E-Paper

আম ঘিরে বড় শিল্প হোক, দাবি মালদহের শ্রমিকদের

আমের জেলা হিসাবে পরিচিত মালদহ। গবেষকদের দাবি, রাজা-বাদশার আমল থেকে শুরু করে ব্রিটিশ আমলেও জেলায় আম চাষের উল্লেখ পাওয়া যায়।

অভিজিৎ সাহা

শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০২৫ ০৭:২১
মালদহের বাগানে আম পাড়ার কাজ।

মালদহের বাগানে আম পাড়ার কাজ। নিজস্ব চিত্র।

দুপুর ১২টা। ইংরেজবাজারের সাট্টারি এলাকার একটি বাগানে আম পাড়তে ব্যস্ত এক দল যুবক। মজুরি ঠিকঠাক মিলছে কি না জানতে চাওয়ায় থমকে দাঁড়ালেন সাট্টারির বাসিন্দা খগেশ মণ্ডল। বললেন, ‘‘এখন বাগানে আম আছে। তাই কাজও আছে। আম শেষ হলে কাজও থাকে না। তখন ফের পরিযায়ী শ্রমিক হয়ে দিল্লি-মুম্বই ছুটতে হয়।’’ তাঁর মতোই আমের মরসুমে ভিন্ রাজ্যের কাজ থেকে জেলায় ফিরে আসেন ইংরেজবাজার, রতুয়া, মানিকচক, পুরাতন মালদহের বহু পরিযায়ী শ্রমিক। তাঁদের আক্ষেপ, আমকে কেন্দ্র করে জেলায় বড় শিল্প গড়ে উঠলে পরিযায়ী শ্রমিক হয়ে তাঁদের আর ছুটতে হত না ভিন্ রাজ্যে।

আমের জেলা হিসাবে পরিচিত মালদহ। গবেষকদের দাবি, রাজা-বাদশার আমল থেকে শুরু করে ব্রিটিশ আমলেও জেলায় আম চাষের উল্লেখ পাওয়া যায়। তবু আম ঘিরে জেলায় আজও গড়ে ওঠেনি বড় কোনও শিল্প। পুরাতন মালদহের আমচাষি সুব্রত সরকার বলেন, ‘‘আমাদের কাছ থেকে ভিন্ রাজ্যের ব্যবসায়ীরা কাঁচা আম কিনে নিয়ে যান। এখান থেকে পাকা আম কিনে নিয়ে গিয়ে পানীয় তৈরি করে বাজারে বিক্রি করেন অনেকে। জেলায় আম কেন্দ্র করে বড় শিল্প গড়ে উঠলে, অনেকে লাভবান হবেন।’’

মালদহ জেলায় ৩১ হাজার হেক্টর জমিতে আমের চাষ হয়। ফি বছর গড়ে আড়াই থেকে তিন লক্ষ টন উৎপাদন হয়। এ বারও তিন লক্ষের বেশি আম উৎপাদনের সম্ভাবনা। আম চাষের সঙ্গে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ ভাবে চার লক্ষেরও বেশি মানুষ জড়িত বলে জানাচ্ছে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো। গাছ থেকে আম পাড়া, আমের প্যাকেজিং, প্যাকেজিংয়ের জন্য কাঠের বাক্স তৈরির মতো নানা কাজে প্রচুর শ্রমিকের প্রয়োজন হয়। জেলার বাগানে-বাগানে এখন অস্থায়ী ছাউনি তৈরি করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, গাছ থেকে আম পাড়া ও প্যাকেজিংয়ের জন্য দৈনিক ৪০০-৪২০ টাকা করে মজুরি দেওয়া হয়। মোথাবাড়ির শ্রমিক মহম্মদ হুমায়ুন বলেন, ‘‘আম পেড়ে ভাল মজুরি মেলে ঠিকই। তবে আম শেষ হলে জেলায় কাজও শেষ হয়ে যায়।’’ আম ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি উজ্জ্বল সাহা বলেন, ‘‘আমকে কেন্দ্র করে জেলায় শিল্পের ভাল রকম সম্ভাবনা রয়েছে। রাজ্য ও কেন্দ্রের সরকারের কাছে এ বিষয়ে দাবিও জানানো হয়েছে।’’ মালদহের জেলাশাসক নীতিন সিংহানিয়া বলেন, ‘‘আমের প্রক্রিয়াকরণ নিয়ে পরিকল্পনা করা হচ্ছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Malda

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy