E-Paper

অধিকাংশ প্রাথমিকেই ঘর জরাজীর্ণ, সংস্কারের দাবি

তৃণমূল প্রভাবিত প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির তরফে লিখিত ভাবে বিদ্যালয় পরিদর্শকের কাছে পড়ুয়াদের নিরাপত্তার স্বার্থে দ্রুত বেহাল স্কুলগুলি মেরামতির দাবি জানানো হয়েছে।

গৌর আচার্য 

শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০২৩ ০৭:৩১
ইসলামপুরের গোয়াবাড়ি প্রাথমিক স্কুলের বেহাল ভবন।

ইসলামপুরের গোয়াবাড়ি প্রাথমিক স্কুলের বেহাল ভবন। ছবি: গৌর আচার্য।

স্কুলে চারটি শ্রেণিকক্ষ রয়েছে। তার মধ্যে দু'টি ঘরের দেওয়াল জুড়ে ফাটল ধরেছে। মাঝেমধ্যেই দেওয়ালের পলেস্তরা খসে পড়ে। অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে এই অবস্থায় চলছে উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ শহরের শক্তিনগর এলাকার স্নেহলতাদেবী প্রাথমিক স্কুল। ঘটনাচক্রে, শুধু ওই স্কুলই নয়, উত্তর দিনাজপুরের ন'টি ব্লক মিলিয়ে সাতশোরও বেশি সরকারি প্রাথমিক স্কুলে একাধিক শ্রেণিকক্ষ দীর্ঘদিন ধরে বেহাল হয়ে রয়েছে অভিযোগে সম্প্রতি জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শকের দ্বারস্থ হয়েছে তৃণমূল প্রভাবিত প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি। ঘটনায় পড়েছে শোরগোল। কটাক্ষ করেছে বিরোধীরা। জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক দুলাল সরকার বলেন, ‘‘অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’

স্নেহলতাদেবী প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক বিজয় রায়চৌধুরীর দাবি, প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদের স্কুলের দু’টি শ্রেণিকক্ষে গাদাগাদি করে বসিয়ে ক্লাস করাতে বাধ্য হচ্ছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। ওই প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘‘পড়ুয়াদের নিরাপত্তার স্বার্থে দীর্ঘদিন ধরে ওই দু'টি ঘরে পঠনপাঠন বন্ধ রাখা হয়েছে। শিক্ষা দফতরে একাধিক বার সমস্যার কথা জানানো হলেও, বেহাল ঘরগুলি মেরামতির কাজের ব্যাপারে কেউ উদ্যোগী হননি।’’

তৃণমূল প্রভাবিত প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির তরফে লিখিত ভাবে বিদ্যালয় পরিদর্শকের কাছে পড়ুয়াদের নিরাপত্তার স্বার্থে দ্রুত বেহাল স্কুলগুলি মেরামতির দাবি জানানো হয়েছে। রাজ্যের শাসক দলের শিক্ষক সংগঠন জেলা জুড়ে প্রায় ৫০ শতাংশ প্রাথমিক স্কুলের শ্রেণিকক্ষ বেহালের অভিযোগ তোলায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে জেলা শিক্ষা দফতরের কর্তাদের একাংশের মধ্যে।

১৮ অগস্ট করণদিঘির একটি প্রাথমিক স্কুলের শ্রেণিকক্ষের ছাদের চাঙড় খসে পাঁচ পড়ুয়া জখম হয়। তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সভাপতি গৌরাঙ্গ চ্বহানের দাবি, করণদিঘির ওই স্কুলের ক্লাসরুমে ছাদের চাঙড় খসে পড়ার ঘটনার পরে সমিতির তরফে জেলার ন'টি ব্লকের সমস্ত প্রাথমিক স্কুলের পরিকাঠামোর খোঁজ নেওয়া হয়। গৌরাঙ্গ বলেন, ‘‘খোঁজখবরে জানা গিয়েছে, জেলার ১,৪৬৮টি প্রাথমিক স্কুলের মধ্যে ৭০৯টি স্কুলে কোথাও ক্লাসরুমের ছাদ, কোথাও আবার স্কুলের ভবনের বিভিন্ন অংশ বেহাল কিংবা জরাজীর্ণ হয়ে রয়েছে। দ্রুত সেই সব পরিকাঠামো মেরামতির কাজ না হলে, স্কুল ভবনের দেওয়াল ও ছাদের চাঙড় খসে পড়ে পড়ুয়ারা জখম হতে পারে। জেলা শিক্ষা দফতরকে সমিতির তরফে সেই কথাই বলা হয়েছে। কারণ, স্কুলে পড়ুয়াদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করাই সমিতির প্রধান লক্ষ্য।"

যদিও বামপন্থী শিক্ষক সংগঠন এবিপিটিএর কেন্দ্রীয় কমিটির কোষাধ্যক্ষ কৃষ্ণেন্দু রায়চৌধুরী বলেন, "আমরা দীর্ঘদিন ধরেই বলছি, জেলার বেশিরভাগ প্রাথমিক স্কুলের পরিকাঠামো বেহাল। দেরিতে হলেও শাসক দলের শিক্ষক সংগঠনের হুঁশ ফেরায় ভাল লাগছে।" বিজেপির জেলা সভাপতি বাসুদেব সরকারের দাবি, "তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠন ভবিষ্যতে জেলার প্রাথমিক স্কুলগুলিতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা করে রাজ্য সরকারের মান বাঁচাতে স্কুল মেরামতির দাবি তুলতে বাধ্য হয়েছে।" গৌরাঙ্গর পাল্টা দাবি, "বাম আমলে জেলায় তৈরি স্কুল ভবনগুলির কাজ নিম্ন মানের হয়েছে। তাই সেগুলি বেহাল হতে শুরু করেছে। বিজেপি ঘোলা জলে রাজনীতি করে।"

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

raiganj Primary School

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy