Advertisement
০৮ মে ২০২৪

কংগ্রেসের অনেক দফতর ছিল বন্ধই

জামানত জব্দ হয়েছিল দু’বছর আগের ভোটেও। তবে এ বারের উপনিবার্চনে গত বারের থেকেও ভোট অর্ধেকের বেশি কমে যাওয়ায়, জেলায় দলটাই প্রশ্নের মুখে পড়ল বলে দাবি কংগ্রেসের নেতা-কর্মীদের একাংশের।

কাজ শেষে বেরোচ্ছেন কালো ব্যাজে বাম গণনা কর্মী।—নিজস্ব চিত্র

কাজ শেষে বেরোচ্ছেন কালো ব্যাজে বাম গণনা কর্মী।—নিজস্ব চিত্র

অরিন্দম সাহা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০১৬ ০১:১৬
Share: Save:

জামানত জব্দ হয়েছিল দু’বছর আগের ভোটেও। তবে এ বারের উপনিবার্চনে গত বারের থেকেও ভোট অর্ধেকের বেশি কমে যাওয়ায়, জেলায় দলটাই প্রশ্নের মুখে পড়ল বলে দাবি কংগ্রেসের নেতা-কর্মীদের একাংশের। মঙ্গলবার বিকেলের পরে জেলায় কংগ্রেসের অনেক পার্টি অফিস খোলেনি, যেগুলি খোলা ছিল সেখানেও কর্মীদের উপস্থিতি তেমন দেখা যায়নি। উল্টে দলের ফল নিয়ে নেতাদের মধ্যে প্রকাশ্যেই চাপানউতোর শুরু হয়ে গিয়েছে। নিচুতলায় নেতৃত্বের একাংশের দক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। প্রার্থীর নাম জানাতে দেরি করা, প্রচারে নানা খামতির ক্রুটি বিচ্যুতি নিয়ে দোষারোপ শুরু হয়েছে। জেলা কংগ্রেস নেতৃত্ব অবশ্য এমন কোনও প্রশ্ন-দ্বন্দ্ব-জল্পনা মানতে চাননি। তাঁদের অভিযোগ, জেলায় অবাধ রিগিং হওয়াতেই দলের ফল এমন হয়েছে।

কোচবিহার জেলা কংগ্রেস সভাপতি শ্যামল চৌধুরী বলেন, “খোঁজখবর নিয়ে দেখেছি এবার ৫৫-৬০ শতাংশ ভোট হওয়ার কথা ছিল। অথচ ৭৭ শতাংশের বেশি ভোট পড়ল। ভোটের দিন বিকেল চারটের পর এক ঘণ্টার মধ্যে ব্যাপক ভাবে রিগিং হয়েছে। শহরের বুথগুলিতে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকলেও গ্রামের বুথে তা ছিল না।” জেলা সভাপতির বক্তব্যের সঙ্গে অনেক নেতা-কর্মীই একমত হতে পারেননি। তাঁদের প্রশ্ন, তবে বিজেপি নিজেদের ভোট বাড়াল কী করে? জেলা কংগ্রেস সভাপতি শ্যামলবাবুর দাবি, “বিজেপির সঙ্গে গটআপ ম্যাচ হয়েছে।” ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস প্রার্থী কেশব রায় ৭৪,৫০০ ভোট পেয়েছিলেন। মোট ভোটের ৫ দশমিক ৩৯ শতাংশ। এ বার কংগ্রেস প্রার্থী পার্থপ্রতিম ইশোর পেয়েছেন ৩৩,৪৭০ ভোট। অর্থাৎ ২ দশমিক ৪৮ শতাংশ ভোট। গত লোকসভার মতো এ বারেও দলের প্রার্থীর জামানত জব্দ হয়েছে। কিন্তু এ বারে গত বছরের প্রাপ্তভোট অর্ধেকের বেশি কমে যাওয়া নিয়ে অস্বস্তি বেড়েছে দলের নেতাদের একাংশের। দলের এক নেতার কথায়, ‘‘জামানত বাজেয়াপ্ত হওয়া নয়, ভোট কমে যাওয়াটাই বড় ধাক্কা। আগেভাগে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে সংগঠন ঢেলে সাজিয়ে প্রচারের আরও বেশি দরকার ছিল। তার উপর দলবদলের প্রবণতা। তার উপর শাসক দলের সন্ত্রাসে ভোটের নামে প্রহসন হয়েছে। সব মিলিয়ে এমন বিপর্যয় হয়েছে।’’

প্রকাশ্যে এসেছে দলে মতবিরোধও। দলের অন্দরের চাপা ক্ষোভ বিক্ষোভও ভোট কমার কারণ হিসেবে দলের অন্দরেই আলোচিত হচ্ছে। কংগ্রেস নেতা কেশব রায় বলেন, “শাসক দলের সন্ত্রাস তো ছিলই তবে এটাও ঠিক সাংগঠনিক দুর্বলতাও কিছুটা ছিল। অনেক কর্মীর সঙ্গে ভোটের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের অনেকের যোগাযোগের খামতি ছিল। যার জন্যই এতটা খারাপ ফল হয়েছে।” জেলা যুব কংগ্রেস সভাপতি তথা এবার উপনির্বাচনের প্রচারের অন্যতম দায়িত্বপ্রাপ্ত সম্রাট মুখোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, “যারা এসব বলছেন অভিভাবক হিসেবে যোগাযোগের দায়িত্ব তারাও এড়াতে পারেন না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

By-poll Congress
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE