E-Paper

বৌভাতের দিনও কর্তব্যে অটল বিএলও সৌম্যদীপ

ইটাহার হাই স্কুলের শিক্ষাকর্মী পদে কর্মরত থাকাকালীন বছর পাঁচেক আগে সৌম্যদীপের বাবা সুব্রত মারা হন। বছর তিনেক আগে তিনি বাবার চাকরিটা পান। সৌম্যদীপের একমাত্র বোন সুচিস্মিতার বিয়ে হয়ে গিয়েছে। এত দিন বাড়িতে সৌম্যদীপ ও তাঁর মা রিনা থাকতেন।

গৌর আচার্য 

শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০২৫ ০৮:৫৮
বৌভাতের দিন নববধূ সুতপাকে পাশে রেখে গণনাপত্র ‘ডিজিটাইজ়’ উত্তর দিনাজপুরের ইটাহারের বিএলও সৌম্যদীপ রায়ের।

বৌভাতের দিন নববধূ সুতপাকে পাশে রেখে গণনাপত্র ‘ডিজিটাইজ়’ উত্তর দিনাজপুরের ইটাহারের বিএলও সৌম্যদীপ রায়ের। ছবি: গৌর আচার্য।

বৌভাতের দিন ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন প্রক্রিয়ার গণনাপত্র ‘ডিজিটাইজ়েশন’-এর কাজ করলেন পাত্র। বুধবার উত্তর দিনাজপুর জেলার ইটাহারের পতিরাজপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের চাভোট এলাকার ঘটনা। ওই বিএলও-র নাম সৌম্যদীপ রায়। চাভোটের ৯৮ নম্বর বুথে বিএলও-র দায়িত্বপ্রাপ্ত বছর তেত্রিশের সৌম্যদীপ ইটাহারের দুর্গাপুর গার্লস হাই স্কুলে শিক্ষাকর্মীর পদে কর্মরত।

এ দিন তাঁর বৌভাতের অনুষ্ঠান ছিল। কিন্তু তার মাঝেই বাড়িতে বসে দিনভর দফায় দফায় সৌম্যদীপ স্ত্রী সুতপা মৈত্রকে পাশে রেখে অনেক গণনাপত্র মোবাইলের বিএলও অ্যাপে ‘ডিজিটাইজ়েশন’ করেন। এই ঘটনার খবর যায় ইটাহার ব্লক প্রশাসনের কাছে। ইটাহারের বিডিও দিব্যেন্দু সরকার বলেন, “বিএলও দিব্যেন্দুবাবু বৌভাতের দিনেও সরকারি দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁকে প্রশাসনের তরফে সংবর্ধনা জানানো হবে।”

ইটাহার হাই স্কুলের শিক্ষাকর্মী পদে কর্মরত থাকাকালীন বছর পাঁচেক আগে সৌম্যদীপের বাবা সুব্রত মারা হন। বছর তিনেক আগে তিনি বাবার চাকরিটা পান। সৌম্যদীপের একমাত্র বোন সুচিস্মিতার বিয়ে হয়ে গিয়েছে। এত দিন বাড়িতে সৌম্যদীপ ও তাঁর মা রিনা থাকতেন। চলতি বছরের জুনে ছেলের বিয়ে ঠিক করেন তিনি। সেই মতো, সোমবার মালদহের মঙ্গলবাড়ি এলাকার বাসিন্দা সুতপার সঙ্গে সৌম্যদীপের বিয়ে হয়। মঙ্গলবার নব বধূকে নিয়ে বাড়িতে ফেরেন তিনি। এ দিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বাড়িতে বৌভাতের বিভিন্ন আচার পালন, নিমন্ত্রিত অতিথিদের জন্য রান্নার কাজ দেখাশোনা-সহ নানা আয়োজনের মাঝে সুতপাকে পাশে রেখে মোবাইলে বিএলও অ্যাপে অনেক ভোটারের ‘ডিজিটাইজেশন’ করেন তিনি।

সৌম্যদীপ জানান, তাঁর বুথে ৭৩০ জন ভোটার রয়েছেন। তাঁর দাবি, ইতিমধ্যেই তিনি ৯২ শতাংশ পূরণ করা গণনাপত্র সংগ্রহ করেছেন। কিছু ভোটার বাইরে থাকার কারণে এখনও পর্যন্ত তাঁদের গণনাপত্র দেওয়া সম্ভব হয়নি। সৌম্যদীপ বলেন, “আমার উপরে কোনও চাপ নেই। সার্ভারের সমস্যার কারণে সবসময় বিএলও অ্যাপ খোলে না। বিয়ের জন্য দু’দিন ‘ডিজিটাইজ়েশন’-এর কাজ করতে পারিনি। আগামী ৪ ডিসেম্বর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সমস্ত এনুমারেশন ফর্ম গণনাপত্র ‘ডিজিটাইজ়েশন’-এর কাজ শেষ করতেই বৌভাতের অনুষ্ঠানের মাঝে কাজ করলাম। ওই কাজে আমার স্ত্রীও আমাকে সহযোগিতা করেছেন।” সুতপার বক্তব্য, “স্বামী এ ভাবেই যাতে সারাজীবন কর্মস্থল, সমাজ ও সংসারে কর্তব্য পালন করে যেতে পারেন, সেই প্রার্থনা করছি। আমরা পরিবারের সকলেই ওঁকে কর্তব্য পালন করতে সব রকম সহযোগিতা করব।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

North Dinajpur BLO Special Intensive Revision

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy