মিহির গোস্বামী
কলকাতার ট্রেন ধরতে স্টেশনে পৌঁছে গিয়েছিলেন উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের চেয়ারম্যান, বিধায়ক মিহির গোস্বামী। কিন্তু ট্রেন আসার মিনিট দশেক আগে তাঁর মোবাইলে ফোন আসে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। সেই ফোনেই জানতে পারেন ডানপায়ের তিন টুকরো হয়ে যাওয়া হাড় জোড়া দেওয়ার জন্য অস্ত্রোপচার করতে কলকাতায় যাওয়ার দরকার নেই।
কারণ ভাঙা পা নিয়ে এতটা পথ পাড়ি দিতে সমস্যা হবে। তাই ‘দিদি’ চান না মিহিরবাবু কলকাতায় যান। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে কলকাতা থেকেই চিকিৎসকদের দলকে কোচবিহারে পাঠানো হচ্ছে। ফের অ্যাম্বুল্যান্সে নার্সিংহোমে ফিরে যান মিহিরবাবু। কোচবিহার দক্ষিণের বিধায়ক মিহিরবাবুকে দেখতে এক-দু’দিনের মধ্যেই কলকাতা থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দল পৌঁছবে।
মিহিরবাবু বলেন, ‘‘পার্থ-দা (ফোন করে জানালেন, মুখ্যমন্ত্রীর কিছুতেই চাইছেন না ভাঙা পা নিয়ে কলকাতায় যাই। এটা শুনে প্রথমে কিছুটা উদ্বিগ্ন হয়েছিলাম। তারপরেই পার্থবাবু বললেন, মুখ্যমন্ত্রী কলকাতা থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের কোচবিহারে রওনা হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। শুনে কিছুক্ষণ মুখ থেকে কোনও শব্দ বের হয়নি।’’
গত বৃহস্পতিবার পা ভেঙেছে মিহিরবাবুর। কোচবিহারের লোকসভা উপনির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে দলের কর্মীদের নিয়ে সে দিন বৈঠক করেছেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি। একটি হোটেলে সভা সেরে বের হওয়ার পথে রাস্তায় গড়িয়ে পড়ে যান মিহিরবাবু। চিকিৎসকরা জানান, ডান পায়ের মালাইচাকি তিন টুকরো হয়ে গিয়েছে। অস্ত্রোপচার ছাড়া ওই হাড় জোড়া দেওয়া সম্ভব নয়। তিনি নার্সিংহোমে ভর্তি হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই খবর পৌঁছে যায় মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। রাজ্য নেতারা তো বটেই, মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকেও মিহিরবাবুর খোঁজ নেওয়া হয়।
তৃণমূল সূত্রের খবর, জটিল অস্ত্রোপচার শুনে মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে দ্রুত কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন। সেই মতো আজ শুক্রবার পদাতিক এক্সপ্রেসে টিকিট কাটেন মিহিরবাবু। স্ত্রী-সহ ছ’জন সদস্যকে নিয়ে কোচবিহার স্টেশনে পৌঁছেও গিয়েছিলেন তিনি।
ট্রেন ধরার আগেই মিহিরবাবুর মোবাইলে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ এসে পৌঁছয়। স্টেশন থেকে নার্সিংহোমে ফিরে মিহিরবাবু শুধু বললেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী যা করেছেন, তা একমাত্র মা-ই করতে পারেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy