Advertisement
E-Paper

বাইসনের হানা গ্রামে মৃত এক

কিছু অতি উৎসাহী মানুষ চারদিক থেকে চিৎকার চেঁচামেচি করায় বিরক্ত হয়ে এলোপাথাড়ি ছোটাছুটি করতে শুরু করে বাইসনটি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০২০ ০৬:০৩
দুরন্ত: ঘুমপাড়ানি তিরে তখন কাবু বাইসনটি। বুধবার। নিজস্ব চিত্র

দুরন্ত: ঘুমপাড়ানি তিরে তখন কাবু বাইসনটি। বুধবার। নিজস্ব চিত্র

গরুর পালের সঙ্গে একটি বাইসন শাবক সোমবার চলে এসেছিল ধূপগুড়ি শহরে। বুধবার সকালে সেই শাবকের খোঁজেই শহরে ঢুকে পড়ল মা বাইসন। ধূপগুড়িতে সরস্বতী পুজোর সকালে তাণ্ডব চালাল বাইসনটি। এরপর টানা আট ঘণ্টার চেষ্টায় পাঁচটি ঘুমপাড়ানি গুলি চালিয়ে কাবু করা হল বাইসনটিকে। তবে তার আগে বাইসনটির হামলায় মৃত্যু হল মালতীবালা দত্ত (৫২) নামে এক মহিলার। জখম আরও ১০ জন বাসিন্দা। ধূপগুড়ি পুরসভার ১ এবং ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ঘটনা।

এ দিন সরস্বতী পুজো উপলক্ষে পাড়ার মোড়ে মোড়ে ছিল উৎসবের মেজাজ। বাইসনের হামলার খবর ছড়িয়ে পড়তেই সেটিকে দেখতে কয়েক হাজার মানুষ ভিড় জমান এক নম্বর ওয়ার্ডের কলেজপাড়া এলাকায়। কিন্তু কিছু অতি উৎসাহী মানুষ চারদিক থেকে চিৎকার চেঁচামেচি করায় বিরক্ত হয়ে এলোপাথাড়ি ছোটাছুটি করতে শুরু করে বাইসনটি। শেষে স্থানীয় একটি পানের বরজের ভিতরে আশ্রয় নিয়েছিল বাইসনটি। তখন বাইসনের সামনে পড়ে যাওয়ায় তার হামলায় জখম হন তিনজন। তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয় ধূপগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁদের স্থানান্তরিত করা হয় জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালে।

এদিকে, খবর যায় বন দফতরের কর্মীদের কাছে। বনকর্মীরা পৌঁছনোর আগেই বাইসনটি ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক পেরিয়ে ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ভাওয়ালপাড়া এলাকায় ঢুকে পড়ে। সেখানে রাস্তার মধ্যে দু’জনকে জখম করে। তাঁদেরও হাসপাতালে পাঠাতে হয়। ততক্ষণে ঘটনাস্থলে পৌঁছন বিন্নাগুড়ি রেঞ্জ, মরাঘাট রেঞ্জের বনকর্মীরা। তাঁরা পানের বরজের ভিতরে আশ্রয় নেওয়া বাইসনটিকে ঘুমপাড়ানি গুলি করার প্রস্ততি নেন। পরপর তিনটি গুলি করেও বাইসনটিকে কাবু করা সম্ভব হয়নি। বরং উৎসাহী মানুষের হই-হট্টগোলে ছোটাছুটি করতে শুরু করে সেটি।

এর পরে সেখান থেকে ১ নম্বর ওয়ার্ডে ছুটে চলে আসে বাইসনটি। সেখানেও ঘুমপাড়ানি গুলি করা হয়। বাইসনটিকে দেখতে ততক্ষণে হাজার হাজার মানুষ ভিড় জমায় ভাওয়াল পাড়ায়। তাকে কাবু করার আগেই ১১ জনকে শিং দিয়ে গুঁতো দিয়ে জখম করে। পাঁচজনকেই প্রাথমিক চিকিৎসার পর ধূপগুড়ি হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে ছ’জনকে স্থানান্তরিত করা হয় জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালে। তাদের মধ্যে মালতীবালা দত্তের মৃত্যু হয়।

এই খবর পৌঁছতেই বনকর্মীরা জালবন্দি করার চেষ্টা করে বাইসনটিকে। কিন্তু জাল ছিঁড়ে বেরিয়ে পরে সেটি। আবার ছুটোছুটি করতে শুরু করে। বিভিন্ন জায়গায় কখনও রান্নাঘরের ভিতরে, কখনও বাড়ির উঠোনে, আবার কখনও পানের বরজে দাপিয়ে বেড়ায় বাইসনটি। শেষে মোট পাঁচটি ঘুমপাড়ানি গুলিতে কাবু হয়ে পড়া বাইসনটিকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় খট্টিমারি জঙ্গলে। সেখানেই সেটিকে ছাড়া হয়। এরপরে আতঙ্ক মুক্ত হয় গোটা এলাকা।

এ দিন মানুষের ভিড় এতটাই ছিল যে তাদেরকে সামলাতে হিমশিম খেতে হয় পুলিশ ও বনকর্মীদের। ভিড় সামলাতে জলপাইগুড়ি থেকে আনা হয় র‌্যাফ। তারা এসে মানুষের ভিড় নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা শুরু করে। বাইসনের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন ধূপগুড়ি পুরসভার উপ পুরপ্রধান রাজেশকুমার সিংহ, জলপাইগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) ডেনডুপ শেরপা ও স্থানীয় কাউন্সিলর কৃষ্ণদেব রায় ।

Death Bison
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy