Advertisement
০৫ মে ২০২৪

একটি বুথে পুনর্নির্বাচনে যুদ্ধের আবহ

মকপোল না মুছেই ভোট হয়েছিল বলে এই বুথটিতে পুনর্নির্বাচনের নির্দেশ দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন।  তার পরেই দু’দিন ধরে বুথ নিজেদের দখলে রাখতে তৃণমূল আর বিজেপির তৎপরতা তুঙ্গে উঠেছিল।

ফের-ভোট: শীতলখুচিতে পুনর্নির্বাচনে ভোট দিতে মহিলাদের লাইন। নিজস্ব চিত্র

ফের-ভোট: শীতলখুচিতে পুনর্নির্বাচনে ভোট দিতে মহিলাদের লাইন। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার, শীতলখুচি শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০১৯ ০৩:২৪
Share: Save:

কেউ যে এক ইঞ্চি জমি ছাড়তে রাজি নন, তার ইঙ্গিত মিলেছিল আগেই। সোমবার কোচবিহারের শীতলখুচির ১৮১ নম্বর বুথের পুনর্নির্বাচনে সেই ছবিই দেখলেন বাসিন্দারা।

এই বু‌থের মাত্র ১ হাজার ৩২৫টি ভোটের জন্য তৃণমূল এবং বিজেপির এমন যুদ্ধের মেজাজ দেখে অনেকেই বলছেন, কোচবিহার আসনে ফল যাঁর পক্ষেই যাক, হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পরেই যাবে। এই বুথে প্রচারেরর তীব্রতাও এতটাই ছিল যে, সম্প্রতি সাধুর হাটে তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে সংঘর্ষ লেগে যায়। তাতে বিজেপির চার জন আহত হয়েছেন বলে দাবি। তবে তৃণমূল সেই ঘটনায় অভিযোগের আঙুল তুলেছে বিজেপির দিকেই।

মকপোল না মুছেই ভোট হয়েছিল বলে এই বুথটিতে পুনর্নির্বাচনের নির্দেশ দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। তার পরেই দু’দিন ধরে বুথ নিজেদের দখলে রাখতে তৃণমূল আর বিজেপির তৎপরতা তুঙ্গে উঠেছিল।

এ দিন দলের জেলা নেতারা তো বটেই, দুই দলের প্রার্থীও হাজির হন সেখানে। কোনও ঝুঁকি নেয়নি কমিশনও। কেন্দ্রীয় বাহিনীর সঙ্গেই জেলার আধিকারিকদের একটি দল এবং পর্যবেক্ষক ওই বুথে হাজির ছিলেন।

কোচবিহার জেলা নির্বাচন আধিকারিক কৌশিক সাহা বলেন, “শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট সম্পন্ন হয়েছে।”

কমিশন সূত্রের খবর, আশি শতাংশের উপরে ভোট পড়েছে ওই বুথে। ১ হাজার ৭৬ জন ভোট দিয়েছেন।

এ দিন দুপুরে ওই বুথে যান বিজেপির কোচবিহার লোকসভা আসনের প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিক। তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘তৃণমূল ওই এলাকায় সন্ত্রাস তৈরির চেষ্টা করেছিল।’’ ভোটারদের ভয় দেখানো হয় বলেও তাঁর দাবি।

তার পরেও তিনি অবশ্য বলেন, “তৃণমূল এই বুথে ১০০ টির বেশি ভোট পাবে না। কারণ, মানুষ তৃণমূলের ভয় উপেক্ষা করে ভোট দিয়েছে।” তৃণমূল প্রার্থী পরেশ অধিকারীও দুপুরের দিকে ওই বুথে যান।

তিনি বলেন, “বিজেপি মিথ্যে অভিযোগ করে সব সময় চমক দেওয়ার চেষ্টা করে। শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট হয়েছে। এই ভোটে আমরা খুশি। মানুষ আমাদের পক্ষেই ভোট দিয়েছেন।” এ দিন সকালেই ওই বুথে যান কংগ্রেস প্রার্থী পিয়া রায়চৌধুরী। তিনিও ভাল ফলের ব্যাপারে আশাবাদী।

গত ১১ এপ্রিল কোচবিহারে ভোট হয়। সারা ভারতেই সেটা ছিল প্রথম দফার ভোট। তখন ভোটে ছোটখাটো অভিযোগ উঠলেও বড় কোনও গণ্ডগোল ঘটেনি। ভোটের পরে ছাপ্পার অভিযোগ তুলে বিজেপি ৩২৫টি বুথে পুনর্নির্বাচন দাবি করে। সেই দাবিতে অবস্থানেও বসেছিলেন বিজেপি প্রার্থী নিশীথ। বামেরাও ২৫টি বুথে পুনর্নির্বাচনের দাবি করেছিল। কংগ্রেস অবশ্য ভোট স্বচ্ছ ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে বলেই জানায়।

নির্বাচন কমিশন সব খতিয়ে দেখে একটি বুথেই পুনর্নিবাচনের নির্দেশ দেয়। তবে তার জন্য কোনও অশান্তি দায়ী নয়। তার পরে হিসেব-নিকেশ করে বিজেপি দাবি করে, কোচবিহার কেন্দ্র থেকে তারা জয়ী হবে। তৃণমূলও দাবি করে, জয় তাঁদের অনেক আগেই নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় একটি বুথের নির্বাচনেই জোর দিয়েছিলেন সবাই। সকাল থেকেই তৃণমূল বিধায়ক হিতেন বর্মণ ওই এলাকায় যান।

বিজেপির কোচবিহার জেলার সভানেত্রী মালতী রাভাও শীতলখুচি যান। তাঁরা দু’জনেই জয়ের ব্যাপারে একশো শতাংশ নিশ্চিত বলে জানান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE