রায়গঞ্জ পুরসভার এক অস্থায়ী কর্মীকে বিবস্ত্র করে মারধর ও খুনের চেষ্টার অভিযোগে পুরসভারই এক অস্থায়ী কর্মীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। রবিবার সকালে রায়গঞ্জের সুভাষগঞ্জ এলাকার ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম কানাই চৌহান। ওই এলাকাতেই তাঁর বাড়ি। কানাইবাবু-সহ ওই ঘটনায় অভিযুক্ত পুরসভার চার অস্থায়ী কর্মী। তাঁরা কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিইউসি অনুমোদিত রায়গঞ্জ মিউনিসিপ্যাল ওয়ার্কার ইউনিয়নের সদস্য। অন্য দিকে, যে কর্মীকে বিবস্ত্র করে মারধর ও খুনের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে, তিনি আইএনটটিটিইউসি অনুমোদিত রায়গঞ্জ পুর কর্মচারী ফেডারেশনের সদস্য। ফলে ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কংগ্রেস ও তৃণমূলের চাপানউতোর সৃষ্টি হয়েছে।
পুলিশ কানাইবাবু-সহ ওই চার অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মারধর, হুমকি ও খুনের চেষ্টার অভিযোগে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করেছে। এ দিন কানাইবাবুকে রায়গঞ্জের মুখ্য বিচারবিভাগীয় আদালতে তোলা হলে বিচারক মনোদীপ দাস তাঁর জামিনের আবেদন নাকচ করে ১৪ দিনের জেল হাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
রায়গঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত আইসি দীপেন তামাঙ্গের দাবি, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। বাকি তিন অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, গত শনিবার দুপুরে রায়গঞ্জের ঠনঠনিয়া পাড়া এলাকার বাসিন্দা আকাশকুমার সাহা নামে পুরসভার ওই অস্থায়ী কর্মী বোতলবন্দি পানীয় জলের প্ল্যান্টে কাজ করছিলেন। সেই সময় কংগ্রেসের কর্মী সংগঠনে যোগ দেওয়ার হুমকি দিয়ে আকাশবাবুর সহকর্মী কানাইবাবু, শিবশঙ্কর কাহার, অর্জুন রাজভর ও বাপি পাল তাঁকে ঘেরাও করে গালিগালাজ শুরু করেন বলে অভিযোগ। আকাশবাবু প্রতিবাদ করলে অভিযুক্তরা তাঁকে টানতে টানতে প্ল্যান্টের ভিতরে নিয়ে গিয়ে বিবস্ত্র করে মারধর করে ও গলায় চাকু ঠেকিয়ে খুনের চেষ্টা করে বলেও অভিযোগ। আকাশবাবুর চিত্কারে ওই প্ল্যান্টের মহিলা কর্মীরা ছুটে এলে অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়।
ঘটনার পর আকাশবাবুর বাবা রামশঙ্কর সাহা রাত সওয়া ১০টা নাগাদ তৃণমূল নেতা ও পুর কর্মচারী ফেডারেশনের সদস্যদের একাংশর সঙ্গে রায়গঞ্জ থানায় গিয়ে ছেলের ওই চার সহকর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা দেন। রামশঙ্করবাবুর দাবি, মহিলা কর্মীদের সামনে বিবস্ত্র করে মারধর করায় অপমানে আকাশবাবু বাড়ি ফিরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরিবারের লোকেরা দেখে ফেলায় তাঁকে বাঁচানো সম্ভব হয়েছে।
ফেডারেশনের রায়গঞ্জ পুরসভা ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চক্রবর্তী ও শহরের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল সভাপতি হিমাদ্রী সরকার বলেন, ‘‘আকাশবাবু প্রায় তিন মাস আগে কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠন ছেড়ে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনে যোগ দেন। সেই আক্রোশেই ওই দিন কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠনের সদস্যরা মহিলা কর্মীদের সামনে তাঁকে বিবস্ত্র করে মারধর করে খুনের চেষ্টা করেন।’’
ইউনিয়নের রায়গঞ্জ পুরসভা ইউনিটের সভাপতি তথা উত্তর দিনাজপুর জেললা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক সন্দীপ বিশ্বাসের দাবি, ‘‘তৃণমূল রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র করে ইউনিয়নের চার সদস্যকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়েছে। আমরা আইনি ও রাজনৈতিক ভাবে মোকাবিলা করব!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy