Advertisement
E-Paper

কেন বুনো শহরে আসছে

কিন্তু বারবার কেন বুনোরা লোকালয়ে ঢুকছে। পরিবেশপ্রেমীদের দাবি, জঙ্গলে খাবারের অভাব রয়েছে, তাই সহজে খাবার পেতেই বুনোরা বারবার ঢুকছে লোকালয়ে। হাতির পাল জমির ফসল, মিড-ডে মিলের চাল সাবাড় করছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ মে ২০১৮ ০৩:০২
আক্রোশ: খাঁচায় বন্দি চিতাবাঘকে নিয়ে যাচ্ছেন বনকর্মীরা। শিলিগুড়িতে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

আক্রোশ: খাঁচায় বন্দি চিতাবাঘকে নিয়ে যাচ্ছেন বনকর্মীরা। শিলিগুড়িতে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

কখনও ঢুকছে হাতি, কখনও শহরে আসছে চিতাবাঘ। গত এক দশকে বারবার শিলিগুড়ি ও সংলগ্ন এলাকায় বুনোদের হানার ঘটেই চলেছে। গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকবার শিলিগুড়ির শক্তিগড়, সেবক রোড, মিলনমোড়ে বুনো হাতির দাপাদাপিতে ঘুম ভেঙেছে বাসিন্দাদের। কলাগাছ মুড়ে খেয়ে শপিং মলের সামনে মোটরবাইক ভাঙচুর করেছে দাঁতাল। আবার একাধিকবার চিতাবাঘ ঢোকার ঘটনাও ঘটেছে। হাকিমপাড়া থেকে নকশালবাড়ি, লিম্বুবস্তি বা উত্তরায়ণ উপনগরী হয়ে শেষ সংযোজন সেবক রোডের গুদাম।

কিন্তু বারবার কেন বুনোরা লোকালয়ে ঢুকছে। পরিবেশপ্রেমীদের দাবি, জঙ্গলে খাবারের অভাব রয়েছে, তাই সহজে খাবার পেতেই বুনোরা বারবার ঢুকছে লোকালয়ে। হাতির পাল জমির ফসল, মিড-ডে মিলের চাল সাবাড় করছে। আর চিতাবাঘের নজর কুকুর, ছাগল বা হাঁস-মুরগির দিকে। দিনে দিনে জঙ্গল কমে জনবসতি বাড়ছে, সে কারণেও বসতি এলাকায় বন্যপ্রাণীদের আনাগোনা বাড়ছে বলে দাবি পরিবেশপ্রেমীদের। যদিও রাজ্যের বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন বলছেন, ‘‘জঙ্গলে প্রাণীদের খাবারের অভাব নেই।’’ জনবসতি জঙ্গলের কাছে চলে যাওয়াতেই সমস্যা বাড়ছে বলে তাঁর ধারণা।

বন দফতর সূত্রের খবর, সেবক রোডের চিতাবাঘটি বছর সাত-আটেকের। একটি চোখ ও দাঁত খারাপ। ফলে জঙ্গলে ঘুরে ঘুরে শিকার খুঁজতে সমস্যায় পড়েছিল সেটি। তার বদলে জঙ্গলের কাছাকাছি একাধিক পথ কুকুরের সন্ধান পেয়ে গিয়েছিল সেটি। তাই সাতদিনে বারবার রাতে চলে এসেছে লোকালয়ে। হাতিদের ক্ষেত্রে আবার বনবস্তির ফসল লোভের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

পরিবেশপ্রেমী সংগঠন ন্যাফের কো-অর্ডিনেটর অনিমেষ বসু বলেন, ‘‘মানুষ-বন্যপ্রাণ সংঘাত আগের তুলনায় বেড়েছে। ওদের জঙ্গল ধীরে ধীরে মানুষের দখলে যেতেই বাইরে চলে আসছে বন্যপ্রাণীরা। খাবার খুঁজছে, তন্নতন্ন করে খুঁজছে আশ্রয়ও।’’ তিনি জানান, মানুষ জঙ্গলে গেলেও নিরাপদে থাকছে, সেখানে জন্তুরা অনেক সময় প্রাণ হারাচ্ছে। শিলিগুড়ির তিনদিকে একাধিক জঙ্গল রয়েছে, সেই কারণে শিলিগুড়িতে এই সমস্যা তীব্র হচ্ছে বলে তাঁর মত।

বনকর্মীদের একাংশের কথায়, সেবক রোড বা তারও আগে লিম্বুবস্তির ঘটনায় একটি তথ্য সামনে এসেছে। জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় পুরনো গুদাম, বাড়িতে ঝোপঝাড় বেশি থাকায় অনেক সময়ই জঙ্গল ও লোকালয় গুলিয়ে ফেলছে প্রাণীরা। খাবার পেয়ে নিরাপদ জঙ্গল ভেবে সেখানেই আশ্রয় নিয়ে বসছে। ফলে পরিত্যক্ত, কম ব্যবহার হওয়া গুদাম, বাড়ি, কারখানার ঝোপঝাড় যাতে সাফাই করানো হয়, তা নিয়ে পুরসভাকে চিঠি দেওয়ার কথা জানিয়েছেন ডিএফও উমারানি এন।

যা শুনে মেয়র অশোক ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘‘শহরে দূষণ, কংক্রিটের জঙ্গল বাড়ছে বলা হয়। বন দফতরের কথায় তো শহর ‘ইকো ফ্রেন্ডলি’ হয়ে গেল। বন্যপ্রাণীরা নিরাপদ মনে করছে।’’ মেয়র জানান, বন দফতরের প্রস্তাব ভাল। তবে জঙ্গলে বুনোরা যে সুরক্ষিত নয় এটাও দেখা দরকার।

Tige Leopard
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy