Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

পরিযায়ী পাখি রক্ষায় প্রশাসনের ভরসা স্থানীয়রা

গজলডোবা ব্যারাজ ও ফুলবাড়়িতে ক্যানালে ইতিমধ্যেই পরিযায়ী পাখিদের দেখা মিলছে। কয়েক দশক পরে গত ২০১৬ সালে তিন ধরনের ইউরোপিয়ান পাখির দেখা মিলেছিল গজলডোবায়।

অতিথি: পরিযায়ী পাখির দল। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

অতিথি: পরিযায়ী পাখির দল। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

কৌশিক চৌধুরী
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:৩০
Share: Save:

শীত পড়তেই আসছে পরিযায়ীরা। তাই পাখি দেখতে ভিড়ও বেড়েছে। কিন্তু ভিড়ের জন্য যাতে পাখিদের অসুবিধে না হয় সে জন্য তৎপর প্রশাসন। আর এই কাজে সঙ্গী স্থানীয় বাসিন্দা, মৎস্যজীবীরাই।

গজলডোবা ব্যারাজ ও ফুলবাড়়িতে ক্যানালে ইতিমধ্যেই পরিযায়ী পাখিদের দেখা মিলছে। কয়েক দশক পরে গত ২০১৬ সালে তিন ধরনের ইউরোপিয়ান পাখির দেখা মিলেছিল গজলডোবায়। তাই ঠান্ডা পড়তেই শনি, রবিবারের মত ছুটির দিনগুলিতে বাড়ছে এলাকায় পর্যটক ও বাসিন্দাদের ভিড়। পরিবেশপ্রেমীরা জানিয়েছেন, আগামী ডিসেম্বর থেকে মার্চের শেষ সপ্তাহের মধ্যে অন্তত ৬৫টি প্রজাতির কয়েক হাজার পরিযায়ী আস্তানা গাড়বে দুই জায়গায়। এই ক’মাস হইহল্লা করে পিকনিক, মাছ ধরা, লাউড স্পিকার বাজানোতে নিষেধাজ্ঞা থাকছে। শিকার নিয়েই সবাইকে নজরদারি রাখতে হবে। জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসনের তরফে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

গত কয়েক বছরে একাংশ যুবকের যোগসাজশে পাখি মারার ঘটনাও জানা গিয়েছে। সতর্ক প্রশাসন তাই, নজরদারির কাজে প্রথমেই মৎস্যজীবী এবং নৌকার মাঝিদের বেছেছেন। আগামী সপ্তাহের মধ্যে তাঁদের নিয়ে পাখি চেনানোর প্রশিক্ষণও শিবিরও হবে বলে ঠিক হয়েছে।। পুরো প্রক্রিয়ায় মধ্যে মৎস্যজীবী ও মাঝিদের রাখলে পরিযায়ী পাখিদের নিরাপত্তা অনেকটাই বেড়ে যাবে বলে প্রশাসন ও বন দফতরের অফিসারেরা জানান। জলপাইগুড়ির জেলাশাসক রচনা ভকত বলেন, ‘‘প্রয়োজনে আমরা পুলিশকেও বলব।’’

গজলডোবা-ফুলবাড়িতে মহানন্দা ক্যানাল ও তিস্তা নদীতে ব্যারেজ রয়েছে। ঝোপ, জঙ্গল লাগোয়া ক্যানাল ও ব্যারাজের পিছনের অংশের ডাউন স্ট্রিমে বা ব্যাকওয়াটারেই পাখিরা আসে। সেখানে পাখিদের খাবার হিসাবে ছোট ছোট মাছ ছাড়াও কীটপতঙ্গ, গাছপালা রয়েছে। ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, মানস সরোবর-সহ হিমালয়ের নানা এলাকা থেকে রুডি শিলড ডাক, বার হেডেস গুস, এশিয়ান ওপেন বিলড স্ট্রোক, কমন কুট, ব্রাউন হেডেড গুস, করমোরান্ট, মার্শ হ্যারিয়র-সহ বহু প্রজাতির কয়েক হাজার পাখি আসে বলে পরিবেশপ্রেমীরা জানান।

গত বছর বিন গুস, স্মিউ বা রেড ব্রেস্টেড মনারগেনসারকে কয়েক দশক পর দেখা গিয়েছে। তাই এ বার পাখি দেখতে উৎসাহ বেশি। প্রশাসনও তাই তৎপর। পরিবেপ্রেমী সংগঠন ন্যাফের মুখপাত্র অনিমেষ বসু জানান, ‘‘পর্যটক থেকে এলাকার মানুষ সবাই সচেতন, দায়িত্ববান হলে পাখিরা সুরক্ষিত থাকবে। এতে এলাকার আকর্ষণ আরও বাড়বে।’’ মেখলিগঞ্জের বিডিও, পরিবেশপ্রেমী বীরূপাক্ষ মিত্র বলেন, ‘‘দুটি জায়গা মিলিয়ে কম করে ৭০ হাজার পাখি আসে। ওদের প্রাকৃতিক খাবার, সুরক্ষা নিশ্চিত রাখতে পারলে পাখির সংখ্যা তো বটেই প্রজাতিও বাড়বে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

migratory birds Local People
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE