কোটি টাকা আয় করে স্বয়ম্ভর হল উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের জলপাইগুড়ি ডিপো। কেন্দ্রীয় প্রকল্পে পাওয়া বাসের সৌজন্যে বছরখানেক ধরেই ডিপোর আয় বাড়ছে। গত ডিসেম্বর থেকে জলপাইগুড়ি ডিপোর আয় কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। ডিসেম্বর এবং জানুয়ারি পরপর দু’মাসেই কোটি টাকার বেশি আয় করেছে ডিপো। খরচ বাদ দিয়েও লাখ দশেক টাকা হাতে থাকছে।
বছর দুয়েক আগেও জলপাইগুড়ি ডিপোতে টিকিট বিক্রি বাবদ মাসে গড়পড়তা ৪০ হাজার টাকা আয় হতো। কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়া জওহরলাল নেহরু নগরায়ণ প্রকল্পের বাস চলাচল শুরু হওয়ার পরে আয় একলাফে বেড়ে ৮০ থেকে ৯০ লক্ষে পৌঁছে যায়। গত ডিসেম্বরে নিগমের আয় হয়েছে ১ কোটি ৫ হাজার টাকা এবং জানুয়ারিতে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১ কোটি ৭ লক্ষ টাকা। ডিপোর কর্মীদের বেতন সহ অন্যান্য খরচ বাদ দিয়ে হাতে রয়েছে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা। গত বৃহস্পতিবার নিগমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সুবলচন্দ্র রায় জলপাইগুড়ি ডিপোতে গিয়েছিলেন। কী ভাবে আয় আরও বাড়ানো যায় তা নিয়ে আলোচনা করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘‘এটা একটা সাফল্য তো বটেই। সব কর্মী-আধিকারিকদের সহযোগিতাতেই এটা সম্ভব হয়েছে। শিলিগুড়ি বা জলপাইগুড়ি ডিপোতে আয় বাড়ানোর আরও সম্ভাবনা রয়েছে।’’
দীর্ঘ দিন ধরেই ভর্তুকিতে চলছে নিগম। এখনও মাসিক ভর্তুকির পরিমাণ প্রায় ২০ কোটি টাকা। ২০১৪ সাল থেকে কেন্দ্রীয় প্রকল্পে বাস হাতে আসার পর থেকে আয় বাড়তে থাকে নিগমের। কমতে থাকে ভর্তুকির পরিমাণ। আয় বৃদ্ধির লক্ষ্যে রাজ্য সরকারও নতুন বাস দেয় নিগমকে। জলপাইগুড়ি ডিপোর হাতে এখন ৬৪টি বাস রয়েছে। তার মধ্যে ৩২টি বাস কেন্দ্রীয় প্রকল্পে পাওয়া লো-ফ্লোর আধুনিক ঝকঝকে বাস। বাকি বাসগুলির মধ্যে যেগুলি লড়ঝড়ে সেগুলি বদলে দেওয়া হয়েছে। নিগম সূত্রে খবর, জলপাইগুড়ি ডিপোতে এখন যতগুলি পুরনো বাস রয়েছে তার মধ্যে কোনটিই সাত বছরের পুরনো নয়। ডিপোর এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘নতুন বাস এবং প্রতিটি রুটে সময় মেনে তা চালানোর কারণেই যাত্রী সংখ্যা বেড়েছে। তাতেই আয় বেড়েছে।’’
জলপাইগুড়ি থেকে শিলিগুড়ি, মালবাজার, হলদিবাড়ি এবং চাউলহাটি এই চারটি রুটে কেন্দ্রীয় প্রকল্পে পাওয়া বাস চলে। শুধুমাত্র জলপাইগুড়ি-শিলিগুড়ি রুট থেকেই মাসে গড়ে ৩০ লক্ষ টাকা আয় হচ্ছে। কেন্দ্রীয় প্রকল্পের বাস এবং রাজ্যের নতুন বাস চলছে বছর দুয়েক ধরে। তবে হঠাৎ গত দু’মাসে আয় বাড়ল কেন?
শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি রুটে প্রতি ১০ মিনিট অন্তর বাস চলে। ধারাবাহিক ভাবে এই ব্যবস্থা চলার ফলে যাত্রীদের সরকারি বাসের উপর আস্থা বেড়েছে বলে নিগমের দাবি। অন্যান্য রুটেও একই ভাবে যাত্রীদের আস্থা অর্জনেই আয় বাড়ছে বলে দাবি। তবে সংস্থার কর্মীদের একাংশ মনে করছে প্রতিটি বাসে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা, প্রতিদিন তেল ও টিকিটের হিসেব দাখিল করার ব্যবস্থা এবং কোনও বার তেল বেশি লাগলে কেন লাগল তার লিখিত জবাব দেওয়ার নির্দেশেই আর্থিক অপচয় কমেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy