Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

শিশুমৃত্যুতে ভাঙচুর, দাবি গাফিলতির

মৃত শিশু রাহুল বর্মনের বয়স মাস দশেক। বাড়ি দক্ষিণ দিনাজপুরের জগতলা সুরাহারে। শুক্রবার পায়ের অস্ত্রোপচারের পরে গভীর রাতে মারা যায় ওই শিশু। এ দিন চিকিৎসকের শাস্তির দাবিতে নার্সিংহোমের কাচের দরজা, জানালা ভাঙা হয়।

ভাঙা কাচ। নিজস্ব চিত্র

ভাঙা কাচ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০২:৩১
Share: Save:

চিকিৎসায় গাফিলতির জেরে শিশুমৃত্যুর অভিযোগ। আর তাকে ঘিরে ভাঙচুর, মারপিটে উত্তাল নার্সিংহোম। শনিবার সকাল ১১টা নাগাদ কলেজপাড়ার জাতীয় সড়কের ধারে একটি নার্সিংহোমের ঘটনা।

যদিও নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ থানায় কোনও অভিযোগ করেননি। নার্সিংহোমটির অন্যতম মালিক পূর্ণেন্দু দে। তিনি উত্তর দিনাজপুর জেলা পরিষদের তৃণমূলের সহকারি সভাধিপতি। বলেন, ‘‘প্রিয়জনের মৃত্যুর পরে পরিবারের বিক্ষোভ স্বাভাবিক।’’ মানবিক কারণে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ করা হবে না। যদিও বিষয়টিকে কটাক্ষ করে বিজেপির নেতা নির্মল দাম বলেন, ‘‘চিকিৎসার গাফিলতি নিয়ে স্থানীয়দের ক্ষোভ রয়েছে। তা প্রশমিত করতেই অভিযোগ না করার এই সিদ্ধান্ত।’’

মৃত শিশু রাহুল বর্মনের বয়স মাস দশেক। বাড়ি দক্ষিণ দিনাজপুরের জগতলা সুরাহারে। শুক্রবার পায়ের অস্ত্রোপচারের পরে গভীর রাতে মারা যায় ওই শিশু। এ দিন চিকিৎসকের শাস্তির দাবিতে নার্সিংহোমের কাচের দরজা, জানালা ভাঙা হয়। নার্সিংহোমের এক কর্মী অরিজিৎ রায়কেও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। এরপরে কর্মীর পরিবার মৃতের পরিবারকে পাল্টা মারধর করেন বলে অভিযোগ। ঘটনাস্থলে গিয়ে লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে পুলিশ।

শিশুর বাবা বাঁটুল বর্মনের মুদি দোকান রয়েছে। মা লক্ষ্মী বর্মন গৃহবধূ। রাহুল তাঁদের একমাত্র সন্তান। বর্মন দম্পতি জানান, জন্মের পর থেকেই রাহুলের দু’টি পা সামান্য বাঁকা ছিল। সপ্তাহ দুয়েক আগে তাঁরা রাহুলকে ওই নার্সিংহোমের অস্থিরোগ বিশেষজ্ঞ অনিন্দ্য সরকারকে দেখান। তারপর থেকে তিনি রাহুলের পায়ে মোট চারবার প্লাস্টার করেছেন। বাঁটুলবাবু জানান, শুক্রবার চিকিৎসকের পরামর্শে রাহুলকে নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়। শুক্রবারই সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত রাহুলের দু’পায়ে অস্ত্রোপচার করেন অনিন্দ্যবাবু। রাত সওয়া ১০টা নাগাদ অপারেশনের পরেই রাহুলকে অক্সিজেন দেওয়া হয়। বাঁটুলবাবুর দাবি, ‘‘তারপর ওর আর জ্ঞান ফেরেনি। রাত সাড়ে তিনটে নাগাদ ছেলের শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে যায়।’’ তখন অনিন্দ্যবাবুর মোবাইল বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা যায়নি বলে অভিযোগ। বাঁটুলবাবু বলেন, ‘‘দীর্ঘক্ষণ পরে অন্য চিকিত্সক এসে ছেলেকে দেখে জানান ও মারা গিয়েছে।’’ রাহুলের মৃত্যুর শংসাপত্রে ‘সাডেন কার্ডিয়ার অ্যারেস্ট’-কে মৃত্যুর কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে। অস্ত্রোপচার ও চিকিত্সায় গাফিলতিতে ছেলের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ তাঁর। যদিও চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অনিন্দ্যবাবু। তাঁর দাবি, ‘‘আমি ওইদিন নার্সিংহোমে না আসলেও অন্য চিকিত্সকেরা বহু চেষ্টা করেও শিশুটিকে বাঁচাতে পারেননি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Nursing home Vandalism Raiganj Medical negligence
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE