৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেছেন আদিবাসীরা। ছবি: গৌর আচার্য।
পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ তুলে তাঁদের উপর হামলা ও জমি দখলের চেষ্টার ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে প্রায় চার ঘণ্টা ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন আদিবাসীরা।
শুক্রবার উত্তর দিনাজপুরের ইটাহারের জয়হাটে এ দিন বেলা ১২টা নাগাদ এলাকার কয়েকশো আদিবাসী তির, ধনুক, হাসুয়া, বল্লম ও লাঠিসোটা নিয়ে জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন। বিকাল চারটে নাগাদ পুলিশের লিখিত আশ্বাসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। এ দিন আদিবাসীদের পথ অবরোধের জেরে জাতীয় সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। মালদহ থেকে রায়গঞ্জ ও শিলিগুড়িগামী বিভিন্ন যাত্রীবাহী গাড়ি থেকে যাত্রীরা নেমে হেঁটে অবরোধস্থল পেরিয়ে অন্য গাড়িতে চড়ে গন্তব্যে রওনা হন। জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ ওয়াকার রেজার দাবি, ‘‘আদিবাসীদের অভিযোগ ও দাবি খতিয়ে দেখে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’
পুলিশ সূত্রের খবর, জয়হাট এলাকার এক বিঘা একটি জমিতে স্থানীয় ভবন টুডু নামে এক ব্যক্তি ও তাঁর শরিকেরা বংশপরম্পরায় গত কয়েক দশক ধরে চাষাবাদ করেন। আন্দোলনকারীদের তরফে শুক্লে বাস্কের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে তৃণমূল সমর্থক স্থানীয় একদল যুবক ভবনবাবুদের জমিটি বিক্রি করে দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করছিলেন। তাঁরা জমিটি বিক্রি করতে রাজি হননি। প্রায় দু’সপ্তাহ আগে ভবনবাবু ও তাঁর পরিবারের লোকজন ওই জমিটিতে চাষাবাদ করছিলেন। সেই সময় অভিযুক্তরা জোর করে জমিতে ঢুকে খুঁটি পুতে জমিটি দখল করার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ। ভবনবাবু ও তাঁর পরিবারের লোকজন অভিযুক্তদের বাধা দিলে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। শুক্লেবাবু বলেন, ঘটনার পর ভবনবাবু ইটাহার থানায় ১২ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন। কিন্তু পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা তো দূরে কথা, উল্টে ওই সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ভবনবাবু-সহ দুজন আদিবাসীকে গ্রেফতার করে। তাঁর দাবি, অভিযুক্তদের মধ্যে অনেকে তৃণমূলের সমর্থক হওয়ায় পুলিশ তাদের গ্রেফতার করেনি। অবিলম্বে হামলা ও জমি দখলের চেষ্টার ঘটনায় অভিযুক্তদের পুলিশ গ্রেফতার না করলে অনির্দিষ্টকালের জন্য জাতীয় সড়ক অবরোধ করা হবে বলে এদিন আদিবাসীরা পুলিশকে হুমকি দিয়েছেন। পুলিশ সুপারের অবশ্য দাবি, ‘‘পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ সঠিক নয়। পুলিশ তদন্ত করেই পদক্ষেপ করে।’’
জয়হাট এলাকার স্থানীয় জেলা পরিষদ সদস্য তথা ইটাহার ব্লক তৃণমূলের সহকারি সভাপতি মোশারফ হোসেনের দাবি, ‘‘জমি নিয়ে কোনও বিবাদকে কেন্দ্র করে দল এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে কোনও বিভেদ ও অশান্তি চায় না। দলের তরফে সমস্যা সমাধানের জন্য জেলা পুলিশ ও প্রশাসনকে উপযুক্ত পদক্ষেপ করার অনুরোধ করা হয়েছে।’’ জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা ইটাহারের বিধায়ক অমল আচার্যের দাবি, জমি দখলকে কেন্দ্র করে জয়হাট এলাকায় আদিবাসীদের সঙ্গে স্থানীয় একদল যুবকের দীর্ঘদিন ধরে বিবাদ চলছে। তিনি বলেন, ‘‘এই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই। দল কোনও বেআইনি কাজকে মদত দেয় না। আইন আইনের পথে চলবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy