Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

বর্ষায় বাড়ছে মশার কামড়

অ্যাকিউট এনসেফ্যালাইটিস সিন্ড্রোমের বা এইএসে আশঙ্কা কমাতে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় বয়স্ক এবং ছোটদের টিকাকরণ হয়েছে। তার পরেও এ বছর ইতিমধ্যেই ২২ জন মারা গিয়েছেন। তার মধ্যে জলপাইগুড়ি এবং দার্জিলিং জেলাতেই মৃত্যুর সংখ্যা বেশি। এ বছর এখনও পর্যন্ত ওই দুই জেলাতেই ৭ জন করে এইএসে মারা গিয়েছেন।

সৌমিত্র কুণ্ডু
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০১৬ ০৩:৩৩
Share: Save:

অ্যাকিউট এনসেফ্যালাইটিস সিন্ড্রোমের বা এইএসে আশঙ্কা কমাতে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় বয়স্ক এবং ছোটদের টিকাকরণ হয়েছে। তার পরেও এ বছর ইতিমধ্যেই ২২ জন মারা গিয়েছেন।

তার মধ্যে জলপাইগুড়ি এবং দার্জিলিং জেলাতেই মৃত্যুর সংখ্যা বেশি। এ বছর এখনও পর্যন্ত ওই দুই জেলাতেই ৭ জন করে এইএসে মারা গিয়েছেন। জুলাই মাসের শুরুতেই খিঁচুনি জ্বর নিয়ে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে রোগী সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। তার উপরে ভাইরাল জ্বরে কাবু শিলিগুড়ি এবং লাগোয়া এলাকার অনেক মানুষ। প্রতি দিনই একাধিক রোগী উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল এবং শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে যাচ্ছেন। খিঁচুনি জ্বর নিয়ে শিলিগুড়ি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় চোপড়ার দাসপাড়ার বাসিন্দা বসিরউদ্দিনকে। তিন দিন ধরে ইসলামপুর হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। বসিরবাবুর ভাই তারিকুলের অভিযোগ, ইসলামপুর হাসপাতাল থেকে শুক্রবার ছুটি দেওয়া হয়েছিল তাঁর দাদাকে। ফের তিনি খিঁচুনি জ্বরে আক্রান্ত হয়ে পড়লে শিলিগুড়ির হাকিমপাড়ার এক নার্সিংহোমে নিয়ে গিয়েছিলেন পরিবারের লোকেরা। সেখান থেকে তাঁদের পরামর্শ দেওয়া হয়, আপাতত শিলিগুড়ি হাসপাতালে ভর্তি করাতে। সেই মতো তাঁরা রোগীকে এই হাসপাতালে নিয়ে আসেন। রোগীর স্যালাইন চলছে। শ্বাসকষ্টের জন্য প্রয়োজনে অক্সিজেনও দিতে হচ্ছে।

জ্বরে আক্রান্ত শিলিগুড়ির সুকান্তনগর কলোনির রাজকুমার সেনকে গত কাল রাতে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। গত কালই ভর্তি হয়েছেন পাঁচকেলগুড়ি এলাকার বাসিন্দা ত্রিনাথ শর্মা। ত্রিনাথবাবু বলেন, ‘‘জ্বরে শরীর ভয়ানক দুর্বল লাগছে। বমি, গা, হাত পা ব্যথাও ছিল।’’ রাজকুমারবাবু পরিবারের লোকেরা জানান, বারবার জ্বর আসছে। সঙ্গে গা ব্যথা।

শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এ বছর ডেঙ্গি বা ম্যালেরিয়ার সংক্রমণ এখনও তেমন দেখা যাচ্ছে না। গত বছর থেকে বয়স্কদের জেই টিকাকরণের পর আক্রান্তের সংখ্যা এ বছর কমেছে। তবে চিকিৎসার সমস্ত ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে রক্ত পরীক্ষার ব্যবস্থাও রয়েছে।’’ ভাইরাল ফিভারের চিকিৎসার সমস্ত ব্যবস্থা হাসপাতালে রয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেরই একটি সূত্র জানিয়েছে, এ বছর উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এখন পর্যন্ত ১৩১ জনের রক্ত পরীক্ষা করে ১৪ জনের রক্তে জেই জীবাণু মিলেছে। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল এবং নার্সিংহোমগুলি থেকে রক্তের নমুনা এবং সেরিব্র স্পাইনাল ফ্লুইডের নমুনা পরীক্ষা করে তা জানা গিয়েছে। গত বছর উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে ৬৩০টির মতো নমুনা পরীক্ষা করে দেড়শো রোগীর শরীরে জেই জীবাণু মিলেছিল। তবে গত কয়েক বছর জুলাই এবং অগস্ট মাসেই এইএস ও জেই সংক্রমণ উত্তরবঙ্গে সব চেয়ে বেশি হয়েছিল বলে হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

North Bengal Encephalitis
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE