মারধরে আহত (বাঁ দিকে) সুনীত মণ্ডল ও (ডান দিকে) ছায়া মণ্ডল। — নিজস্ব চিত্র
বাড়ির সামনে মধ্যরাত পর্যন্ত ডিজে বাজিয়ে পিকনিক চলার প্রতিবাদ করায় এক কলেজ ছাত্রকে মারধরের অভিযোগ উঠল মদ্যপ যুবকদের বিরূদ্ধে। ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে আহত হয়েছেন তাঁর মাও। রবিবার রাতে মালদহের মানিকচক থানার নিমনগর গ্রামের ঘটনা। মারধরে আহত মা ছায়া মণ্ডল ও ছেলে সুনীত মণ্ডল চিকিৎসাধীন রয়েছেন মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে।
অভিযুক্ত মদ্যপ যুবকদের উপর পাল্টা হামলা চালানোর অভিযোগও উঠেছে প্রতিবাদী ছাত্রের পরিবারের বিরুদ্ধে। জখম হয়েছেন এক যুবকও। বুধবার দু’পক্ষই একে অপরের বিরূদ্ধে মানিকচক থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। দুই পক্ষের এক মহিলা-সহ তিনজন জখম হয়েছে। মালদহের পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ বলেন, ‘‘দু’পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা হয়েছে। তদন্ত চলছে।’’
মানিকচক থানার মথুরাপুর পঞ্চায়েতের নিমনগর গ্রামে ডিজে বাজিয়ে পিকনিক করছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা উৎপল মণ্ডল-সহ বেশ কয়েকজন যুবক। এর জেরে অতিষ্ট হয়ে পড়েন পড়শি ছায়া মণ্ডলের পরিবার। ছায়াদেবীর স্বামী উমেশ মণ্ডলের গ্রামেই একটি ছোট চায়ের দোকান রয়েছে। তাঁদের তিন ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। তাঁর ছোট ছেলে সুনীত রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে দূরশিক্ষায় স্নাতকোত্তর পড়ছেন। রাত পর্যন্ত ডিজে বাজানোর প্রতিবাদ করতে গেলে সুনীতকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে উৎপল মণ্ডল-সহ বাকিরা মারধর করে বলে অভিযোগ। ছুরি দিয়ে সুনীতের বাম হাতে আঘাতও করা হয়। চিৎকার শুনে তাঁর মা ছায়া দেবী ঘটনাস্থলে গেলে তাঁকেও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। এই নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বাঁশ, লাঠি নিয়ে সংঘর্ষও শুরু হয়ে যায়। ঘটনায় আহত হয় উৎপলও। স্থানীয় বাসিন্দারা তিনজনকেই উদ্ধার করে নিয়ে যান মানিকচক গ্রামীণ হাসপাতালে। মঙ্গলবার সকালে সুনীত ও তাঁর মাকে স্থানান্তরিত করা হয় মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। সুনীতের অভিযোগ, রাত ১২টা পর্যন্ত ডিজে বাজানোয় তাঁর পড়াশোনার অসুবিধে হচ্ছিল। তিনি বলেন, ‘‘ওরা আমার উপরে চড়াও হয়। মাকেও মারধর করে। বাড়িতে ভাঙচুরের চেষ্টা করে।’’ অভিযোগ অস্বীকার করে সুনীতদের উপর পাল্টা দায় চাপিয়েছেন উৎপলের বাবা অর্জুন মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘‘আমার ছেলেরা পিকনিক করছিল। সেই সময় সুনীত মদ খেয়ে গালিগালাজ করছিল।’’ প্রতিবাদ করতে গেলে উৎপলকে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয় বলে তাঁর অভিযোগ। পঞ্চায়েত সদস্য সিপিএমের সীতেশ মণ্ডল বলেন, ‘‘পিকনিক করা নিয়ে গোলমাল হয়েছে। পুলিশকে ঘটনাটি খতিয়ে দেখে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy