Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

টয়ট্রনে দুর্ভোগ, মন্ত্রীকে নালিশ

মিতাদেবীর অভিযোগ, দুপুর একটার সময় ট্রেন ছাড়ে৷ ট্রেনে পাখা না থাকায় তার আগে ছোটদের নিয়ে গরমে কার্যত হাঁসফাস উঠে যায়৷ তিনি বলেন, ‘‘শেষ পর্যন্ত ট্রেন ছাড়ার কিছুক্ষণ পর আমরা জানতে পারি দার্জিলিং-এ গোলমাল চলছে৷

 ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০১৭ ০৩:১৯
Share: Save:

পাহাড়ে অশান্তি ছড়ানোর দিন টয়ট্রেনে চেপে চরম দুর্ভোগে পড়ার অভিযোগ তুলল জলপাইগুড়ির দু’টি পরিবার৷ রেল আধিকারিক থেকে শুরু করে কর্মীদের কাছে বারবার অনুরোধ করেও কোন সাহায্য মেলেনি বলরে অভিযোগ তাদের৷ এই পরিস্থিতিতে বিষয়টি নিয়ে রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভুর কাছে অভিযোগ জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা৷

গত ৮জুন দুই মেয়েকে নিয়ে শৈল শহর দার্জিলিং-এ যাওয়ার পরিকল্পনা করেন পেশায় সমাজকল্যাণ দফতরের কর্মী মিতা চট্টোপাধ্যায়৷ জলপাইগুড়ির পবিত্র পাড়া এলাকার বাসিন্দা মিতাদেবীর পরিবারের সঙ্গে তার ভাই কুন্তল ঘোষও স্ত্রী এবং চার বছরের সন্তানকে নিয়ে দার্জিলিং যাওয়ার পরিকল্পনা নেন৷ সকাল ন’টার আগেই জলপাইগুড়ি থেকে শিলিগুড়ি জংশন স্টেশনে পৌঁছে যান তাঁরা৷ তাঁদের অভিযোগ, সকাল ন’টায় ট্রেন ছাড়ার কথা থাকলেও, ট্রেন স্টেশনে এসে পৌছায় বেলা এগারোটা নাগাদ৷ তারপর থেকেই শুরু হয় চরম দুর্ভোগ৷

মিতাদেবীর অভিযোগ, দুপুর একটার সময় ট্রেন ছাড়ে৷ ট্রেনে পাখা না থাকায় তার আগে ছোটদের নিয়ে গরমে কার্যত হাঁসফাস উঠে যায়৷ তিনি বলেন, ‘‘শেষ পর্যন্ত ট্রেন ছাড়ার কিছুক্ষণ পর আমরা জানতে পারি দার্জিলিং-এ গোলমাল চলছে৷ কিন্তু মোবাইলে যে গোলমালের খবর বিস্তারিত জানবো তারও কোনও উপায় ছিল না৷ চার্জ শেষ হয়ে গেলেও ট্রেনে মোবাইলে চার্জ দেওয়ার কোন ব্যবস্থা ছিল না৷ ট্রেনের মধ্যে যে রেলকর্মীরা ছিলেন তাঁরাও দার্জিলিং পর্যন্ত যেতে ভয় পাচ্ছিলেন৷ ট্রেন কার্শিয়াং-এ পৌছাতেই বাইরে লোকের ভিড় ও পুলিশকে দেখে আমরা আরও ভয় পেয়ে যাই৷’’

ওই দুই পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, তারপরই তাঁরা স্টেশনের কর্তাদের কাছে ছুটে যান৷ তাঁরা দার্জিলিং-এ যাওয়ার বদলে শিলিগুড়ি ফিরে যেতে চান বলে রেল আধিকারিকদের অনুরোধ জানান৷ কিন্তু অভিযোগ, সেখান থেকে কোনও সাহায্যই তাঁরা পাননি৷

কুন্তলবাবুর অভিযোগ, ‘‘স্টেশনের আধিকারিকরা আমাদের শুধু এটুকু জানান, তাঁরা নিরাপত্তা রক্ষী দিয়ে ট্রেনে করে আমাদের দার্জিলিং পৌঁছে দেবেন৷ এর বাইরে আর তাদের কোনও দায়িত্ব নেই৷’’ এমনকি, অপরিচিত ওই জায়গায় তাদেরকে শিলিগুড়ি ফেরার জন্য গাড়ির ব্যবস্থা করে দিতে বললেও তারা তা করে দেননি বলে কুন্তলবাবুর অভিযোগ।

মিতাদেবী বলেন, ‘‘এরপর আমরা ফের ট্রেনে চেপে বসি৷ কিন্তু তখন ট্রেনে ভেতরে থাকা ভিন রাজ্যের অনেক পর্যটকই ভয়ে কাঁপছেন৷ ট্রেনের ভেতরেও যে আমরা নিরাপদ নেই সেটাও বুঝতে অসুবিধা হয়নি৷ তাই বাধ্য হয়ে কয়েকজন মহিলাকে নিয়ে ফের ট্রেনের আধিকারিকদের কাছে আমরা যাই৷’’ তাঁদের বলা হয়, ফেরার গাড়ির ব্যবস্থা না হলে রেললাইনের ওপর বসে পড়া হবে৷ তখন ট্রেনযাত্রী ২৬ জন পর্যটকের জন্য তিনটি গাড়ির ব্যবস্থা করে দেন তারা৷ প্রচুর টাকা ভাড়া দিয়ে রাতের বেলায় শিলিগুড়ি পৌছতে পারেন বলে জানান তাঁরা।

জলপাইগুড়ির এই দুই পরিবারের সদস্যদের প্রশ্ন, প্রচুর টাকা খরচ করে টয়ট্রেনের বৈধ টিকিট কেটে তাঁরা উঠেছিলেন৷ অথচ, তাঁদের নিরাপত্তা বা যাত্রী স্বাচ্ছন্দ নিয়ে রেল কর্তাদের কোনও চিন্তা নেই কেন?

মিতাদেবী বলেন, ‘‘টয় ট্রেনের সঙ্গে গোটা দেশের সম্মান জড়িয়ে রয়েছে৷ অথচ, ওই ট্রেনে এত তিক্ত অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হল তা ভাবতেই পারছি না৷’’ বিষয়টি নিয়ে রেলমন্ত্রীকে মেল করে অভিযোগ জানিয়েছেন তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE