প্ল্যাটফর্ম জুড়ে যত্রযত্র লেগে রয়েছে পান, গুটখার লাল দাগ। টিকিট রিজার্ভেশন কাউন্টার, যাত্রী প্রতীক্ষালয় ও বিশ্রামাগারের সামনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে লিচু, আম, কলার খোসা। বেসিন চুঁইয়ে জলে ভেসে গিয়েছে প্ল্যাটফর্মের একাংশ।
শনিবার দুপুরে রায়গঞ্জ স্টেশন পরিদর্শনে এসে স্বচক্ষে এমন দৃশ্য দেখে প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের কাটিহার ডিভিশনের ডিআরএম উমাশঙ্কর সিংহ যাদব। প্রকাশ্যেই ভর্ৎসনা করেন স্টেশনের সুপারিনটেনডেন্ট জয়ন্ত চন্দকে। সাফাইকর্মীদের তলব করলেও তাঁদের কারওরই দেখা মেলেনি। ডিআরএম এর পর ওই ঠিকাদার সংস্থার কর্ণধার গৌতম ভট্টাচার্যকে সতর্ক করে যাত্রীদের স্বাচ্ছন্দ্যের কথা মাথায় রেখে প্লাটফর্ম ও স্টেশন চত্বর সব সময় সাফসুতরো রাখার নির্দেশ দেন। এখানেই শেষ নয়, এর পর টিকিট রিজার্ভেশন কাউন্টার পরিদর্শনে গিয়ে সেখানে প্রতিবন্ধী, মহিলা ও প্রবীণ নাগরিকদের টিকিট সংরক্ষণে অগ্রাধিকার দেওয়ার পোস্টার দেখতে না পেয়ে ফের জয়ন্তবাবু-সহ কাউন্টারের কর্মীদের বকাঝকা করেছেন ডিআরএম।
উমাশঙ্করবাবু বলেন, ‘‘স্টেশন কর্তৃপক্ষ রেলের নিয়ম মেনে দায়িত্ব ও ভূমিকা পালন করছেন না। সাফাইয়ের কাজে নিযুক্ত ওই ঠিকাদার সংস্থাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করার নির্দেশ দিয়েছি। স্টেশন কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করেছি। যাত্রী স্বাচ্ছন্দের স্বার্থে দ্রুত স্টেশনের পরিস্থিতি বদল না হলে স্টেশন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
স্টেশনের সুপারিনটেনডেন্ট জয়ন্তবাবু জানান, ‘‘ডিআরএমের নির্দেশ অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।’’ সাফাইয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার সংস্থার কর্ণধার গৌতমবাবু বলেন, ‘‘কাজ করতে গেলে কিছু ভুল হয়ে যায়। ভবিষ্যতে যাতে প্লাটফর্ম ও স্টেশন চত্বর সাফাইয়ের কাজে কোনও ক্রুটি না হয় তা দেখা হবে।’’
এ দিন ডিআরএমের নেতৃত্বে আরপিএফ সহ উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের ২০ জনের একটি প্রতিনিধি দল স্টেশন পরিদর্শনে আসেন। পরিদর্শনের পর তাঁরা স্টেশনের রেলওয়ে ইউজার্স কনসালটেটিভ কমিটির সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে রাধিকাপুর থেকে কলকাতাগামী দিনের বেলায় একটি ট্রেন চালু, রাধিকাপুর নিউ জলপাইগুড়ি ডিএমইউ প্যাসেঞ্জার ট্রেন সঠিক সময়ে চালানো, কলকাতাগামী রাধিকাপুর এক্সপ্রেস ট্রেনের কোচ বাড়ানো, রায়গঞ্জে রেকপয়েন্ট চালু করা সহ একাধিক দাবি ওঠে। ডিআরএম তাঁদেরকে আশ্বস্ত করে জানান, কমিটির সদস্যদের দাবি তিনি নথিভুক্ত করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত পদক্ষেপ করবেন। তিনি বলেন, ‘‘রায়গঞ্জ স্টেশনের ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ৫০ মিটার যাত্রীশেড ও কালিয়াগঞ্জ স্টেশনে ফুটব্রিজ তৈরির জন্য এ দিনই রেল কর্তৃপক্ষ ২৫ লক্ষ ও ৮০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছেন। খুব শীঘ্রই টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ করে কাজ শুরু করার চেষ্টা চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy