Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

৭ বছরেও পরিষেবা মেলে না, রেফারই ভবিতব্য

২০১০ সালের অগস্টে মালদহ সদর হাসপাতালকে মেডিক্যাল কলেজ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। পরের বছর ২০১১ সালের জানুয়ারি মাস থেকে শুরু হয় মেডিক্যাল কলেজ। অথচ সাত বছরেও চালু হয়নি হৃদরোগের চিকিৎসা পরিষেবা।

অভিজিৎ সাহা
মালদহ শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:০৩
Share: Save:

দিন পনেরো আগে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন ইংরেজবাজার শহরের সদরঘাট এলাকার বাসিন্দা গৌরাঙ্গ সরকার। মালদহে সেই রোগের চিকিৎসা না হওয়ায় তাঁকে কলকাতায় রেফার করেছিলেন চিকিৎসকেরা। তবে পরিবারের লোকেরা দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে রোগীর চিকিৎসা করান। গৌরাঙ্গ বাবুর ছেলে জয়ন্ত সরকার বলেন, সাত দিনে তাঁদের প্রচুর টাকা খরচ হয়েছে। মালদহে পরিষেবা চালু থাকলে মধ্যবিত্ত পরিবারের সুবিধে হবে। বছর খানেক আগে এমনই সমস্যায় দুর্গাপুরের ওই হাসপাতালেই ভর্তি ছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরীও।

২০১০ সালের অগস্টে মালদহ সদর হাসপাতালকে মেডিক্যাল কলেজ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। পরের বছর ২০১১ সালের জানুয়ারি মাস থেকে শুরু হয় মেডিক্যাল কলেজ। অথচ সাত বছরেও চালু হয়নি হৃদরোগের চিকিৎসা পরিষেবা। রোগীর পেসমেকার বসানো হয় না। শুধু তাই নয়, লিভার, জন্ডিসের মতো রোগেরও চিকিৎসা হয় না মালদহ মেডিক্যালে। ফলে তা নিয়ে জেলাবাসীর ক্ষোভ রয়েছে। চালু হয়নি নিউরোসার্জেন বিভাগ, গ্যাসট্রোএন্টারলজির মতো গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ। যার ফলে চিকিৎসার জন্য জেলাবাসীকে ছুটতে হচ্ছে প্রায় ৩৩০ কিলোমিটার দূরে কলকাতায়।

মেডিক্যাল কলেজের উপর দিয়ে গিয়েছে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক, রেল পথ। ফলে জাতীয় এবং রাজ্য সড়কে প্রায় পথ দুর্ঘটনা ঘটে। অথচ এখনও গড়ে ওঠেনি নিউরোসার্জারি বিভাগ। মাথার কোনও সমস্যার জন্য রোগীদের ছুটতে হয় কলকাতায়।

মেডিক্যাল কলেজে পর্যাপ্ত শয্যাও নেই। কমপক্ষে দেড় হাজার শয্যা থাকার কথা থাকলেও এখানে রয়েছে মাত্র ৭৫০টি। যার জন্য এক শয্যায় দু’জন কিংবা তিন জন করে রোগীদের রেখে চিকিৎসা চলছে। বহু রোগীকে মেঝেতে এবং হাসপাতালের বারান্দায় থাকতে হচ্ছে। এই মূহূর্তে এখানে প্রায় ২২০০ রোগী ভর্তি বলে জানিয়েছেন এক কর্তা। এক রোগীর সঙ্গে অার একজন থাকলে সংক্রামনের আশঙ্কা থেকে যায়।

ছ’মাস আগে মেডিক্যাল কলেজে মাদার চাইল্ড হাবের উদ্বোধন করা হয়। তবে সেখানে এখনও পরিকাঠামো গড়ে ওঠেনি। যার জন্য প্রসুতি বিভাগ স্থানান্তরিত করা এখনও যায়নি। তবে ট্রমা কেয়ার ইউনিট গড়ে তোলার কাজ চলছে। জানা গিয়েছে, দেড়শো কোটি টাকা ব্যয়ে গড়ে তোলা হচ্ছে ট্রমা কেয়ার ইউনিট। কেন্দ্র ১২০ কোটি এবং রাজ্য সরকার ৩০ কোটি টাকা দিচ্ছে ট্রমা কেয়ার ইউনিটের জন্য। সাংসদ মৌসম নূর বলেন, “মেডিক্যাল কলেজ কেবল নামেই।” মালদহ মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ প্রতীপকুমার কুন্ডু বলেন, “পর্যাপ্ত চিকিৎসক, নার্স রয়েছে। তবে চতুর্থ শ্রেণি এবং সাফাই কর্মী কম রয়েছে। আর পরিকাঠামো গড়ে তোলার কাজ চলছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE