মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরে আবাসিক বালিকাদের যৌন নির্যাতনের অভিযোগে কর্ণধারের ছেলে গ্রেফতার হওয়ার পর ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কায় শিক্ষকদের পাশাপাশি অভিভাবকদের অনেকেই। আবাসিক দুই বালিকাকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে শুক্রবার রাতে গ্রেফতার হয় মিশনারি ওই স্কুলটির কর্ণধারের ছেলে। পাশাপাশি সব জানানোর পরও কোনও ব্যবস্থা নেননি বলে ধৃতের বাবা ও মায়ের বিরুদ্ধেও অভিযোগ জানিয়েছেন দুই অভিভাবক। ধৃতের বাবা-মা-র কোনও খোঁজ এ দিন মেলেনি। এই পরিস্থিতিতে স্কুলের পড়ুয়াদের নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন অভিভাবকরা। পাশাপাশি মুষড়ে পড়েছেন শিক্ষকরাও। স্কুলের বদনাম করতে চক্রান্ত করে এ সব করা হচ্ছে এমন অভিযোগও তুলেছেন অনেকেই। পাশাপাশি ধৃত এমন অপরাধ করতে পারে কি না, তা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছেন তার শিক্ষক, অভিভাবক ও স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই।
হরিশ্চন্দ্রপুরের আইসি দেবাশিস দাস বলেন, ‘‘অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে। পাশাপাশি ধৃতের বাবা-মায়ের বিরুদ্ধেও অভিযোগ রয়েছে যে তাঁরা সব জেনেও কোনও ব্যবস্থা নেননি। আমরা সেই অভিযোগ খতিয়ে দেখছি।’’ হরিশ্চন্দ্রপুর রেল স্টেশনের অদূরে ১৯৯৬ সালে ইংরেজি মাধ্যম ওই স্কুলটি শুরু হয়। শ’দুয়েক পড়ুয়ার মধ্যে জনা তিরিশেক পড়ুয়া হস্টেলে থাকে। তার মধ্যে ছিল চার বালিকা। স্কুলটিতে মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত পড়ানো হয়। রয়েছেন কুড়ি জন শিক্ষক। তবে মাধ্যমিক স্তরের এখনও অনুমোদন না থাকায় পরীক্ষার্থীদের অন্য স্কুল থেকে পরীক্ষার বন্দোবস্ত করা হয়। চাটাইয়ের ঘর দিয়ে স্কুলটি শুরু হলেও এখন তিনতলা ভবন তৈরি হয়েছে। তার দোতালায় দুই ছেলেকে নিয়ে থাকেন কর্ণধার শ্রাবণী মণ্ডল ও নিমাই মণ্ডল। তিন চলায় রয়েছে হস্টেল। একতলায় ক্লাস চলে।
তবে রবিবার হলেও শিক্ষকদের অনেকেই স্কুলে হাজির হয়েছিলেন। তাদের চোখেমুখে দুশ্চিন্তার ছাপ স্পষ্ট। এক শিক্ষিকা বলেন, ‘‘এখানে ১২ বছর ধরে শিক্ষকতা করছি। ধৃতকে ছোটবেলা থেকেই দেখছি। ও এমন কিছু করতে পারে বলে মনে হয় না।’’
কয়েক জন শিক্ষকের দাবি, ‘‘স্কুলে অভাবী অনেকের কাছ থেকেই কম ফি নেওয়া হয়। অনেকে নিয়মিত টাকা না দিলেও শ্রাবণীদেবী তাতে আপত্তি করতেন না। কয়েকজনের প্রচুর টাকা বকেয়া ছিল। তাদের টাকা মিটিয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। তাদেরই কেউ কেউ এমন অভিযোগ করেছে। এটা চক্রান্ত। তা ছাড়া মেয়েরা যে ঘরে থাকত সেখানে সারাক্ষণের জন্য একজন আয়া রয়েছেন। তেমন কিছু হলে মেয়েরা তাকে কেন কিছু বলল না সেটাও একটা প্রশ্ন।’’ ধৃত যুবক নিরীহ বলে দাবি করেছেন স্থানীয় বাসিন্দাদেরও অনেকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy