Advertisement
E-Paper

অপ্রশস্ত রাস্তায় যানজটে দুর্ভোগ কালজানিতে পিচ পড়েছে অর্ধেক, চেহারা ফেরেনি সড়কের

শহরকে যানজট মুক্ত করতে বাম আমলে রাস্তা চওড়া করার পরিকল্পনা হয়। আড়াই কিলোমিটার রাস্তার অর্ধেক কাজ শেষও হয়ে যায়। ব্যস। তার পর বাম জমানার অবসান হয়েছে। এক বছর হতে চলল জেলা ভাগ হয়ে আলিপুরদুয়ারকে পৃথক জেলা হিসেবে ঘোষণা করে গিয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। জেলায় মানুষজনের আনাগোনা ক্রমশ বেড়েছে আগের তুলনায় কয়েক গুণ। কিন্তু রাস্তা যে অর্ধ সমাপ্ত অবস্থায় খাপছাড়া ভাবে পড়েছিল, তার কোনও বদল ঘটেনি।

নিলয় দাস

শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০১৫ ০২:৩৭

শহরকে যানজট মুক্ত করতে বাম আমলে রাস্তা চওড়া করার পরিকল্পনা হয়। আড়াই কিলোমিটার রাস্তার অর্ধেক কাজ শেষও হয়ে যায়। ব্যস। তার পর বাম জমানার অবসান হয়েছে। এক বছর হতে চলল জেলা ভাগ হয়ে আলিপুরদুয়ারকে পৃথক জেলা হিসেবে ঘোষণা করে গিয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। জেলায় মানুষজনের আনাগোনা ক্রমশ বেড়েছে আগের তুলনায় কয়েক গুণ। কিন্তু রাস্তা যে অর্ধ সমাপ্ত অবস্থায় খাপছাড়া ভাবে পড়েছিল, তার কোনও বদল ঘটেনি।

শহরে ঢোকার অন্যতম মূল পথ কালজানি নদীর সেতু থেকে চৌপথী পর্যন্ত রাস্তা এতটাই অপ্রশস্ত যে, শহরের ওই পথে যানজট আজ বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ছোটখাটো দুর্ঘটনা রোজকার সমস্যা। তার উপর জেলার বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে রেফার হওয়া মুমূর্ষু রোগীদের জেলা হাসপাতালে নিয়ে যেতে গিয়ে প্রতি নিয়ত প্রবল যানজটের মুখে পড়ে দীর্ঘ ক্ষণ রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে অ্যাম্বুলেন্সগুলিকে। এমনকী শহরের বাইরে অগ্নি কাণ্ড ঘটলে দমকলের ইঞ্জিনকে বেশ কয়েক বার যানজটে আটকে থাকতে হয়েছে। আজকের পরিস্থিতিতে দ্রুত ওই রাস্তা চওড়া ও সংস্কারের কাজ শুরু না হলে সমস্যা চরম পর্যায়ে পৌঁছবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ী থেকে সাধারণ মানুষজন।

বেশ কয়েক বছর আগে বিনা শর্তে ব্যবসায়ীদের একটি বড় অংশ রাস্তার জন্য জায়গা ছেড়ে দেওয়ার কথা লিখিত ভাবে পূর্ত দফতরকে জানালেও কেন কাজ থমকে রয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন সকলেরই। পূর্ত দফতরের কর্তারা অবশ্য বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন। দ্রুত রাস্তা চওড়া করার কাজ শুরু হবে বলে আশা করছেন পূর্ত দফতরের নির্বাহী বাস্তুকার সুব্রত সরকার। তাঁর কথায়, ‘‘শামুকতলা থেকে সোনাপুর পর্যন্ত যে রাস্তা রয়েছে, তার অর্ধেক অংশের দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে পূর্ত দফতরের অন্য বিভাগ।’’ শহরের যে অংশে মূল যানজট হয়, তার দুই অংশ দুই বিভাগের মধ্যে ভাগ হয়ে যাওয়ায় এই সমস্যা বলে পূর্ত কর্তারা মনে করছেন। পূর্ত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৯ সালে শোভাগঞ্জ থেকে কালজানি সেতু পর্যন্ত আড়াই কিলোমিটার রাস্তা ৭২ ফুট চওড়া করে সংস্কার করার জন্য সাত কোটি টাকা বরাদ্দ হয়। পরের বছর শোভাগঞ্জ থেকে রাস্তা চওড়া করার কাজ শুরু হয়। ২০১৩ সালে চৌপথী পর্যন্ত রাস্তা চওড়া হয়ে কাজ অসমাপ্ত অবস্থায় থমকে যায়।

এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, শহরে ঢোকার মুখে লেভেল ক্রসিং। সারা দিনে কয়েক দফা ট্রেন চলাচলের জন্য গেট বন্ধ হয়ে যায়। ২৪ ফুট চওড়া ওই রাস্তায় কয়েকশো গাড়ি লেভেল ক্রসিং-এ আটকে থাকে। রাস্তার দু’ধারে কিছু ব্যবসায়ী দোকানের সামনে ট্রাক দাঁড় করিয়ে মালপত্র ওঠানো নামানোর কাজ করেন। এক কিলোমিটার রাস্তা পেরোতে আধ ঘণ্টা সময় চলে যায়। ফুটপাথহীন সড়কে রীতি মতো প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে চলাফেরা করতে হয় সকলকে।

আলিপুরদুয়ার চেম্বার অব কমার্সের সচিব প্রসেনজিৎ দে ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ‘‘আমরা চাই শহরে ঢোকার ওই মূল রাস্তাটি যানজট মুক্ত থাকুক। সে জন্য ব্যবসায়ীরা বিনা শর্তে জায়গা ছাড়তে আপত্তি নেই বলে জানিয়েও দেন। তবুও কেন কাজ থমকে, তা বুঝতে পারছি না।’’ আলিপুরদুয়ারের অভিভাবক মঞ্চের সম্পাদক ল্যারি বসুর কথায়, ‘‘জেলা শহরে এই ধরনের যানজটের সমস্যা মানা যায় না। পথ চলতি মানুষকে প্রাণ হাতে নিয়ে চলাফেরা করতে হচ্ছে। বহু আবেদন নিবেদন করা হয়েছে অসমাপ্ত কাজ শেষ করার জন্য। তবু কেন কাজ শুরু হচ্ছে না, তা বুঝতে পারছি না।’’

রাস্তা চওড়া করার দাবিতে খুব দ্রুত আন্দোলনে নামার হুমকি দিয়েছে সিপিএম। দলের আলিপুরদুয়ার জোনাল সম্পাদক শিবনাথ সেনগুপ্তের কথায়, ‘‘বাম আমলে টাকা বরাদ্দ হয়েছিল রাস্তাটির জন্য। কেন আজ থমকে তা বুঝতে পারছি না। লেভেল ক্রসিং-এ ফ্লাইওভার নির্মাণের দাবি রয়েছে। জেলা শহরে ঢুকতে হলে লোকজনকে ওই প্রবল যানজটের সম্মুখীন হতে হয়। আমরা এ নিয়ে দ্রুত আন্দোলনে নামব।’’

alipurduar kaljani road niloy das kaljani river kaljani choupathi kaljani traffic jam
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy