Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

মর্টার শেল ভারতেরই, জানাল সেনা

গত বৃহস্পতিবার সকালে সেতুর নীচে শিশুরা চারটি মর্টার শেল দেখতে পায়। তা উদ্ধারের পর সিআইডি, বিএসএফ আধিকারিকরা গিয়ে সেগুলি পরীক্ষা করেন।

নিষ্ক্রিয়: উদ্ধার হওয়া মর্টার নিষ্ক্রিয় করা হচ্ছে। নিজস্ব চিত্র

নিষ্ক্রিয়: উদ্ধার হওয়া মর্টার নিষ্ক্রিয় করা হচ্ছে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
চটহাট (ফাঁসিদেওয়া) শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০১৮ ০৪:২৭
Share: Save:

মহানন্দার খালের ধার থেকে উদ্ধার হওয়া চারটি মর্টার শেলকে প্রায় ৩০ ঘণ্টা পর নিষ্ক্রিয় করল সেনাবাহিনী। ফাঁসিদেওয়া থানার চটহাটের নিজবাজারে খালের ধারে মাটির নীচে মর্টার ফাটানো হলেও গোটা এলাকা কেঁপে ওঠে। মহম্মদ বিট্টু নামের এক গ্রামবাসীর বাড়ির টিনের চাল ও দেওয়ালে মর্টার শেলের লেজের অংশ উড়ে গিয়ে পড়ে। আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন বাসিন্দারা। শুক্রবার দুপুর ২টো নাগাদ সেনাবাহিনীর বোমা বিশেষজ্ঞরা খালের জলের পাশেই গর্ত করে মর্টারগুলিকে ঢুকিয়ে বিস্ফোরণ ঘটান। এর জন্য চারদিকে অন্তত এক কিলোমিটার এলাকা খালি করে রাখা হয়েছিল।

গত বৃহস্পতিবার সকালে সেতুর নীচে শিশুরা চারটি মর্টার শেল দেখতে পায়। তা উদ্ধারের পর সিআইডি, বিএসএফ আধিকারিকরা গিয়ে সেগুলি পরীক্ষা করেন। মর্টারগুলি নিষ্ক্রিয় করতে সেনাবাহিনীকে খবর দেওয়া হয়। সেগুলি খালের জলে ডুবিয়ে রাখলেও রাতভর সেখানে পাহারা দেয় পুলিশ ও বিএসএফ। অবেশেষে, প্রায় ত্রিশ ঘণ্টা পর দিল্লি, কলকাতা হয়ে অনুমতি এলে দুপুরে সেনা অফিসারেরা ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ শুরু করেন। বিস্ফোরণের পরে মর্টার শেলগুলির টুকরো অংশ পুলিশ, সেনা এবং বিএসএফ জওয়ানেরা সংগ্রহ করেন। সুকনার সেনা দফতরে তা তদন্তের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন প্রাথমিক তদন্তের পরে সেনা অফিসারেরা জানান, মর্টারগুলি ভারতের তৈরি। কী ধরনের মর্টার, তা ক্যারিয়রের নম্বর থেকে স্পষ্ট হয়। তবে কোন বাহিনীর, তা বোঝা যায়নি। কারণ, মর্টার ক্যারিয়ারের ভিতরের সাঁটা নথিটি ছিড়ে ফেলা হয়েছিল। পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলির সন্দেহ, পাচারের উদ্দেশ্যেই তা খালের সেতুর নীচে জড়ো করা হয়েছিল। এলাকার বহিরাগতদের আনাগোনা সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়াও শুরু করেছে তারা। দার্জিলিং পুলিশের ডিএসপি (গ্রামীণ) প্রবীর মণ্ডল বলেন, ‘‘মর্টারগুলি কোথা থেকে এসেছিল, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’’ সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র জানান, দিল্লিতে সব জানানো হয়েছে। প্রতিটি বাহিনীর সমস্ত অস্ত্রের তথ্য লিপিবদ্ধ থাকে। কোথাও তা হারালে বা চুরি গেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে তথ্য যাবে।

বিএসএফ এবং পুলিশ সূত্রের খবর, মর্টার শেলগুলি যে দিন উদ্ধার হয়, তার আগের দিন, অর্থাৎ বুধবার এলাকায় নবিদিবস উপলক্ষে বিরাট মিছিল, খাবারের আয়োজন করা হয়েছিল। হাজার দশেক লোক তাতে অংশ নেন। দিনভর তো বটেই, সন্ধ্যার পরেও এলাকায় লোকজনের আনাগোনা ছিল। তেমনিই, উৎসবের দিন হওয়ায় খালের জলে অন্য দিনের থেকে বেশি মাছ ধরতে নেমেছিল লোকজন। সেই সুযোগেই মর্টার নিজবাজারের খালে গিয়েছিল কি না, তা দেখা শুরু হয়েছে। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার তরফে এ দিনও স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

গোয়েন্দাদের অনুমান, কোনও বস্তায় করে মর্টারগুলি এনে সেতুর নীচে রাখা হয়। সরানোর আগেই শিশুরা সেগুলো দেখতে পেয়ে যায়। স্থানীয় বাসিন্দা মহম্মদ মুর্তেজা, মহম্মদ কুরবাল আলিরা জানান, তাঁরাও চান, সঠিক তদন্ত হোক। কারা এই এলাকাকে অশান্ত করতে চাইছে তা জানা দরকার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Indian Army Siliguri Morter Shell Mahananda
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE