Advertisement
E-Paper

পরেশের কাঁধে নতুন দায়িত্ব

রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশে তৃণমূলের কোর কমিটির মিটিং-এ পরেশবাবুকে মেখলিগঞ্জ জেলার সঙ্গে শহর-ব্লকের সভাপতির দায়িত্বও দেওয়া হয়েছে, যা রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, এর আগে  তৃণমূলের মেখলিগঞ্জ শহর ও শহর-ব্লকের জন্য সবসময় আলাদা আলাদা সভাপতি ছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৭:২০
পরেশচন্দ্র অধিকারী

পরেশচন্দ্র অধিকারী

মেখলিগঞ্জে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব থামাতে সদ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়া পরেশচন্দ্র অধিকারীকে জেলা সহ-সভাপতির পাশাপাশি মেখলিগঞ্জ শহরের দায়িত্বও দেওয়া হয়েছে। রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশে তৃণমূলের কোর কমিটির মিটিং-এ পরেশবাবুকে মেখলিগঞ্জ জেলার সঙ্গে শহর-ব্লকের সভাপতির দায়িত্বও দেওয়া হয়েছে, যা রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, এর আগে তৃণমূলের মেখলিগঞ্জ শহর ও শহর-ব্লকের জন্য সবসময় আলাদা আলাদা সভাপতি ছিল।

কেন পরেশবাবু হাতে দুটো দায়িত্ব দেওয়া হল? রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, তৃনমূল রাজ্যে ক্ষমতায় আসার আগেও মেখলিগঞ্জ ব্লকের সভাপতি পদ নিয়ে সুনীল রায় ও লক্ষ্মীকান্ত সরকারের লড়াই চরম আকার ধারণ করেছিল। এর পর লক্ষ্মীকান্ত সরকার ব্লক সভাপতি থাকাকালীন, তাঁর সঙ্গে বিধায়ক অর্ঘ্য রায় প্রধান ও উদয় রায়ের ঠান্ডা লড়াই ছিলই। সেই লড়াই এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে, লক্ষ্মীবাবু ব্লক সভাপতির পদ হারান। তৃণমূলের নতুন ব্লক সভাপতি হন তপনকুমার দাম। তখন শুরু হয় লক্ষ্মীকান্ত সরকার ও তপন দামের মধ্যে দ্বন্দ্ব। সেই লড়াইও বেশ জোরদার আকার ধারণ করে গত বছর কালীপুজোর রাতে। ওই দিন চ্যাংরাবান্ধা এলাকায় একটি কালীপুজো উদ্বোধন করতে আসেন তৃণমূলের জলপাইগুড়ির সাংসদ বিজয়চন্দ্র বর্মণ। সাংসদের সামনেই তপন দাম ও লক্ষ্মীকান্ত সরকারের অনুগামীদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। যাতে ছুরিকাহত হন লক্ষ্মীকান্ত সরকার নিজে। ওই ঘটনায় তপন দাম গ্রেফতার হন এবং জেল হেফাজতে থাকেন কিছুদিন।

পঞ্চায়েত ভোটের আগে সভাপতিহীন মেখলিগঞ্জ ব্লকে কাজকর্ম দেখাশোনার জন্য একটি কমিটি তৈরি হয়। কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়েছিল লক্ষ্মীকান্ত সরকার ও উদয় রায়কে।

এত গেল শহর-ব্লকের দ্বন্দ্ব। একইভাবে তৃণমূলের মেখলিগঞ্জ শহর সভাপতির পদও বিভিন্ন সময় বিভিন্ন নেতা দাবি করে এসেছেন। যেমন, পরেশবাবু দায়িত্ব পাওয়ার আগেই তৃণমূলের মেখলিগঞ্জ শহর সভাপতি হিসেবে নিজেকে দাবি করেন গোপালপ্রসাদ সাহা ও গৌতম সিংহ। গোপালবাবুর দাবি ছিল জেলা সভাপতি তাঁকে শহর সভাপতির দায়িত্ব দিয়েছেন। অন্য দিকে, গৌতমবাবু জানিয়েছেন রাজ্য সভাপতি ওই তাঁকে দায়িত্ব দিয়েছেন। এই পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্য নেতৃত্বও বারবার মেখলিগঞ্জ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

পাশাপাশি তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকে কাজে লাগিয়ে বিরোধী দলগুলো নিজেদের জমি শক্ত করছে মেখলিগঞ্জে। ফরওয়ার্ড ব্লক ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়ে প্রকাশ্য সভায় পরেশবাবুও জানিয়ে ছিলেন, তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে মেখলিগঞ্জে পরিস্থিতি বোঝাতে বলেছিলেন, শহীদ দিবস পালনেও মেখলিগঞ্জে তৃণমূলের দু’টি মিছিল হয়। মুখ্যমন্ত্রী কড়া হাতে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বন্ধ করা হবে বলে তাঁকে জানিয়েছিলেন। তা ছাড়া মেখলিগঞ্জ যে মুখ্যমন্ত্রীর নজরে আছে তাঁর প্রমাণ, সম্প্রতি কোচবিহার জেলায় মেখলিগঞ্জের চ্যাংরাবান্ধাকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন তিনি। আর এবার দলের তরফে পরেশবাবুকে চ্যাংরাবান্ধা উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যানের পাশাপাশি দলের তরফে মেখলিগঞ্জের দায়িত্ব দেওয়ার উদ্দেশ্য, মেখলিগঞ্জে তৃণমূলের সংগঠনকে আরও মজবুত করা।

পরেশবাবু জানান, পদের ইচ্ছা তাঁর কোনও দিনই ছিল না। মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়নমূলক কাজ দেখে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন তিনি। দল যা দায়িত্ব দেবে তাই পালন করবেন। তবে, লক্ষ্মীকান্ত সরকার ও উদয় রায়কে কমটির আহ্বায়ক করা হয়েছে।

Paresh Adhikari TMC পরেশচন্দ্র অধিকারী
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy