Advertisement
E-Paper

‘হাউস ফর অল’ প্রকল্পে বড় দুর্নীতি, পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অভিযোগ ‘দিদিকে বলো’য়

অভিযোগে বলা হয়েছে, ‘হাউস ফর অল’ প্রকল্পে ঘরপিছু ২০ হাজার টাকা করে তুলেছেন চেয়ারম্যান ও তাঁর ঘনিষ্ঠরা।

সঞ্জীব সরকার ও নমিতেশ ঘোষ

শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০২০ ০২:০৫
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

খোদ পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে বড়সড় আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠল তুফানগঞ্জের পুরপ্রধান অনন্ত বর্মার বিরুদ্ধে। অভিযোগ, ‘হাউস ফর অল’ প্রকল্পে সুবিধাপ্রাপক এবং ঠিকাদারদের কাছ থেকে প্রায় দেড় কোটি টাকার ‘কাটমানি’ নিয়েছেন তৃণমল পুরপ্রধান ও তাঁর সঙ্গীরা। স্থানীয় রাজনৈতিক সূত্রের খবর, দলেরই একটি অংশ ‘দিদিকে বলো’য় সম্প্রতি লিখিত অভিযোগ করেছেন পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে।

অভিযোগে বলা হয়েছে, ‘হাউস ফর অল’ প্রকল্পে ঘরপিছু ২০ হাজার টাকা করে তুলেছেন চেয়ারম্যান ও তাঁর ঘনিষ্ঠরা। তার একটি অংশ নেওয়া হয়েছে সুবিধাপ্রাপকদের কাছ থেকে। বাকিটা ঠিকাদারের কাছ থেকে। অভিযোগ, ওই কারণেই প্রকল্পে তৈরি আবাসন অল্প সময়ের মধ্যে বেহাল হয়ে পড়েছে। কিছুদিন আগে বিরোধী দলগুলির নেতৃত্বে একদল সুবিধাপ্রাপকও এমন অভিযোগ তুলেছিলেন।

পুরভোটের মুখে ঠিক এমন অভিযোগ নিয়ে শোরগোল পড়েছে তৃণমূলের অন্দরেই। ওই বিষয়ে প্রকাশ্যে অবশ্য কেউই কিছু বলতে চাননি। অভিযুক্ত পুরপ্রধান অনন্ত দাবি করেন, সবটাই নিয়ম মেনে হয়েছে। তিনি বলেন, “নিয়ম মেনে সরাসরি টাকা বেনিফেসিয়ারিদের দেওয়া হয়েছে। ঠিকাদার পুরসভা নিয়োগ করেনি। তাই টাকা নেওয়ার অভিযোগ একটি চক্রান্ত।”

তিনি এ-কথা বললেও অভিযোগ, ঠিকাদার নিয়োগ করেই কাজ হয়েছে। পুরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সুকান্তপল্লির বাসিন্দা দীপালি দেবনাথ ওই প্রকল্পে ঘর পেয়েছেন। তাঁর ছেলে মিঠু জানান, ঠিকাদার নিয়োগ করে তাঁদের ঘর তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “ছাদ ঢালাইয়ের এক সপ্তাহের মধ্যেই ছাদ চুঁইয়ে জল পড়তে শুরু করে। পুরসভায় লিখিত অভিযোগ জানালে ঠিকাদারকে ছাদ ভেঙে ফেলার কথা জানান পুরপ্রধান। পরে ঠিকাদার আমাদের ঘরের উপর ছাদ বরাবর টিনশেড লাগিয়ে দেন। সব সময় আতঙ্কে রয়েছি।” ওই ওয়ার্ডের আর এক বাসিন্দা ঘর পেয়েছেন। তিনি বলেন, “আমার কাছ থেকে আলাদা ভাবে চার হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে। এর বাইরে আর কিছু বলতে চাই না। তাহলে বিপদ হতে পারে।” আরেক সুবিধাপ্রাপক নীতিশ মণ্ডল বলেন, “ঘর যতটুকু মাপের তৈরির সরকারি নির্দেশ রয়েছে তার থেকে দুই থেকে তিন ফুট কম তৈরি করা হয়েছে।”

পুরসভার বিরোধী দলনেতা সিপিএমের প্রশান্ত পালের দাবি, সরকারি নিয়মে ওই প্রকল্পে ঘর সুবিধাপ্রাপকেরা নিজেই তৈরি করবেন। সেখানে পুরসভা ঠিকাদার দিয়ে প্রতিটি ঘর তৈরি করেছে। তাঁর দাবি, ঘর পিছু ঠিকাদারের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা করে নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “ওই টাকা তৃণমূলের তহবিলে এবং পুরপ্রধানের পকেটে গিয়েছে। একাধিক ঠিকাদার আমাদের সরাসরি জানিয়েছেন, ঘর পিছু ২০ হাজার টাকা করে তৃণমূলের নেতাদের দিতে হয়েছে। হিসেব করলে হাতানো টাকার পরিমাণ দেড় কোটি হবে।”

পুর সূত্রেই জানা গিয়েছে, ২০১৫-’১৬ ৫০৫টি ঘর তৈরি হয়েছে। ২০১৬-’১৭ মোট ৬৯৪টি আবাসন বরাদ্দ হয়েছে। ২০১৭-’১৮ মোট ২০০টি ঘর বরাদ্দ হয়েছে। ২০১৮-’১৯ সালে ওই প্রকল্পে ৪৭৮টি ঘর বরাদ্দ হয়েছে।

শহর তৃণমূলের আহ্বায়ক শিবপদ পাল বলেন, “আগে কী হয়েছে আমি বলতে পারব না। কিছু কিছু সুবিধাভোগী আর্থিক সমস্যার জন্য ঘর করতে পাচ্ছিলেন না। তারা প্রোমোটার নিয়োগ করেছিলেন নিজেরাই। এখানে তৃণমূলের কোনও বিষয় নেই। বিরোধীদের অভিযোগ ভিত্তিহীন।’’

Bribe TMC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy