সার বেঁধে: লালদিঘিতে পরিযায়ী পাখি। নিজস্ব চিত্র।
পুরনো ডেরায় কারও দেখা নেই। নতুন ডেরাতেই আসতে শুরু করেছে রাজনগর কোচবিহারের শীতের অতিথিরা। ডিসেম্বরে শেষ সপ্তাহে শহরের লালদিঘির জলে ইতিমধ্যে বেশকিছু পরিযায়ী পাখি চলে এসেছে। কখনও দিঘির জলে দল বেঁধে ঘুরে বেড়াচ্ছে, কখনও উড়েও যাচ্ছে আপনমনে। যা দেখতে শহরের বাসিন্দাদের অনেকে যাচ্ছেন লালদিঘি পাড়ে।
সেইসঙ্গে পরিবেশপ্রেমী মহলের একাংশে চর্চা বেড়েছে অতিথি-হীন সাগরদিঘি নিয়ে। কয়েক বছর আগেও শীতের মরসুমে ওই পরিযায়ীরা সেখানে ভিড় জমাত। অভিযোগ, দূষণের জেরেই পুরনো ডেরায় যাচ্ছে না শীতের অতিথিরা।
পরিযায়ীরা লেসার হুইসলিং টিল বা সরাল প্রজাতির পাখি। পরিবেশপ্রমীদের একাংশ জানান, আশির দশকে সাগরদিঘিতে প্রায় ছ’হাজার পরিযায়ী পাখি ডেরা করেছিল। পরবর্তীতে ওই সংখ্যা অনেক কমেছে। গত কয়েক বছরে হাতেগোনা কিছু পাখির দেখা মিলেছে। এ বার ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহেও সাগরদিঘি পরিযায়ী পাখি শূন্য। সাগরদিঘির চার দিকে রাস্তায় যানবাহনের ভিড়, শব্দ দূষণ, দিঘির জলে যানবাহন ও জামাকাপড় সাফাইয়ের মতো নানা কারণে পাখিরা আগের মতো সংখ্যায় এমনিতেই আসছিল না। তা ছাড়াও সেখানে ছোট মাছ, পোকামাকড়ের মতো খাবারের অভাব রয়েছে বলেও পরিবেশপ্রেমীদের বক্তব্য। কোচবিহারের পরিবেশপ্রেমী সংস্থা ন্যাসগ্রুপের সম্পাদক অরূপ গুহ বলেন, “আশির দশকে সাগরদিঘির তিন ভাগ জল লেসার হুইসলিং টিলের ভিড়ে ঢেকে যায়। দূষণ, খাবারের অভাবের, উন্মুক্ত পরিবেশের মতো নানা কারণে সেখানে অতিথিদের আনাগোনা কমতে থাকে।”
কোচবিহারের ডিএফও সঞ্জিত কুমার সাহা অবশ্য বলেন, “পরিযায়ী পাখিদের যাতে কোথাও সমস্যা না হয় সে দিকে নজর রাখা হচ্ছে। তবে যে কোন জলাশয় দূষণ মুক্ত রাখতে এলাকার বাসিন্দাদের সহযোগিতাও দরকার।”
পরিবেশপ্রেমীদের একাংশের অভিযোগ, সাগরদিঘি চত্বর ‘সাইলেন্স জোন’ বলে ঘোষণা হলেও তা সে ভাবে মানা হচ্ছে না। জামাকাপড়, যানবাহন সাফাইয়ের মতো কাজের জেরে সার্ফ, সাবানের জলের পাশাপাশি মোবিল, তেল জলে মিশছে। কোচবিহারের সদর মহকুমা শাসক সব্যসাচী রায় বলেন, “বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।” মৎস্য দফতর সূত্রের দাবি, দিঘি দূষণমুক্ত রাখতে উদ্যোগ রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy