সোমা দত্ত পাল।
স্কুল চলাকালীন আচমকা অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হল এক শিক্ষিকার। মঙ্গলবার ডুয়ার্সের মেটেলি নিম্ন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের ঘটনা। স্কুলের শিক্ষিকা সোমা দত্ত পাল এ দিন স্কুলের শিক্ষিকাদের বসার ঘরে চেয়ারে বসা অবস্থাতেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। অচেতন অবস্থায় দ্রুত তাঁকে মালবাজার সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। মৃত্যুকালে সোমাদেবীর বয়স হয়েছিল মাত্র ৪৪ বছর।
সোমাদেবীর নিজের বাড়ি, শ্বশুরবাড়ি, সবই মালবাজার শহরে। তিনি মালবাজারের কলোনি এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। ১০ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর কলোনি এলাকাতে সোমাদেবীর শ্বশুর বাড়ি। তাঁর মৃত্যুর খবরে মালবাজার শহরে শোক ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই মালবাজার সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চলে আসেন। মালবাজার পুরসভার চেয়ারম্যান স্বপন সাহাও হাসপাতালে আসেন। বিরোধী দলনেতা সুপ্রতীম সরকারও গভীর শোক প্রকাশ করেন। ঘটনার খবর পৌঁছে যায় মালবাজারের মহকুমাশাসকের কাছেও। মহকুমাশাসক সিয়াদ এন মহকুমা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কর্তব্যরত অবস্থায় শিক্ষিকার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেন।
সোমাদেবীর আট বছর বয়সী দুই যমজ সন্তান রয়েছে। তাঁর স্বামী, চা বাগান কর্মী ও ট্রেড ইউনিয়ন সংগঠক কৌশিক পাল ঘটনার অভিঘাতে এ দিন কার্যত বাকরুদ্ধ হয়ে পরেন। ২০০৪ সালে ইতিহাস বিষয়ে স্কুল শিক্ষিকা হিসাবে জলপাইগুড়ির একটি স্কুলে চাকরিতে যোগ দেন সোমা। ২০১২-য় মেটেলিতে বদলি হয়ে আসেন তিনি। চাকরির আগে মালবাজার শহরে গৃহশিক্ষিকতা করতেন সোমাদেবী। শহরের বাসিন্দা, প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীরাও এই খবরে কার্যত ভেঙে পড়েন। সোমাদেবীর প্রতিবেশী এবং কৌশিক বাবুর বাল্যবন্ধু সিকিমের কেন্দ্রীয় আবহাওয়া বিভাগের আধিকারিক গোপীনাথ রাহাও এ দিন খবর পেয়েই মালবাজারের উদ্দেশে রওনা হয়ে যান। এমন দুঃসংবাদ তাঁর কাছে অবিশ্বাস্য বলে জানান গোপীনাথবাবুও।
মেটেলি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষিকা সঙ্গীতা চক্রবর্তী বলেন, “সোমা আমার পাশেই প্রতিদিন বসত। এ দিনও সেখানেই বসেছিল। আচমকাই ও অচেতন হয়ে পড়ে। আমরা দ্রুত মালবাজার সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাই। কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ।” মালবাজার হাসপাতালের চিকিৎসকদের অনুমান, হৃদরোগ বা মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের ফলে তাঁর মৃত্যু হতে পারে। ময়নাতদন্তের পরে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে বলে তাঁরা জানান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy