Advertisement
E-Paper

কলেজে দুর্নীতি নিয়ে বার্তা নেত্রীর

মুখ্যমন্ত্রী এরপর আচমকা প্রশ্ন করেন, “কী ভাবে ভর্তি করাচ্ছ? টাকা নিয়ে?” সঙ্গে সঙ্গে মাথা নেড়ে স্বপন জানান, টাকা কোনও ভাবেই নেওয়া হচ্ছে না। তখন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এ রকম কোনও অভিযোগ যেন না আসে!”

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৮ ০৮:৪০
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র

ভর্তি প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি নিয়ে মালবাজার পরিমল মিত্র স্মৃতি কলেজের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে অভিযোগ ওঠেনি এখনও। তবু এ নিয়ে কিছুটা ছদ্ম কটাক্ষ করেই ওই কলেজ কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

গত সোমবার বিকেলে উত্তরকন্যায় জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসনিক বৈঠকে কলেজে কলেজে ভর্তি প্রক্রিয়ার কেমন চলছে তা অনেকের কাছেই জানতে চান। তখনই মালবাজারের পুরপ্রধান স্বপন সাহা বলেন, “কোনও সমস্যা নেই। সকলেই ভর্তি হতে পারছেন। আমরা ভর্তি করাতে সাহায্যও করছি।” মুখ্যমন্ত্রী এরপর আচমকা প্রশ্ন করেন, “কী ভাবে ভর্তি করাচ্ছ? টাকা নিয়ে?” সঙ্গে সঙ্গে মাথা নেড়ে স্বপন জানান, টাকা কোনও ভাবেই নেওয়া হচ্ছে না। তখন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এ রকম কোনও অভিযোগ যেন না আসে!”

পুরপ্রধান স্বপন মালবাজার কলেজের পরিচালন সমিতিরও সভাপতি। বুধবার সকালে এই বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কলেজ নিয়ে তাঁর কথাবার্তা স্বীকার করে নেন স্বপন। এরপর তিনি বলেন, “আমি নিজে ভর্তির ক্ষেত্রে ছাত্রছাত্রীদের যাতে কোনও সমস্যা না হয় সেটা দেখেছি। অনলাইনে যে নির্দিষ্ট টাকা জমা দিয়ে ভর্তি হতে হয় তা-ও যারা জোগাড় করে উঠতে পারেননি তাঁদের সাহায্য করেছি। ভর্তিতে সাহায্য বলতে এই কথাই বোঝাতে চেয়েছিলাম।” ওই কলেজে ভর্তির জন্য টাকা নেওয়ার অভিযোগ যে নেই তা তিনি নিজে নিশ্চিত করেছেন বলেও দাবি করেন।

কলেজের অধ্যক্ষ নন্দিতা সরকার বলেন, “আমি নিজেই এ বছর ন’জন পড়ুয়ার ভর্তির টাকা ব্যক্তিগত ভাবে দিয়েছি। টাকা নিয়ে ভর্তির কোনও ঘটনা অন্তত আমাদের কলেজে যে নেই তা দায়িত্ব নিয়ে বলতে পারি।” কলেজের এক বর্ষীয়ান অধ্যাপক বলেন, ‘‘মালবাজার কলেজ রাজ্যের মধ্যে পড়ুয়ার সংখ্যার বিচারে অন্যতম শীর্ষে রয়েছে। চা বলয়ের অন্যতম কলেজ হিসেবে ৭০ শতাংশেরও বেশি তফসিলি উপজাতিভুক্ত চা শ্রমিক পড়ুয়া এখানে পড়াশোনা করেন। উপজাতি ছাত্রছাত্রীদের জন্য যেহেতু বড় সংখ্যায় আসন সংরক্ষিতই থাকে, সেই হেতু টাকা দিয়ে ভর্তির কোনও প্রশ্নই নেই। একই দাবি কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক তথা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা সুরজিত দেবনাথেরও। লাটাগুড়ির বাসিন্দা সেঁজুতি নন্দী যেমন বলেন, “তিনি চালসা এলাকার একটি ক্যাফে থেকে মালবাজার কলেজে টাকা দিয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সাম্মানিক স্তরের জন্যে আবেদন করেছেন, কোনও সমস্যা হয়নি।” গজলডোবার ক্যাফের মালিক প্রবীর সরকার বলেন, ‘‘অন্তত ১৫ জন পড়ুয়ার মালবাজার কলেজে সমস্যাহীন ভাবে আবেদন জমা ও গৃহীত হয়েছে।”

এই কলেজে বিজ্ঞানে পাস কোর্স ছাড়াও কলা বিভাগের সাতটি বিষয় ও বাণিজ্যে একটি বিষয়ে সাম্মানিক স্নাতক পড়াবার ব্যবস্থা রয়েছে। মোট ৫৬১টি সাম্মানিক স্তরের আসন রয়েছে । এ বছর ৩৮০০-রও বেশি অনলাইনে ভর্তির আবেদন এসেছে। মেধা তালিকার কাজ চলছে । চা বলয়ের ভেতরে থাকা প্রত্যন্ত এলাকার ক্যাফেগুলো থেকেও মালবাজার কলেজে অনলাইন আবেদনে ভাল সাড়া মিলেছে বলে জানান আদিবাসী বিকাশ পরিষদের নেতৃত্বরা। জনজাতি চা শ্রমিক নেতা অমরদান বাক্সলা বলেন, ‘‘মালবাজারে ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ে আমাদের কোনও অভিযোগ নেই। কিন্তু ভর্তির প্রক্রিয়া শেষে দুঃস্থ ছাত্রছাত্রীদের অর্ধেক ফি দেবার আবেদন করব।’

Mamata Banerjee College Admission Jalpaiguri
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy