বৃদ্ধাশ্রমে: মঞ্জু ঘোষ। নিজস্ব চিত্র
দুই মেয়ে মিলে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ। তার জেরে নিজের জন্য এখন মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকোও নেই শিলিগুড়ি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষিকা মঞ্জু ঘোষ চৌধুরীর। তাঁকে রাস্তায় ঘুরতে দেখে উদ্ধার করেন কিছু সহৃদয় ব্যক্তি। এখন শিলিগুড়ি কাছ কাওয়াখালিতে একটি বৃদ্ধাশ্রমে রয়েছেন মঞ্জুদেবী।
শনিবার গিয়ে দেখা গেল চুপ করে বসে রয়েছেন তিনি। কখনও কখনও কেঁপে উঠছেন। কখনও ভয়ে কাঁদছেন। বৃদ্ধাশ্রমে বসে শনিবার তিনি জানান, তাঁর আশঙ্কা তাঁর বড় মেয়ে মহুয়া তাঁকে মেরে ফেলতে পারে। বৃদ্ধার অভিযোগ, তাঁর পেনশনের নথি কেড়ে নিয়েছে তাঁর মেয়ে। বড় মেয়ে তাঁর চশমাও ভেঙে দিয়েছেন বলে অভিযোগ। পরিচারিকাকে দিয়ে তাঁকে মারধর করা হত বলেও অভিযোগ।
তিনি জানান, জলপাইগুড়ির পশ্চিম কংগ্রেসপাড়ায় তাঁর বাপের বাড়ি ছিল। বিয়ের পরে শিলিগুড়ির ভারতনগরে স্বামীর সঙ্গে ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। স্বামীর মৃত্যুর পরে মেয়েদের পরামর্শে হাকিমপাড়ায় ফ্ল্যাট কেনেন। মেয়েদের বিয়ে দেন। এরপরে একদিন তাঁর ছোট মেয়ে পেশায় আইনজীবী মৌসুমী ফ্ল্যাটে ঢুকতে বাধা দেয় বলে অভিযোগ। তখন এক আইনজীবীর সাহায্যে অন্য বাড়িতে থাকতে শুরু করেন বৃদ্ধা। তাঁর কথায়, ‘‘আমার বাড়ি কায়দা করে নিজেই বিক্রি করে দিয়েছে।’’ বৃদ্ধা জানান, এরপরে জলেশ্বরী এলাকায় আগে থেকে কেনা একটি খাস জমিতে বাড়ি করে থাকতেন তিনি। বাড়ি করার পরে সেখানে এসে থাকতে শুরু করেন তাঁর বড় মেয়ে। মঞ্জুদেবীর স্বামী মিলিটারি ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিস (এমইএস)-এ কাজ করতেন। তাঁর মৃত্যুর পরে পেনশনই ভরসা মঞ্জুদেবীর। অভিযোগ, ব্যাঙ্কের নথি, জলেশ্বরীর বাড়ি বড় মেয়েকে লিখে দিতে হয়েছে। বৃদ্ধার দাবি, শুক্রবার বৃদ্ধাবাসে এসে তাঁর বড় মেয়ে হুমকি দেন। বৃদ্ধাবাস কর্তৃপক্ষ কেন তাঁকে রেখেছে সেই প্রশ্ন তোলেন। যদিও ফোন করা হলে মহুয়া তাঁর মায়ের সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। আর মৌসুমী কিছু বলতে চাননি। দার্জিলিং জেলা লিগ্যাল এড ফোরামের সম্পাদক অমিত সরকার জানান, মহকুমাশাসককে অভিযোগ করা হয়েছে। বৃদ্ধা বলেন, ‘‘নথিপত্র যেন ফেরৎ পাই প্রশাসন ব্যবস্থা নিক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy