—প্রতীকী ছবি।
ব্যাঙ্কের ঝাঁপ বন্ধ হলেও সকালের দিকে কয়েকটি এটিএমের দরজা তা-ও খোলা ছিল। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাতেও সাটার নেমে গেল। ব্যাঙ্ক ধর্মঘটের প্রথম দিনেই তাই বিপাকে পড়তে সাধারণ মানুষকে। এই ধর্মঘট চলবে আজ, শনিবারও। অর্থাৎ মাসের পয়লা দিন। এই দিন যাঁরা বেতন পান, তাঁদের অধিকাংশেরই এখন মাথায় হাত, কী করে চলবে আগামী দু’দিন!
সকালে শিলিগুড়ির এক এটিএমের সামনে গিয়ে দেখা গেল, ব্যাঙ্কের সামনে ধর্মঘটের পোস্টার টাঙানো থাকলেও এটিএম খোলা। তার চৌকিদারও বহাল তবিয়তে মজুত। কী ব্যাপার? নাম করতে বারণ করলেন তিনি। বললেন, ‘‘এখনও টাকা আছে এটিএমে। তাই খুলে রেখেছি। তলব এলেই বন্ধ করব।’’ সত্যি তাই। বিকেলে গিয়ে দেখা গেল, এটিএমের ঝাঁপ পড়ে গিয়েছে।
ভরদুপুরে সুনসান ব্যাঙ্কের সামনের রাস্তা। দুপুর থাকতেই স্টোভ বন্ধ করে, কেটলি ধুয়ে ফেলেছেন রতন ঘোষ। জলপাইগুড়ির ডিবিসি রোডের একটি ব্যাঙ্কের শাখার সামনে চা এবং ঘুঘনি বিক্রি করেন তিনি। বললেন, “এই দোকান করেই সংসার চলে। আমরা দিন আনি দিন খাই পরিবার। দু’দিন ধরে ব্যাঙ্ক বন্ধ, তাই বিক্রিবাটাও বন্ধ। কী ভাবে যে চলবে!”
টানা ব্যাঙ্ক বন্ধ থাকায় সমস্যায় পড়তে হয়েছে ছোট ব্যবসায়ী রতন ঘোষকেও। বিপাকে পড়েছেন শহরের একটি পেট্রল পাম্পের মালিক পার্থ সরকার। তাঁর কথায়, “বিক্রির টাকা নিয়মিত ব্যাঙ্কে জমা দিতে হয়। সেটা জমে যাচ্ছে। তাই নিরাপত্তার প্রশ্ন রয়েছে।” জলপাইগুড়ির ক্লাব রোডের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সামনে দুপুর বেলায় ঘণ্টাখানেকেরও বেশি দাঁড়িয়ে ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক প্রবীর বসু। যদি এটিএম খোলে, এই অপেক্ষায়। ব্যাঙ্কের নিরাপত্তা কর্মীকে বারকয়েক অনুরোধও করলেন। তিনি বললেন, “পেনশনের টাকা তো ব্যাঙ্কেই থাকে। গত বুধবার এটিএমের সামনে লম্বা লাইন ছিল, টাকা তুলতে পারিনি। এখন ক’দিন খুব সমস্যায় পড়তে হবে।” তাঁর মতো বিপাকে পড়েছেন আরও অনেকেই।
এ দিন কাজের জন্য টাকা দরকার ছিল শিলিগুড়ির বাসিন্দা দেবু চক্রবর্তীর। তবে এটিএম-এ গিয়ে তিনি দেখেন বন্ধ।
ইউনাইটেড ফোরাম অব ব্যাঙ্ক ইউনিয়নের জেলা কমিটির কর্মকর্তা লক্ষ্ণী মাহাতো বলেন, ‘‘কর্মীদের দাবি আদায় না হলে এর পরে ১১-১৩ মার্চ একই ভাবে ধর্মঘট ডেকে আন্দোলন হবে, তাতেও কাজ না হলে লাগাতার ধর্মঘট হবে ১ এপ্রিল থেকে। বাসিন্দাদের সমস্যায় পড়তে হয়েছে বলে আমরা দুঃখিত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy