Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Tapan

শিকল পায়ে তরুণী, ‘নিরুপায়’ পরিবারও

বাবা মতিউর রহমান পেশায় খেত মজুর। অভাবের সংসার সামলাতে কাজের জন্য প্রায়শই তাঁকে বাড়ির বাইরে খাকতে হয়। অসুস্থ মেয়ের চিকিৎসা করানোর আর্থিক সামর্থ্য নেই বলে তিনি জানান।

অসহায়: পায়ে শিকল তরুণীর। নিজস্ব চিত্র

অসহায়: পায়ে শিকল তরুণীর। নিজস্ব চিত্র

অনুপরতন মোহান্ত
তপন শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০২২ ১০:৪০
Share: Save:

মাটির বাড়ির বারান্দায় বসে বছর ঊনিশ-কুড়ির এক তরুণী। পায়ে শিকল। তালা চাবি লাগিয়ে ওই শিকল আবার বাঁধা ১০ কেজি ওজনের একটি বাটখারায়। দক্ষিণ দিনাজপুরের তপন ব্লকের রামচন্দ্রপুর অঞ্চলের মির্জাপুর এলাকার হতদরিদ্র পরিবারের মেয়ে মাম্পি তাই নড়চড়া করতে পারে না। সারাদিন চুপ করে বসে থাকে। ছোট থেকে মানসিক ভাবে দুর্বল মেয়েটি। আশেপাশের বাড়িতে ছোটাছুটি করে কাউকে যাতে বিরক্ত করতে না পারে তাই দিনভর ঘরের বারান্দায় শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয় মাম্পিকে।

বাবা মতিউর রহমান পেশায় খেত মজুর। অভাবের সংসার সামলাতে কাজের জন্য প্রায়শই তাঁকে বাড়ির বাইরে খাকতে হয়। অসুস্থ মেয়ের চিকিৎসা করানোর আর্থিক সামর্থ্য নেই বলে তিনি জানান। ফলে এখনও মাম্পির চিকিৎসা করাতে পারেনি ওই দুঃস্থ পরিবার।

ওই ঘটনার খবর পেয়ে সরব হয়েছেন সমাজকর্মীরা। এলাকার শিক্ষক অলোক সরকার বলেন, “এই ভাবে কাউকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা যায় না। মেয়েটির মানসিক সমস্যায় ভুগছে। পঞ্চায়েত ও প্রশাসনের সহায়তা প্রয়োজন।” পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ছ’বছর বয়স থেকে মাম্পির মানসিকভাবে দুর্বল। মা অর্জিনা বিবি বলেন, “ছাড়া থাকলেই মেয়ে ছুটে বাইরে চলে যায়। টাকার অভাবে বড় ডাক্তার দেখাতে পরিনি।” সরকারি ভাবে মেয়ের চিকিৎসা হলে মাম্পি সুস্থ জীবনে ফিরতে পারে বলে তিনি জানান।

দুঃস্থ ও অসহায় মাম্পির দুর্দশার কথা জেনে তপনের বিডিও তীর্থঙ্কর ঘোষ বলেন, “খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তপন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রাজু দাস পরিবারটির পাশে দাঁড়িয়ে মাম্পির চিকিৎসা ও সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Tapan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE