তৃণমূলের বিরুদ্ধে বাড়িতে ঢুকে অগ্নিসংযোগ এবং সিপিএমের বিরুদ্ধে মারধর ও ছিনতাইয়ের অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগে উত্তপ্ত হয়ে উঠল জলপাইগুড়ি পুরভোটের আসর। মঙ্গলবার শহরের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের অরবিন্দ নগর এলাকার দুই দলের কর্মী সমর্থকরা একে অন্যের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে ওই অভিযোগ দায়ের করেন। ঘটনার প্রতিবাদে দুই দলের তরফে এদিন বিকেলে ওয়ার্ডে মিছিল বার করা হয়।
সিপিএমের অভিযোগ, আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য তৃণমূল আশ্রিত একদল দুষ্কৃতী এদিন ভোরে ওয়ার্ডের এক দলীয় সমর্থকের বাড়িতে ঢুকে গ্যারেজে রাখা ব্যাটারি চালিত তিন চাকার টোটো গাড়ি জ্বালিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। যদিও তৃণমূল নেতৃত্ব ওই অভিযোগ অস্বীকার করেন। তাঁদের পাল্টা অভিযোগ, সিপিএমের একদল কর্মী সমর্থক তাঁদের এক কর্মীকে মারধর করে গলার সোনার হার ছিনতাই করে। পুর নির্বাচন আধিকারিক তথা জলপাইগুড়ির মহকুমাশাসক সীমা হালদার বলেন, “দুই পক্ষের অভিযোগ মিলেছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” একই বক্তব্য কোতোয়ালি থানার আইসি আশিস রায়ের। ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম প্রার্থী মাম্পি সরকার জানান, স্থানীয় বাসিন্দা তথা দলীয় কর্মী দীপেন্দ্রনারায়ণ বসু ভোট প্রচারে সক্রিয় ভাবে কাজ করায় শাসক দলের লোকজন তাঁকে ভয় দেখিয়ে ঘরে বসানোর চেষ্টা করছেন। কিন্তু কিছুতে লাভ না হওয়ায়, মঙ্গলবার ভোরে তাঁর বাড়িতে ঢুকে গ্যারেজ ঘরে রাখা টোটো গাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।
দীপেন্দ্রনারায়ণবাবুর মা সবিতা বসু বলেন, “এদিন ভোরে ধোঁয়া দেখে আঁতকে উঠে ঘর থেকে বেরিয়ে দেখি গ্যারেজ ঘরে আগুন জ্বলছে। কোনও মতে জল ছিটিয়ে আগুন নেভান হয়।” তাঁর অভিযোগ, ভোট প্রচারে সিপিএমের হয়ে রাস্তায় নামায় কয়েকদিন থেকে শাসক দলের লোকজন বাড়ির সামনে এসে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে।
তাঁর কথায়, “গত রবিবার হুমকি দেওয়া হয় প্রচারে যাওয়া বন্ধ না করলে ঘর বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হবে। মঙ্গলবার সেই চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু পাকা ঘর থাকায় আগুন ছড়াতে পাড়েনি।” এদিন তিনি ওয়ার্ডের সিপিএম প্রার্থী এবং দলীয় সমর্থকদের নিয়ে কোতোয়ালি থানায় সমীর দে এবং শিবশঙ্কর দাস নামে দুই তৃণমূল সমর্থকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। এদিকে সিপিএম কর্মী সমর্থকরা থানা ছেড়ে যেতে না যেতে পাল্টা অভিযোগ জানাতে পুলিশের কাছে পৌঁছে যান তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা। সমীরবাবু অভিযোগ করেন, সিপিএম কর্মী নির্মাল্য সরকার এবং দীপেন্দ্রনারায়ণবাবুর তাঁকে মারধর করেছেন এবং তাঁর গলার হার ছিনতাই করেছেন। তিনি বলেন, “টোটো গাড়িতে আগুন লেগেছে শুনে ছুটে যাই। ওই সময় অভিযুক্ত দুই ব্যক্তি আচমকা আমার উপরে ঝাপিয়ে পড়ে মারধর শুরু করে। গলার সোনার হার ছিনতাই করে।”
দুই দলের অভিযোগ পাল্টা অভিযোগে এদিন সকাল থেকে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ২৩ নম্বর ওয়ার্ড। ঘটনার প্রতিবাদে সিপিএম সমর্থকরা এলাকায় মিছিল করেন। পাল্টা মিছিল করে সিপিএমকে আক্রমণ করেন তৃণমূল সমর্থকরা। জেলা সিপিএম সম্পাদক সলিল আচার্য বলেন, “আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টির জন্য তৃণমূল বিভিন্ন ভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। প্রশাসনকে সবই জানানো হয়েছে।” যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেন তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের জেলা সভাপতি মিঠু মোহন্ত। তিনি বলেন, “পরাজয় নিশ্চিত বুঝে সিপিএম কর্মীরা সন্ত্রাসের রাস্তা বেছে নিয়েছে।