বাড়ির ভিতরে ভাঙা টবের টুকরো, কুয়োর ঢাকনার উপরে ছোট গর্ত। তাতে জমা জলে ডেঙ্গির বাহক মশার লার্ভা ভর্তি। ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় বাড়িগুলিতে সমীক্ষা করে এমনটাই নজরে এল পতঙ্গবিদদের।
সোমবার ওই এলাকায় বেশ কিছু বাড়িতে ঢুকে এডিস মশা এবং তার লার্ভা রয়েছে কি না, খোঁজ করেন স্বাস্থ্য দফতর এবং পুরসভার দল। ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে রজনীকান্ত সেন সরণির যে বাড়িতে ডেঙ্গিতে অসুস্থ হয়ে এক মহিলার মৃত্যু হয়েছিল তাদের বাড়ি থেকেও এ দিন এডিস মশার লার্ভা মিলেছে বাড়িতে জমে থাকা জলে।
স্বাস্থ্য আধিকারিকদের একাংশের সন্দেহও কোনও এলাকায় বেশি জল জমে থাকছে। যেখান থেকে ব্যাপক হারে ডেঙ্গি মশার বংশবিস্তার ঘটছে। সেই জায়গাগুলোর হদিশ পেতে চাইছেন তাঁরা। পুরসভার তরফে স্বাস্থ্যকর্মীদের যে দল বাড়ি বাড়ি ঢুকে বাসিন্দাদের সচেতন করছেন, তাঁদের নজরে তা পড়ছে না কেন—সেই প্রশ্ন উঠেছে। এ দিন ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে উদয়ন সমিতির সামনে থেকে সচেতনতা প্রচার অভিযান করেন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব। তিনি জানান, স্বাস্থ্যকর্মীরা যে সমীক্ষা করছে, তা ঠিক মতো হচ্ছে কি না, সেটাই দেখা হচ্ছে না। বাস্তবে, বিষয়টি উপলব্ধি করে এদিন জেলা স্বাস্থ্য দফতর পুর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেন। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অসিত বিশ্বাস বলেন, ‘‘একই বাড়িতে একাধিক জনের ডেঙ্গিতে বোঝা যায়, প্রমাণ করে যে জীবাণু বাড়িতেই রয়েছে।’’ ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা সোমবার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫৪ জন।
রোগ নিয়ন্ত্রণে তাই বেশ কিছু বিষয়ের উপর জোর দিতে তৎপর জেলা স্বাস্থ্য দফতর। এ দিন ঠিক হয়েছে, যে এলাকায় ডেঙ্গি হচ্ছে, সেখানে পুরসভার চিকিৎসকরাও পুরকর্মীদের সমীক্ষক দলের সঙ্গে যাবেন। জ্বর থাকলে বাসিন্দাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেবেন। বাড়ির ভিতরে কোথাও লার্ভা জন্মাচ্ছে কি না তা চিহ্নিত করে জানাবে স্বাস্থ্য কর্মীরা। সেই মতো লার্ভা মারতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ম্যাক এলাইজা পরীক্ষায় ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে নিখিল সহানির রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু মেলেনি। স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, রবিবার প্রধাননগরের নার্সিংহোমে দেবাশিস সাহা নামে যে ব্যক্তি মারা যান ম্যাক এলাইজা পরীক্ষায় তাঁর রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু মেলেনি। যদিও র্যাপিড কার্ড টেস্টে ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছিল।