উত্তর দিনাজপুর জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত বিসর্জনের কার্নিভাল শনিবার বয়কট করেছিলেন রায়গঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রবিবার বিকালে রায়গঞ্জ পুরসভায় সাংবাদিক সম্মেলন করে কৃষ্ণকে বিঁধে সরব হলেন তৃণমূল পরিচালিত পুরসভার প্রশাসক-বোর্ডের কর্তারা।
শনিবার জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শহরের সুপার মার্কেট এলাকায় কার্নিভালের অনুষ্ঠান হয়। জেলার বিভিন্ন স্তরের তৃণমূলের জনপ্রতিনিধি, জেলা পরিষদের সভাধিপতি, সদস্য ও বিধায়কদের একাংশ হাজির ছিলেন। তৃণমূলের প্রশাসক বোর্ড পরিচালিত রায়গঞ্জ পুরসভা ও প্রশাসনের চরম অবহেলার জেরে রায়গঞ্জ শহরে সাফাইয়ের কাজ ও পরিকাঠামো উন্নয়ন থমকে যাওয়ার অভিযোগ তুলে বিসর্জনের কার্নিভাল বয়কট করেন কৃষ্ণ।
এ দিন সাংবাদিক সম্মেলন করে পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারপার্সন তথা জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র সন্দীপ বিশ্বাস কৃষ্ণকে বিঁধে বলেন, “বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী কিছু দিন আগে পুরসভার সাফাইকর্মীদের খেপিয়ে আন্দোলন করিয়ে শহরে সাফাইয়ের কাজ বন্ধ করে দিয়েছিলেন। তাঁর মদতে শহরে বেআইনি নির্মাণের চেষ্টা হলেও পুরসভা রুখে দিয়েছে। বিধায়কের ঘনিষ্ঠ ঠিকাদারেরা শহরে নিয়ম মেনে রাস্তাঘাট ও নিকাশি নালা তৈরি করেননি। পুরসভা যথাযথ জায়গায় এ সবের প্রতিবাদ করার কারণে কৃষ্ণবাবু মানুষকে মিথ্যাচার ও ভুল বোঝানোর রাজনীতি করছেন।” প্রশাসক বোর্ডের ভাইস চেয়ারপার্সন তথা জেলা তৃণমূলের সহ সভাপতি অরিন্দম সরকার সাংবাদিক সম্মেলনে দাবি করেন, “বিধায়কের অন্যায় ও বেআইনি নির্দেশকে পুরসভা প্রশ্রয় দেয়নি। তাই তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে আয়োজিত কার্নিভাল বয়কট করে বিজেপিতে ফেরার রাস্তা প্রশস্ত করতেই দল ও সরকার বিরোধী কাজকর্ম করছেন বলে মনে হচ্ছে।” সন্দীপ ও অরিন্দমের নাম না করে কৃষ্ণর পাল্টা বক্তব্য, “আমি অন্যায় কাজ করি না। ওঁরা ষড়যন্ত্র বন্ধ করুক। ওঁদের কাছ থেকে আমাকে তৃণমূল ও রাজ্য সরকারের পাঠ নিতে হবে না। কে বা কারা বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন, তা দলের শীর্ষ নেতৃত্ব জানেন।”
এরই পাশপাশি, জেলা প্রশাসনের বিরুদ্ধে তাঁদের কার্নিভালে আমন্ত্রণ না জানানোর অভিযোগ তুলে সরব হলেন উত্তর দিনাজপুর জেলা পরিষদের মেন্টর আলেমা নুরি ও কো-মেন্টর অসীম ঘোষ। জেলা পরিষদের তৃণমূলের প্রাক্তন সভাধিপতি আলেমা নুরির দাবি, “সভাধিপতি আমন্ত্রিত থাকলে আমারও আমন্ত্রণ পাওয়ার কথা। আমি রাজ্যের মন্ত্রী গোলাম রব্বানিকে অভিযোগ জানিয়েছি।” তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক অসীম ঘোষ এই দিন বলেছেন, “অপমানিত বোধ করে যথাযথ জায়গায় বিষয়টি জানিয়ে দিয়েছি।” জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি আধিকারিক শুভম চক্রবর্তীর দাবি, ‘‘কার্নিভালে সবাইকেই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)