

আরও অনেক সমস্যা রয়েছে। যেমন, মালবাজারের ভুট্টাবাড়ি চা বাগান লাগোয়া এলাকায় ধান না কেটে উপায় নেই। কারণ, পাকা ধানের লোভে জঙ্গল থেকে হানা দেয় হাতির দল। তাই ধান কাটতেই হবে।

হাতির হানার ভয়ে আগেভাগে ধান কেটে রেখেছেন শিলিগুড়ি লাগোয়া সাহুডাঙির বাসিন্দা মলিন বর্মন। গত মাসের মাঝামাঝি জমির ধান কেটেছেন। কাটা ধান ঝাড়াই মারাইও হয়েছে। কিন্তু হাটে ধান বিক্রি হচ্ছে না বলে জানালেন তিনি। দু’দিন রাজগঞ্জের হাটে গিয়ে ফিরে এসেছেন। তিনি বলেন, ‘‘উঠোনেই ধান রেখে দিতে হয়েছে। হাতি হানা দিলে সব নষ্ট হবে।’’

আবার পোকার আক্রমণের ভয়ে রয়েছেন শিলিগুড়ি লাগোয়া ছত্রপাড়ার কৃষক শচীন রায়। আড়াই বিঘে জমিতে আমন ধান লাগিয়েছিলেন তিনি। এখন পাকা সোনালি ধানের বেশ কিছু ধূসর হয়ে গিয়েছে। শচীনবাবু বলেন, ‘‘হবেই তো, রোদে পুড়ে যাচ্ছে। অন্তত ১৫ দিন আগে ধান কেটে ফেলা উচিত ছিল। মজুরি দিতে পারছি না বলে ধান কাটার লোক পাইনি।’’

আবার মালদহের হবিবপুর ব্লকের শ্রীরামপুরের কৃষক আনন্দ সরকার পরিচিতদের বলে কয়ে কিস্তিতে মজুরি দিয়ে ধান কাটতে পেরেছেন। তবে ধান এখনও ঘরে তুলতে পারেননি। কেননা শ্রমিকরা ধান মাড়াই করার পরে বাড়িতে পৌঁছে দিতে রাজি হয়নি।

আলুর খেতেও আতঙ্কের ছবি।

সাহুডাঙির লগেন রায় মাটি কুপিয়ে আলুর জন্য খেত প্রস্তুত করে রেখেও সমস্যায় পড়েছেন বীজ কিনতে গিয়ে। লগেনবাবুর কথায়, ‘‘ভাল আলুর বীজের দাম কুইন্টাল প্রতি তিন হাজার টাকা। এত টাকা জোগাড় করতে পারিনি, তাই জমি খালিই পড়ে রয়েছে।’’

সমস্যা বড় আকার নিয়েছে কোচবিহার জেলায়। কৃষকদের অনেকেই চাষ শুরু করতে পারেননি। অনেকে চাষ শুরু করেও মাঝপথে আটকে গিয়েছেন।

মালদহের চাঁচলের রানিকামাত গ্রামে ধূ ধূ করছে ফাঁকা মাঠ। ঘরে যা ছিল সব দিয়ে ধান কাটতে পেরেছেন আনিসুর রহমান। কিন্তু আলু বা গম লাগানোর উপায় নেই তাঁরও। উত্তরবঙ্গের সবথেকে বেশি আলু চাষ হয় ধূপগুড়ি ও ফালাকাটায়। সেখানেও নগদের টানাটানি।

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে আলু চাষের জন্য ৩৯ হাজার টাকা ঋণ পেয়েও ঘুম নেই বালুরঘাটের পার্বতীপুর গ্রামের গৌরাঙ্গ সরকারের। বলেন, ‘‘ঋণ পেয়েছি। কিন্তু, নগদ তো হাতে পাচ্ছি না। কী করব?’’

Rice cultivation
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy