Advertisement
E-Paper

স্ত্রী-ছেলেকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ

বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের প্রতিবাদ করায় ছেলে ও স্ত্রীকে পুড়িয়ে মারায় অভিযোগ উঠলো স্বামীর বিরুদ্ধে। শনিবার রাত ১২টা নাগাদ পুরাতন মালদহের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাঁচামারির এলাকার পাল পাড়ার ঘটনা। অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় ওই মহিলা ও শিশুটিকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০১৫ ০৪:১২
Share
Save

বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের প্রতিবাদ করায় ছেলে ও স্ত্রীকে পুড়িয়ে মারায় অভিযোগ উঠলো স্বামীর বিরুদ্ধে। শনিবার রাত ১২টা নাগাদ পুরাতন মালদহের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাঁচামারির এলাকার পাল পাড়ার ঘটনা। অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় ওই মহিলা ও শিশুটিকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। রবিবার ভোর সাড়ে চারটে নাগাদ দুই জনরেই মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এদিনই মৃতার পরিবারের লোকেরা মালদহ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত স্বামী পলাতক রয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে,মৃতার নাম পার্বতী পাল(২৪)। মৃত শিশুটির নাম আকাশ পাল(৩)। এই ঘটনায় কান্নায় ভেঙে পড়েছেন মৃতদের পরিবারের লোকেরা। মালদহের পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, পরিবারের লোকেদের অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্ত ফেরার রয়েছে। তার খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।

পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, পাঁচ বছর আগে পুরাতন মালদহের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের নেতাজি পল্লি এলাকার বাসিন্দা নিবারণ পালের মেয়ে পার্বতীর সঙ্গে বিয়ে হয় ওই পুরসভার বাসিন্দা বিধান পালের। বিধান একটি গোডাউনে শ্রমিকের কাজ করেন। আর বিয়ের পর পার্বতী বাড়িতে ধূপকাঠি তৈরির কাজ করত। তাঁদের আকাশ নামে একটি তিন বছরের ছেলে রয়েছে। অভিযোগ,বছর খানেক ধরেই বিধান তাঁর স্ত্রীর উপরে অত্যাচার চালাত। এবং শ্বশুর বাড়ি থেকে বিভিন্ন জিনিস আবদার করত। আবদার পূরণ না হলে মারধর করত বলে অভিযোগ। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিধানের বাবা, মা বছর সাতেক আগেই মারা গিয়েছেন। বাড়িতে বিধান ও তার দাদা বিমান বসবাস করতেন। একই বাড়িতে বসবাস করলেও দুই ভাই পৃথক ভাবে থাকতেন। অভিযোগ, বিধান গভীর রাত পর্যন্ত বাড়ির বাইরে থাকত। রোজ মদ্যপ অবস্থায় বাড়ি ফিরত। এর প্রতিবাদ করলে মারধর করা হত বলে অভিযোগ। পরিবার সূত্রে জানা য়ায়,এদিন রাতেও স্বামী স্ত্রীর মধ্যে বচসা হয়। গভীর রাতে বাড়ির চিৎকার শুনতে পান স্থানীয় বাসিন্দা এবং পরিবারের অন্যান্য লোকেরা। তাঁরা দেখেন বাড়ির উঠানে ছেলে কোলে নিয়ে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় পার্বতীকে। মা ও ছেলেকে তড়িঘড়ি প্রথমে মৌলপুর গ্রামীণ হাসপাতাল নিয়ে যান। তবে তাঁদের অবস্থা আশঙ্কাজনক থাকায় সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকেরা স্থানান্তরিত করেন মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। পরে ভোরের দিকে মা ও ছেলে দুই জনই মারা যান। এই ঘটনায় মৃতার বাবা নিবারণবাবু মালদহ থানায় মেয়ের স্বামী বিধানের নামে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি বলেন, ‘‘এদিন আমার নাতি ও মেয়েকে নৃশংস ভাবে খুন করল জামাই।আমি ভ্যান চালিয়ে ধার দেনা করে মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলাম। মেয়ের স্বামীর অন্য মেয়ের সঙ্গে অবৈধ সর্ম্পক ছিল ।যার প্রতিবাদ করেছিল আমার মেয়ে। যার জন্য তাঁকে ও তার ছেলেকে পুড়িয়ে খুন করা হল।’’ মৃতার মা আরতী দেবী বলেন, ‘‘বছর দুয়েক আগেই নাতির মুখে ভাত দিলাম। এই ভাবে দুধের শিশুকে পুড়িয়ে মারতে একবারও কষ্ট হল না। আমি মেয়েকেও হারালাম ও নাতিকেও হারালাম। আমরা চাই পুলিশ তাঁকে ধরে শাস্তি দিক।’’ ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিজেপির নৃপেন পাল বলেন, ‘‘শুনেছি, আমার এলাকার ওই মেয়েটিকে তাঁর স্বামী অত্যাচার করত নানা কারণে। এদিন রাতে শুনতে পাই ওই মহিলা ও ছেলেটিকে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আমি পুলিশকে বলেছি যাতে অভিযুক্তকে দ্রুত গ্রেফতার করা হয়।’’ বিমান বলেন, ‘‘স্বামী স্ত্রীর মধ্যে কি হয়েছিল আমরা বলতে পারব না। রাতের বেলা আমরা চিৎকার শুনতে পেয়ে ঘর থেকে বের হয়ে অগ্নিদ্বগ্ধ অবস্থায় ভাই এর স্ত্রী ও ছেলেকে দেখতে পাই।আমরাই হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করি।’’

Malda Pal Para Bidhan Pal Prasun Bandyopadhyay Malda Medical College police

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}