Advertisement
E-Paper

অ্যাসিডে দগ্ধ মেয়ে

পণের দাবিতে অত্যাচার চালানোর অভিযোগ আগেই উঠেছিল শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে। সে জন্য এক সময় বাপের বাড়িতে চলে আসেন তরুণী। কিন্তু তাতেও তিনি রেহাই পেলেন না। অভিযোগ, বুধবার রাতের অন্ধকারে সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে ঢুকে স্ত্রীর মুখে অ্যাসিড ঢেলে পালিয়ে যান স্বামী।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০১৮ ০৭:০৫
অমানবিক: অ্যাসিডে আক্রান্ত নির্যাতিতা ভর্তি কিসানগঞ্জ মেডিক্যাল কলেজে। নিজস্ব চিত্র

অমানবিক: অ্যাসিডে আক্রান্ত নির্যাতিতা ভর্তি কিসানগঞ্জ মেডিক্যাল কলেজে। নিজস্ব চিত্র

পণের দাবিতে অত্যাচার চালানোর অভিযোগ আগেই উঠেছিল শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে। সে জন্য এক সময় বাপের বাড়িতে চলে আসেন তরুণী। কিন্তু তাতেও তিনি রেহাই পেলেন না। অভিযোগ, বুধবার রাতের অন্ধকারে সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে ঢুকে স্ত্রীর মুখে অ্যাসিড ঢেলে পালিয়ে যান স্বামী। গোয়ালপোখর থানার কামারপুর গ্রামের ঘটনা। অভিযোগ, তরুণীর বাঁ চোখ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তিনি কিসানগঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি। স্বামী পলাতক। তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ গ্রেফতার করেছে তরুণীর ননদাইকে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩২৬ এবং ৩০৭ ধারায় মামলা করা হয়েছে।

প্রেমে প্রত্যাখ্যাত হয়ে অ্যাসিড মারার ঘটনা এর আগেও বহু ক্ষেত্রে ঘটেছে। কলকাতার মনীষা পৈলানকে অ্যাসিড আক্রমণে তো তাঁর স্বামীই অভিযুক্ত ছিলেন। এই ধরনের হানা সামলাতে সরকার থেকে তাই অ্যাসিড বিক্রি নিয়ে বিধিনিষেধ কঠোর করা হয়েছে। কারখানায় যে সব অ্যাসিড ব্যবহার করা হয়, সেগুলি সরকারি অনুমোদন ছাড়া কেনা যায় না।

তবু যে বেআইনি অ্যাসিড বিক্রি পুরোপুরি বন্ধ করা যায়নি, সেটা গোয়ালপোখরের ঘটনা থেকেই স্পষ্ট, বলছেন পুলিশেরই একাংশ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দু’বছর আগে পাশের গ্রামের এক ব্যক্তির সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল কামারপুর গ্রামের সেই আক্রান্ত তরুণীর। কিন্তুর বিয়ের পর থেকেই অতিরিক্ত পণের দাবিতে শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁর উপরে অত্যাচার চালাত বলে দাবি তরুণীর পরিবারের। এমনকী, মেয়েকে না খাইয়ে রাখার নালিশও করেছেন তাঁরা। অত্যাচার সহ্য করতে না পের এক বছর আগে তিনি বাপের বাড়িতে চলে আসেন।

তরুণীর পরিবারের দাবি, এর পরে স্বামীর বাড়ি থেকে চাপ বাড়ানো হয় ফিরে আসার জন্য। গ্রামে এই নিয়ে সালিশি বসে বলেও স্থানীয়দের দাবি। সেখানে অবশ্য সিদ্ধান্ত হয়, বিবাহ বিচ্ছেদের দেবেন ওই তরুণীর স্বামী। স্ত্রীর নামে তিনি দু’বিঘা জমি লিখে দেবেন বলেও অঙ্গীকার করা হয়। বিচ্ছেদের মামলা চলছে। কিন্তু তিন মাস ধরে বিষয়টি নিয়ে কোনও উচ্চবাচ্য করেননি স্বামী। তখন তাঁর বিরুদ্ধে বধূ নির্যাতনের মামলা করা হয়। তাতে ১৫ দিনের জেলও হয় স্বামীর। পরিবারের অভিযোগ, জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরে তিনি এসে মাঝে মাঝেই হুমকি দিতেন, মামলা তুলে নেওয়ার জন্য।

তরুণীর বাবার দাবি, ‘‘এই আক্রোশেই আমার মেয়েকে অ্যাসিড মারল ও।’’ তাঁর কথায়, ‘‘রাত তখন দশটা। বাড়িতে বিদ্যুৎ ছিল না। মেয়ে মায়ের সঙ্গে ঘুমিয়ে পড়েছিল। সেই সময়ে হঠাৎই বাড়িতে হানা দেয় জামাই। সঙ্গে আরও লোকজন ছিল ওর। মেয়ের মুখে অ্যাসিড ছুড়ে, তার পরে আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে পালিয়ে যায় ওরা।’’

পরিবারের লোকজনেরা জামাইয়ের নামে থানায় নালিশ করেন। গোয়ালপোখর থানা সূত্রে জানানো হয়েছে, জামাই পলাতক। তবে তাঁর এক সঙ্গী, বোনের জামাইকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জামাইয়ের খোঁজ পাওয়ার চেষ্টা চলছে।

অ্যাসিড কোথা থেকে এল, তা-ও বড় প্রশ্ন। পুলিশের দাবি, বিহার থেকে অ্যাসিড এনেছে অভিযুক্ত। তবে পুরো বিষয়টি তদন্ত না করে এখনই চূড়ান্ত কিছু বলতে নারাজ তারা।

Acid Attack Acid Attack Victim Husband গোয়ালপোখর
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy