Advertisement
E-Paper

ভিড় উপচে পড়ল মমতার সভায়

সভায় পাহাড় সমস্যার স্থায়ী সমাধানের আশ্বাস দিয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার কথা বললেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সঙ্গে পাহাড় সমতলের সেতুবন্ধন, বন্ধুত্ব অটুট রাখার দাবি করে দলের ‘ভূমিপুত্র’ প্রার্থীর জন্য মাঠ ভর্তি জনতার কাছে ভোট প্রার্থনা করলেন।

কৌশিক চৌধুরী

শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০১৯ ০৭:৫৩
নেত্রীর সঙ্গে: প্রচারসভার এক ফাঁকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিনয় তামাং। শুক্রবার নকশালবাড়িতে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

নেত্রীর সঙ্গে: প্রচারসভার এক ফাঁকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিনয় তামাং। শুক্রবার নকশালবাড়িতে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রের সমতলের ভোটারদের লক্ষ করেই শুক্রবার বিকেলে নকশালবাড়িতে সভার আয়োজন করেছিল তৃণমূল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেই সভায় ভিড় দেখে স্বস্তির হাসি তৃণমূল নেতাদের মুখে।

সভায় পাহাড় সমস্যার স্থায়ী সমাধানের আশ্বাস দিয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার কথা বললেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সঙ্গে পাহাড় সমতলের সেতুবন্ধন, বন্ধুত্ব অটুট রাখার দাবি করে দলের ‘ভূমিপুত্র’ প্রার্থীর জন্য মাঠ ভর্তি জনতার কাছে ভোট প্রার্থনা করলেন। শুক্রবার দুপুরে নকশালবাড়ির বীরসা মুন্ডা মাঠে এই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী অমর সিংহ রাইয়ের সমর্থন প্রথম জনসভা করলেন তৃণমূল নেত্রী। সেখানে পাহাড় থেকে তরাই, ডুয়ার্সে গোলমাল, বিভেদের রাজনীতি করার অভিযোগ শুধু প্রবল প্রতিপক্ষ বিজেপির বিরুদ্ধে নয়, নাম জড়ালেন কংগ্রেস, সিপিএমেরও।

মমতা বলেছেন, ‘‘আমরা পাহাড়ে দাঙ্গা, বিবাদ, খুন, ঝগড়া চাই না। আমরা গোলমাল নয়, পাহাড় সমতলে শান্তি ও উন্নয়ন চাই। স্কুল-কলেজ হাসপাতাল, বিশ্ববিদ্যালয়, চা বাগানের উন্নয়ন চাই। মানুষের উন্নয়ন চাই। তাই আপনাদের কাছে তৃণমূলকে ভোট ভিক্ষা নয়, ঋণ চাইছি। পাহাড়ে শান্তি এনেছি। সমস্যার স্থায়ী সমাধানও করতে চাই।’’ তার পরেই তিনি বলেন, ‘‘এই আসনটি আমাদের গর্বের আসন। এটা আসনের নাম দার্জিলিং। গোর্খা থেকে আদিবাসী সকলের জাতিসত্তারও অধিকারের প্রশ্নেও আমরা একমত। অনেক কাজ করছি। আরও করব। আপনারা দার্জিলিং জিতিয়ে দিন।’’

সুবাস ঘিসিং-এর নেতৃত্বে ৮০ দশকের পরে গত কয়েক বছরে পাহাড়ে বিমল গুরুং-এর নেতৃত্বে আলাদা রাজ্যে দাবি, ভাষার অবমাননা করার কথা বলে আন্দোলন হয়। ২০১৭ সালে তা রক্তক্ষয়ী আন্দোলনে এক পুলিশ অফিসার খুন-সহ ১৩ জন মারা যান। ১০৫ দিন পাহাড়ে বন্‌ধ চলে। রাজ্য সরকার বন্‌ধ তুলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টায় নামে।

দিল্লি থেকে বিজেপি, রাজ্যে সিপিএম এবং কংগ্রেস তাতে অক্সিজেন জুগিয়ে পাহাড়ে বিরোধ তৈরি চেষ্টা করেছে বলেও মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘বিজেপি বড় বড় কথা বলেছে। ওরা শিলিগুড়ির জন্যও কিছু করেনি। পাহাড শান্ত থাকলে সমতল-পাহাড় দুই জায়গাতেই ব্যবসা বাণিজ্য ঠিক থাকবে।’’

এ দিনের সভায় বক্তব্য রাখতে উঠেই তিনি প্রার্থীকে পরিচয় করান। তিনি বলেন, ‘‘অমর সিংহ রাই ভূমিপুত্র। দার্জিলিঙের নিবাসীকে আমরা টিকিট দিয়েছি। দার্জিলিঙের সার্বিক উন্নয়নের জন্য একটা খসড়া তৈরির জন্য তাঁকে বলেছিলাম। ৬/৭ বছরের কাজ তিনি তিন মাসে করে আমাকে দিয়েছেন। এমনই কাজের লোককেই তো সাংসদ চাই।’’

প্রার্থী থেকে গৌতম দেব, বিনয় তামাং, ছোটন কিসকু, একজ সংখ্যালঘু এবং দুই চা শ্রমিককে মঞ্চে ডেকে হাত ধরে তুলে মুখ্যমন্ত্রী জানান, এটাই তৃণমূলের ঐক্য। তিনি বলেন, ‘‘নেপালি, বাঙালি, আদিবাসী, সংখ্যালঘু সবাই আমরা একসঙ্গে থাকব। আর যারা গোর্খাল্যান্ডের কথা, দার্জিলিংকে ভাগ করার কথা বলে ভোটে জেতে তাঁদের লোক ভোটের পর দিল্লি পালায়। তাই দিল্লিকা লাড্ডু আমরা চাই না।’’

যদিও বিজেপির জেলা সভাপতি অভিজিৎ রায় চৌধুরী বা কংগ্রেসের প্রদেশের কার্যকরী সভাপতি তথা প্রার্থী শঙ্কর মালাকার মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ করেছেন।

তাঁরা আলাদা ভাবে জানান, কেন্দ্রীয় সরকার এগিয়ে না আসলে পাহাড় সমস্যা কোনওদিনই মিটবে না, মেটেওনি। উনি তা ভুলে গিয়েছেন। আর সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য অশোক ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর পাহাড়ের ইতিহাসটা মনে হয়ে ভুলে যাচ্ছেন।’’

Lok Sabha Election 2019 TMC Mamata Banerjee Binay Tamang Naxalbari
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy