রক্ষণাবেক্ষণের খরচ বিপুল, তায় আবার বাসিন্দাদের দাবি মেনে বহু অলাভজনক রুটে বাস চালাতে হয়। আয় বাড়বে কী ভাবে? এ দিকে, আয় না বাড়ায় সরকারি কোষাগার থেকে ভর্তুকি বেড়িয়ে যাচ্ছে প্রতি মাসে প্রায় ৫ কোটি টাকা। উপার্জন বাড়াতে এবার নিগমের ডিপোর একাংশ বাণিজ্যিক হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্যের পরিবহণ দফতর।
নিগমের কতগুলি ডিপোতে অব্যবহৃত জমি রয়েছে তার তালিকা তৈরি শুরু হয়েছে। তালিকা তৈরির পরে, সংস্থার চেয়ারম্যানকে বিস্তারিত পরিকল্পনা রিপোর্ট (ডিপিআর) তৈরি করার নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী।
গত কয়েক বছরে কেন্দ্রীয় নগরায়ণ প্রকল্পে নিগম ১৪০টি ঝাঁ চকচকে বাস পেয়েছে। রাজ্য সরকারও নিগমকে নতুন ৫০টি বাস দিয়েছে। বিভিন্ন রুটে নতুন বাস চালিয়ে আয় বাড়ছে নিগমের। তারমধ্যে শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি, শিলিগুড়ি-ইসলামপুর, পানিট্যাঙ্কি সহ পাহাড়-সমতলের বেশ কিছু রুট রয়েছে। যদিও, এখনও মাসে সংস্থার মাসে যে আয় হয় তার থেকে ব্যায়ের পরিমাণ প্রায় ৫ কোটি টাকা বেশি। এই টাকা মেটাতে হয় সরকারি কোষাগার থেকেই। সূত্রের খবর, পুজোর আগে আরও ৭০টি বাস নিগমের হাতে আসতে চলেছে। সেগুলি চালিয়ে আয় বাড়লেও, তাতে বাড়তি ব্যয়কে ছাপিয়ে যাওয়া যাবে এমন আশা করছেন না নিগমের আধিকারিক অথবা পরিবহণ দফতরের কর্তারা। সে কারণেই নিগমের হাতে থাকা বাড়তি জমিতে বাণিজ্যিক উদ্যোগে উৎসাহী নিগম। তবে নিগমের জমি বিক্রি করা নয়, শুধু মাত্র বেসরকারি সংস্থাকে ব্যবহার করতে দেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
কী ভাবছে নিগম?
নিগমের সিংহভাগ ডিপোতেই উদ্বৃত্ত জায়গা রয়েছে। তার মধ্যে অন্তত তিন থেকে পাঁচ কাঠা জায়গা বের করতে পারলেই বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়া হবে। প্রাথমিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, হোটেল, ফুড কোর্ট, পোশাক-গেরস্থালি সামগ্রীর দোকানের অনুমতি দেওয়া হবে। জাগয়া বেশি হলে শপিং মল তৈরির অনুমতি দেওয়া হবে। সবটাই হবে ‘পিপিপি মডেলে’। জায়গা ব্যবহার করার জন্য বার্ষিক ভাড়া সহ লভ্যাংশও পাবে নিগম। সংস্থার প্রাথমিক হিসেবে ২১টি ডিপোর মধ্যে ১০টিতেই বাণিজ্যিক উদ্যোগের অনুমতি দিলে মাসে অন্তত দেড় কোটি টাকা আয় হতে পারে।
দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, অনেকটা রেলের ধাঁচে পদক্ষেপ করা হবে। তবে রেলে শুধু বিজ্ঞাপন লাগানোর অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। নিগম একধাপ এগিয়ে নিজস্ব জমিতে বেসরকারি সংস্থাকে নির্মাণের অনুমতি দেবে। ইতিমধ্যে কলকাতার উল্টোডাঙা ডিপোতে একটি হোটেল তৈরির উদ্যোগ হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে। শনিবার পিপিপি মডেল নিয়ে নিগম কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দুবাবু। তিনি বলেন, ‘‘আয় বাড়ানোর চেষ্টা করছি। আয় যত বাড়বে বাসিন্দাদের তত বেশি পরিষেবা দেওয়া যাবে। ডিপোতে বাণিজ্যিক উদ্যোগ নিয়ে দ্রুত ডিপিআর দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি।’’
এ দিন শিলিগুড়ির তেনজিং নোরগে বাস টার্মিনাসকে স্থানান্তরিত করে আর্ন্তজাতিক মানের উপযোগী করে গড়ে তোলার প্রক্রিয়া নিয়েও আলোচনা হয়েছে। শিলিগুড়িতে নতুন টার্মিনাসের জন্য একটি জায়গাও চিহ্নিত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। পরিদর্শনের পরে সেই জায়গা চূড়ান্ত করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy