Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

সংঘর্ষ চলছেই, গ্রেফতার শুরু

মঙ্গলবারের প্রশাসনিক বৈঠকে কোচবিহার পুলিশের হাতে ২৪৭টি অভিযোগপত্র তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী। এত অভিযোগ কেন পড়ছে, তা নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি।

তৃণমূল ও বিজেপির কর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়।ছবি: পিটিআই

তৃণমূল ও বিজেপির কর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়।ছবি: পিটিআই

নমিতেশ ঘোষ
কোচবিহার শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৯ ০৩:৫২
Share: Save:

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশ্ন তুলেছিলেন, ‘পুলিশ কী করে?’ তার পরেও তাঁর উত্তরবঙ্গ সফরের সময়েই একের পর এক সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে কোচবিহার। কোথাও দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। কোথাও বোমাবাজির অভিযোগ রয়েছে। গত তিন দিনে অন্তত ১৫ জন জখম হয়েছেন। আহত হয়েছেন পুলিশকর্মীরাও।

মঙ্গলবারের প্রশাসনিক বৈঠকে কোচবিহার পুলিশের হাতে ২৪৭টি অভিযোগপত্র তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী। এত অভিযোগ কেন পড়ছে, তা নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি। এই অবস্থায় পুলিশও আর কোনও ঝুঁকি না নিয়ে দল না দেখেই গ্রেফতার করা শুরু করে দিয়েছে। তুফানগঞ্জের চিলাখানায় গন্ডগোলের ঘটনাতে এখন পর্যন্ত ১১ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কোচবিহার জেলা পুলিশ সুপার সন্তোষ নিম্বালকর নিজে তদারকি করা শুরু করেছেন। কোচবিহার জেলার এক পুলিশ কর্তা বলেন, “পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সব রকম চেষ্টা করা হচ্ছে।”

দিন তিনেক আগে দেওচড়াওইয়ে ইটভাটার শ্রমিক নিয়োগকে কেন্দ্র করে তৃণমূল ও বিজেপির কর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। বুধবার সংলগ্ন চিলাখানায় ফের তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে সংঘর্ষে গোটা এলাকা উত্তপ্ত হয়। সেখানে বোমাবাজি হয়েছে বলেও অভিযোগ ওঠে। দু’পক্ষেরই লোকজনকে ঘটনাস্থল থেকেই গ্রেফতার করে পুলিশ। ওই দিনই মাথাভাঙার কুর্শামারিতে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে গন্ডগোলের ঘটনায় জখম হন এক তৃণমূল নেতা। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। আবার বৃহস্পতিবার সকালে শীতলখুচির রথেরডাঙায় তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে সংঘর্ষে ৬ জন জখম হন। একাধিক বাড়িঘর ভাঙচুর হয় বলেও অভিযোগ।

তুফানগঞ্জের ঘটনায় উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী তথা তৃণমূলের কোচবিহার জেলার প্রাক্তন সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ পুলিশের একটি অংশের বিরুদ্ধে বিজেপির হয়ে কাজ করার অভিযোগ তোলেন। তিনি বলেন, “বিজেপি নানা এলাকায় সন্ত্রাস করছে। তুফানগঞ্জে পুলিশের একটি অংশ পক্ষপাতিত্ব করছে। আমরা নিরপেক্ষতার আশা করছি।” পুলিশ অবশ্য তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ মানতে নারাজ। পুলিশের এক আধিকারিক দাবি করেন, দুটি পক্ষের হয়ে একাধিক মানুষ গন্ডগোলে জড়িয়ে পড়ছেন। সবার বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

কিন্তু কোচবিহারে কেন এই অবস্থা?

গত লোকসভা নির্বাচনে কোচবিহার আসন তৃণমূলের হাত থেকে ছিনিয়ে নেয় বিজেপি। তার পর থেকে কার্যত গোটা জেলার দখল চলে যায় বিজেপির হাতে। গত কয়েক মাসে নিজেদের সংগঠিত করে ফের ময়দানে নামতে শুরু করেছে তৃণমূল। তাতেই বেড়ে গিয়েছে সংঘর্ষের ঘটনা। অভিযোগও বাড়তে শুরু করেছে।

বোমা ও আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগও উঠছে। এমনকি মুখ্যমন্ত্রীর উত্তরবঙ্গ সফরের সময়েও কেউ থেমে থাকতে চাইছে না।

পুলিশ কেন আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার এবং সংঘর্ষ ঠেকাতে কড়া ব্যবস্থা নিচ্ছে না? পুলিশের এক কর্তা অবশ্য বলেন, “প্রত্যেক অভিযোগেরই ব্যবস্থা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Violenc TMC BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE