সুখ: শীত পড়তেই উড়ে এসেছে রুডি শেল ডাক (বাঁ দিকে) ব্ল্যাক হেডেড গাল (ডান দিকে)। মনের সুখে তারা উড়ে বেড়াচ্ছে আকাশ বেয়ে। নিজস্ব চিত্র
দলে দলে হাজির পারিযায়ীরা। রং-বেরংয়ের পাখিদের ওড়াওড়ি দেখতে সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত কমবেশি ভিড় হচ্ছে খাল-বিল-নদীতে। সেই সুযোগে পাখি শিকারিও সক্রিয় হতে পারে বলে শঙ্কিত পরিবেশপ্রেমী সংগঠনের অনেকেই। তাই পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারাও চুপিসাড়ে আচমকা নৌকা নিয়ে হানা দিচ্ছেন তিস্তার জনমানবহীন প্রাকৃতিক পাখিরালয়ে। আসরে নেমেছে পর্যটন দফতরও। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার নীরজকুমার সিংহও গজলডোবা থেকে তিস্তার সেবক করোনেশন সেতুর কিছুটা আগে পর্যন্ত নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
সরকারি সূত্রের খবর, কোথায় কতটা নৌকায় করে পর্যটকদের যেতে দেওয়া যাবে তা ঠিক করতে সরেজমিনে হাজির হচ্ছেন পর্যটন দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর সম্রাট চক্রবর্তীও। তিনি বলেছেন, ‘‘পরিযায়ী ভিড় শীতের সময়ে উত্তরের একাধিক জলাশয়ের অন্যতম আকর্ষণ। তা দেখতে ভিড় হবেই। ছবি তুলতেও আগ্রহীদের অভাব নেই। কিন্তু, ছবি তোলার নামে পাখিদের বিরক্ত করা বরদাস্ত করা হবে না। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মেনে এলাকা চিহ্নিত করে নজরদারি বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।’’ সেই মতো পর্যটন দফতরের তরফে পুলিশের কাছেও সুনির্দিষ্ট কিছু সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।
ঘটনা হল, নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকেই পরিযায়ীদের বিড় বাড়ে উত্তরবঙ্গের নানা জলাশয়ে। তা তিস্তার ফুলবাড়ির খাল হোক কিংবা রসিকবিল অথবা তিস্তা, সবেতেই দেখা যাচ্ছে নানা প্রজাতির পাখি। কোথাও রুডি শেল ডাক, ব্ল্যাক হেডেড গাল, নর্দান ল্যাপউইংয়ের টানে ক্যামেরা নিয়ে হাজির হচ্ছেন পাখিপ্রেমীরা। পেশাদার থেকে অত্যুৎসাহী হবু আলোকচিত্রীরাও কেউ কেউ নৌকা ভাড়া করে চলে যাচ্ছেন নদীর নির্জন এলাকায়। জনমানবহীন যে সব জায়গা পরিযায়ীদের অবাধ বিচরণ, সেখানেই যেতে ঝুঁকিও নিতে দেখা যাচ্ছে।
পাখিপ্রেমকে স্বাগত জানালেও পরিবেশপ্রেমীরা উদ্বিগ্ন চোরাশিকারিদের সক্রিয়তা নিয়েই। কারণ, অতীতে দেখা গিয়েছে, পাখি দেখার নামে ফাঁদ পেতে শিকার করা হয়েছে। কোথাও আবার অত্যুৎসাহী পর্যটকদের নৌকাবিহারের জেরে বিরক্ত হয়ে পাখিরা সরে গিয়েছে অন্যত্র। এমনকী, পরিযায়ী হাঁসের মাংস লুকিয়ে বিক্রির অভিযোগও কম ওঠেনি। তই হিমালয়ান নেচার অ্যাডভেঞ্চার পাউন্ডেশনের (ন্যাফ) কো অর্ডিনেটর অনিমেষ বসু বলেন, ‘‘পরিযায়ী পাখিদের বিচরণ ক্ষেত্র এমনিতেই নানা কারণে সঙ্কুচিত হচ্ছে। যতটা আছে সেটাও নিরাপদ রাখতে হবে। সে জন্য পুলিশ-প্রশাসন, পর্যটন দফতর, বন বিভাগতে বাড়তি সতর্ক থাকার জন্য আমরা বারেবারেই আবেদন করেছি। সাধারণ মানুষ, স্থানীয় বাসিন্দাদেরও ওই কাজে আরও বেশি সামিল করতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy