দু’দিন আগে উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ায় রাত্রিবাস করেছিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। তার পরে তাঁর ‘ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা’ চলে গিয়েছিল বিহারের কিসানগঞ্জে। মঙ্গলবার রাহুল যখন বিহারের পুর্ণিয়ায়, তখন সেই চোপড়াতেই জনসংযোগ যাত্রা করলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপি-বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র দুই শরিক কংগ্রেস এবং তৃণমূলের মধ্যে বেশ কিছুদিন ধরে আসন রফা নিয়ে ঠান্ডা লড়াই চলছে, তখন রাহুলের যাত্রাপথ ধরে মমতার জনসংযোগকে রাজনৈতিক ভাবে ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলেই মনে করা হচ্ছে। চোপড়ার পাশাপাশি ইসলামপুরেও পদযাত্রা করেন মমতা। কোথাও দেড় কিলোমিটার, কোথাও আবার এক কিলোমিটার। পদযাত্রার পর তাঁর সরকারি কর্মসূচিতে রায়গঞ্জে যোগ দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মঙ্গলবার মমতার পদযাত্রাকে রাহুলের ‘পাল্টা কর্মসূচি’ হিসাবেই দেখতে চাইছে জেলা কংগ্রেস নেতৃত্ব। জেলা সভাপতি মোহিত সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘রাহুলের ন্যায় যাত্রা বেরোনোর পরে মমতার পদযাত্রা পাল্টা কর্মসূচি হিসেবে দেখছি আমরা।’’ তবে এদিন ইসলামপুরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের রাহুল গান্ধীর ‘ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা’ বা ইন্ডিয়া জোট নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি মমতা। মমতা বলেন, ‘‘কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার এবং চোপড়া হয়ে ইসলামপুর হয়ে রায়গঞ্জ যাচ্ছি। পদযাত্রা সফল।’’ যাত্রাপথে রবীন্দ্রনাথ, মহাত্মা গান্ধী, বিবেকানন্দের মূর্তিতে ফুল দেন মমতা।
এদিন বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ চোপড়ায় পৌঁছান মমতা। পদযাত্রা সময়ের সঙ্গে ছিলেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, হামিদুল রহমান প্রমুখ। চোপড়ায় ছোট্ট শিশুকে কোলে তুলে নেন তিনি। রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা কারও সঙ্গে হাত মেলান। প্রায় মিনিট দশেক পদযাত্রার পর গাড়ি নিয়ে সোজা ইসলামপুর। পুরাতন বাস স্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় পৌঁছতেই ভিড় দেখে গাড়ি থেকে নেমে পড়েন মমতা। পায়ে হেঁটেই সেখান থেকে চৌরঙ্গি মোড়। হাই স্কুল মোড়ে স্কুল পড়ুয়াদের সঙ্গে হাত মেলান।
দুপুর দেড়টা নাগাদ রায়গঞ্জের কর্ণজোড়ায় অস্থায়ী হেলিপ্যাডে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হেলিকপ্টার নামে। এর পর মুখ্যমন্ত্রী গাড়িতে করে পাঁচ কিলোমিটার দূরে রায়গঞ্জের বকুলতলা মোড়ে পৌঁছন। সেখান থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার পদযাত্রা করে রায়গঞ্জ স্টেডিয়াম মাঠে গিয়ে সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দেন। পদযাত্রা চলাকালীন এ দিন মমতা কখনও হাত নাড়িয়ে, আবার কখনও নমস্কার জানিয়ে রাস্তার দু’ধারে বহু মানুষকে শুভেচ্ছা জানান। যাত্রাপথে শহরের বিদ্রোহীমোড়ে এক ঢাকির কাছ থেকে কাঠি নিয়ে ঢাকও বাজান। পদযাত্রায় রাজ্যের মন্ত্রী গোলাম রব্বানি, বিধায়ক সৌমেন রায়, কৃষ্ণ কল্যাণী, গৌতম দেব, বাবুল সুপ্রিয়র মতো তৃণমূলের নেতা ও জনপ্রতিনিধিরা শামিল হয়েছিলেন।
তথ্য: মেহেদি হেদায়েতুল্লা, অভিজিৎ পাল, গৌর আচার্য
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)