নাগাড়ে বৃষ্টিতে এ বার বিপর্যস্ত হতে শুরু করেছে রেল চলাচলও। রবিবার সকালে শিলিগুড়ি লাগোয়া মাটিগাড়ায় রেল লাইনের পাশ থেকে মাটি ধসে যায়। ধসে পড়ার উপক্রম হয় রেল লাইনেরই। খবর পেয়েই শিলিগুড়ি জংশন থেকে বাগডোগরা পর্যন্ত ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। রেল লাইনের ওপর দিয়ে জল বইতে থাকায় ডুয়ার্সের বানারহাট দিয়েও ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয় এ দিন সকালে। ধস অথবা জলমগ্ন হওয়ার কারণে ট্রেন চলাচল সাময়িক বিপর্যস্ত হয়ে পড়লেও, রেল কর্তাদের ঘুম কেড়েছে উত্তরবঙ্গের কয়েকটি রেল সেতুর পরিস্থিতি। ক্রমাগত জলের ধাক্কায় সেতুর স্তম্ভগুলি দুর্বল হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। সম্প্রতি সেবক রেল সেতুর স্তম্ভ নড়বড়ে হয়ে পড়েছে বলে রিপোর্ট পেয়ে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।
রেল সূত্রের খবর, শিলিগুড়ি লাগোয়া রাঙাপানির মহানন্দা রেল সেতু, ডং সেতু সাহু নদীর সেতু নিয়ে চূড়ান্ত সতকর্তা জারি করেছে রেল। জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া তিস্তা নদীতে প্রবল জলস্রোতে দোমহনী রেল সেতু নিয়েও আশঙ্কাও রেল কর্তৃপক্ষ।
রেলের তরফে সেচ দফতরের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। বৃষ্টিপাতের পরিমাণ, কোন নদীতে কত জল বাড়ছে তার তথ্য নিচ্ছে রেল। উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের নিউ জলপাইগুড়ির (এনজেপি) এরিয়া ম্যানেজার পার্থসারথি শীল বলেন, ‘‘প্রতি বর্ষাতেই রেল লাইনে নজরদারি চালানো হয়। তবে এ বারে তুলনামূলক বেশি বৃষ্টিপাত চলতে থাকায় প্রতি ঘণ্টায় নজরদারি চলছে। নজরদারি চালাতে গিয়েই এ দিন মাটিগাড়ার ধসের খবর পাওয়া গিয়েছে। রেল সেতুগুলি নিয়েও আশঙ্কা রয়েছে।’’
এ দিন সকাল আটটা নাগাদ মাটিগাড়ার ধস রেল কর্মীদের নজরে আসে। শিলিগুড়ি জংশন থেকে মাটিগাড়া স্টেশন হয়ে বাগডোগরা পর্যন্ত রেল লাইন তুলনামূলক নিচু এলাকাগুলি দিয়ে গিয়েছে। সে কারণে লাইন পাতার সময়ে বাঁধ তৈরি করতে হয়েছিল রেলকে। টানা বৃষ্টিতে সেই বাঁধের নীচের দিকে মাটি ধসতে শুরু করে। বেশ কিছুক্ষণ চলার পরে পাথর, মাটি সবই নীচে ধসে পড়ে। রেল লাইনের এক দিকের বাঁধের অংশ প্রায় ২০ মিটার জুড়ে ভেঙে যায়। খবর পেয়ে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। নিউ জলপাইগুড়িগামী পাহাড়িয়া এক্সপ্রেসকে শিবমন্দির এলাকায় দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। শিবমন্দির বাজারেও রেল লাইনের ওপর দিয়ে জল বইতে থাকে। বাগডোগরাগামী দু’টি প্যাসেঞ্জার ট্রেন, কোচবিহারগামী ডিএএমইউ ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখা হয়। বানারহাট স্টেশন দিয়েও ঘণ্টাখানেক ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকে।
বৃষ্টিতে জল বেড়েছে মহানন্দা সাহু সহ সব নদীতে। ফুলে ফেঁপে ওঠা নদীর জলের ক্রমাগত ধাক্কায় রেল সেতুর স্তম্ভে নানা চ্যূতি দেখা গিয়েছে। বর্ষার আগে তা মেরামত করা সম্ভব নয় বলে দাবি।
সে কারণে এনজেপি থেকে অসম, দিল্লি এবং কলকাতা লাইনে চলাচলকারী সব ট্রেনের গতি কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। রাতের বেলাও রেল সেতুগুলিতে স্থায়ী নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে রেলের দাবি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy