নামেই ‘সিঙ্গিং-বার’। বিধির তোয়াক্কা না করে শিলিগুড়ি শহরের বেশ কয়েকটি পানশালায় গানের আসরে তুমুল নাচানাচিও চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। নাচের সময়ে মাঝেমধ্যে গোলমালের ঘটনা ঘটছে। গত ৩১ ডিসেম্বর বর্ষবরণের রাতেও শিলিগুড়ির সেবক রোডের আড়াই মাইলের একটি হোটেলে নাচানাচির সময়ে এক তরুণীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ নিয়ে তুলকালাম কাণ্ড ঘটে।
পানশালা কর্তৃপক্ষ তা সামাল দিতে হিমশিম খান। রাত পর্যন্ত দফায়-দফায় গোলমাল চলে বলে অভিযোগ। শেষ পর্যন্ত পুলিশ গেলে পরিস্থিতি আয়ত্বে আসে। সম্প্রতি গানের আসরের লাইসেন্স নিয়ে নাচানাচির অভিযোগ ও সেখানে মাঝেমধ্যে মারপিটের ঘটনার বিষয়টি পুলিশ-প্রশাসনের কর্তাদের নজরে এসেছে। তাতেই বিষয়টি নিয়ে বিশদে তদন্ত শুরু হয়েছে।
তবে সিঙ্গিং বার মালিকদের সংগঠনের এক মুখপাত্র জানান, তাঁরা বিধি মেনেই ব্যবসা করলেও মাঝেমধ্যে মিথ্যে অভিযোগ তুলে স্বার্থান্বেষীরা হইচই বাঁধানোর চেষ্টা করেন। ওই সংগঠনের এক সদস্য জানান, সেবক রোডের যে ‘সিঙ্গিং বার’-এ বর্ষবরণের রাতে গোলমালের অভিযোগ উঠেছে, সেটির মালিকানা সম্প্রতি হাতবদল হওয়ার পর থেকেই নানা অভিযোগ ক্রমশ বাড়ছে। ওই পানশালার পরিচালনায় থাকা এক কর্তা জানান, গায়িকাদের সামনে নাচানাচি করায় বাধা দিলে কয়েকজনের সঙ্গে একটু গোলমাল বাঁধলেও তা মিটে যায়।
কিন্তু, অভিযোগ নিয়ে শিলিগুড়ির নানা মহলে ক্ষোভ দানা বাঁধছে দেখে পুলিশ-প্রশাসন নড়েচড়ে বসতে বাধ্য হয়েছে। সরকারি সূত্রের খবর, পুলিশ ও আবগারি দফতরের পক্ষ থেকে ৩১ ডিসেম্বরের সন্ধ্যা থেকে ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রতিটি ‘সিঙ্গিং-বার’-এর সিসি টিভি ফুটেজ চাওয়া হয়েছে।
শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার চেলিং সিমিক লেপচা বলেন, ‘‘অত্যন্ত উদ্বেগজনক অভিযোগ। কোনও পানশালায় বিধিভঙ্গ হলেই কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেবক রোডের হোটেলে বর্ষবরণের রাতে গোলমালের অভিযোগও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিধিভঙ্গ হয়েছে প্রমাণ হলে আইনি পদক্ষেপ করা হবে।’’
আবগারি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘ডিস্কো’ চালানোর লাইসেন্স পেলে সেখানে নাচানাচি হতেই পারে। কিন্তু, কোথাও ‘সিঙ্গিং-বার’ হিসেবে অনুমোদন দেওয়া হলে সেখানে গায়ক-গায়িকারাই শুধু নির্দিষ্ট মঞ্চে ‘লাইভ পারফরম্যান্স’ করতে পারবেন।
সেখানে গানের সুরে কিছুটা শরীর সঞ্চালনও হতে পারে বলে আবগারি দফতরের এক কর্তা জানান। তা বলে সেই মঞ্চে নর্তকীদের মতো নাচানাচি করা কিংবা সামনে দর্শক, পানশালার খদ্দেররা অংশ নিতে পারবেন না। অথচ, শিলিগুড়ির বেশ কয়েকটি পানশালায় রাত গভীর হলেই বিধি ভেঙে বেদম নাচানাচি শুরু হচ্ছে বলে অভিযোগ পৌঁছেছে আবগারি দফতরেও। সেখানে মদ খেয়ে কারও কারও আচরণ শ্লীলতার সীমা ছাড়িয়ে যায় বলেও অভিযোগ। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, জেলাশাসকের কাছেও অভিযোগ পৌঁছেছে। সূত্রের খবর, জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তবও বর্ষবরণের সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কোন সিঙ্গিং-বার-এ কী হয়েছে, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত হতে ভিডিও ফুটেজ যাচাইয়ের নির্দেশ দিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy