E-Paper

পর্যটন কর বসানোর এক্তিয়ারে বিরোধী-প্রশ্ন

পুরসভা সূত্রের খবর, গত রবিবার দার্জিলিং পুরসভার পর্যটন করের সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। পুর এলাকার ৩২টি ওয়ার্ডে নিয়ম কার্যকর করার কথা ছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০২৩ ০৬:৫১
দার্জিলিং পুরসভা।

দার্জিলিং পুরসভা। —ফাইল চিত্র।

দার্জিলিং পুরসভার কর বসানোর এক্তিয়ার নিয়ে এ বার প্রশ্ন তুললেন বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা ও হামরো পার্টির সভাপতি অজয় এডওয়ার্ড। পুর আইন অনুসারে, পরিষেবা দেওয়ার জন্য নিয়ম মেনে পুরসভা ‘ফি’ নিতে পারে। কিন্তু পুরসভা নতুন কর এ ভাবে বসাতে পারে না। সে জন্য পুরসভার বোর্ড মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজ্য সরকার, মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের প্রয়োজন হয়। দার্জিলিঙের ক্ষেত্রে কোনওটাই মানা হয়নি বলে দাবি করে দুই নেতার অভিযোগ, সরকারি অনুমোদন ছাড়া এটা টাকা লুটের পকিকল্পনা ছাড়া কিছু নয়। পুরসভা জবরদস্তি করে নিজেরাই আইনের ফাঁকে পড়বে বলে তাঁরা জানিয়েছেন।

সাংসদ রাজু বিস্তা বলেন, ‘‘দার্জিলিং পুরসভা শাসক দল চালাচ্ছে। রাজ্যেও তাদের সহযোগী রয়েছে। বেআইনি ভাবে কর নেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল। পুর আইনে ফি রয়েছে। কর বসাতে আইনি প্রক্রিয়া রয়েছে।’’ তিনি জানান, বেসরকারি সংস্থার হাতে টাকা তোলার টেন্ডার দেওয়া হয়েছে। সেখানে ২৮-৩০ লক্ষ টাকা বছরে আদায়ের কথা বলা হচ্ছে। অথচ, সবাই জানেন, পাহাড়ের পর্যটন মরসুমে সাত-আট লক্ষ মানুষ প্রতি বছর আসে। সে হিসাবে আদায় এক কোটি থেকে দেড় কোটির কাছাকাছি থাকার কথা। সাংসদের বক্তব্য, ‘‘পুরোটাই সন্দেহজনক বলে মনে হচ্ছে। সরকারি কোষাগারে কিছু টাকা জমা করে বাকিটা লুটের পরিকল্পনা। কাটমানি, সরকারি টাকা নয়ছয়ের চেষ্টা আটকানো হবে।’’

পুরসভা সূত্রের খবর, গত রবিবার দার্জিলিং পুরসভার পর্যটন করের সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। পুর এলাকার ৩২টি ওয়ার্ডে নিয়ম কার্যকর করার কথা ছিল। প্রত্যেক পর্যটক দার্জিলিংয়ে ঢোকার পর হোটেল, লজ, রিসর্টে থাকলে ২০ টাকা জনপ্রতি একবারই ধার্য করার কথা ছিল। কেউ একদিন থাকলে ২০ টাকা দিতে হবে, এক মাস থাকলেও ২০ টাকা দেওয়ার কথা। টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কর সংগ্রহের এজেন্সিও নিয়োগ হয়েছে। যা নিয়ে হোটেল, লজ মলিকেরা আপত্তির কথা জানান।

তাঁদের আপত্তির কারণ, কর চালুর আগে সম্প্রতি আলোচনা করা হয়নি। তা ছাড়া, পর্যটকদের থেকে হোটেলে কর নিয়ে তা জমা করা নিয়ে আপত্তি তোলা হয়েছে। কোভিড সময়ের বিপুল ক্ষতির পর নতুন করে পর্যটনে কোনও বোঝা না বসানোর পক্ষেই বলা হয়। বিজেপি, হামরো পার্টি বিভিন্ন দলের তরফেও পুরসভার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে।

শেষে, মঙ্গলবার ‘গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (জিটিএ)-এর প্রধান অনীত থাপা বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করে পর্যটন কর স্থগিত করেন। বিজেপি, হামরো পার্টির বক্তব্য, পুর আইনের ৯৪-এ ধারায় নতুন ফি নেওয়া যায়। কর একেবারেই নয়। সেখানে পর্যটন ফি জনপ্রতি তিন টাকা বা পরিবহণ ফি গাড়িপ্রতি ৫০ টাকার বেশি করা যায় না। হামরো পার্টির সভাপতি তথা জিটিএ সদস্য অজয় বলেন, ‘‘পুরসভার সিদ্ধান্ত বোর্ড অফ কাউন্সিলরেরা নেন। এটা কোথাও পাশ হয়েছে বলে, জানি না। পর্যটন পরিষেবার নামে টাকা তোলার পরিকল্পনা বলে আমাদের মনে হচ্ছে।’’

এ সব নিয়ে দার্জিলিঙের পুরপ্রধান দীপেন্দ্র ঠাকুরির বক্তব্য, ‘‘আইন মেনেই সব হয়েছে। আগামী দিনেও তা হবে।’’ আর জিটিএ প্রধান অনীত থাপা বলেছেন, ‘‘সমস্ত দিক খতিয়ে দেখেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Darjeeling

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy