Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

জ্বরে আক্রান্তের মৃত্যুতে উদ্বেগ

কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার রাজীব প্রসাদ বলেন, “জ্বরের সঙ্গে ওই ব্যক্তির উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিসের সমস্যাও ছিল।”

সংগ্রহ করা হবে শুয়োরের রক্তের নমুনাও। নিজস্ব চিত্র

সংগ্রহ করা হবে শুয়োরের রক্তের নমুনাও। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৯ ০৪:৪৯
Share: Save:

জ্বর নিয়ে চিকিৎসাধীন আরও একজনের মৃত্যু হল কোচবিহারের হাসপাতালে। বুধবার ভোরে কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়।

হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের নাম বিনোদ বর্মণ (৬৫)। তাঁর বাড়ি তুফানগঞ্জ মহকুমার বারকোদালি এলাকায়। তাঁর জ্বর, খিঁচুনির সমস্যার পাশাপাশি ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ জনিত সমস্যাও ছিল। প্রাথমিকভাবে চিকিৎসকদের অনুমান, অ্যাকিউট এনসেফ্যালাইটিস সিনড্রমে (এইএস) আক্রান্ত হয়ে ওই ব্যাক্তির মৃত্যু হয়েছে। রবিবারই তুফানগঞ্জ মহকুমা হাসপাতালে রসিকবিল এলাকার বাসিন্দা মিঠুন ওঁরাও নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়। তিনি মিজোরাম থেকে জ্বর নিয়ে ফিরেছিলেন। ‘ম্যালিগন্যান্ট ম্যালেরিয়া’য় আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু বলে অনুমান করছেন চিকিৎসকরা। ওই ঘটনা নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে এইএসে আক্রান্ত হয়ে মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন রোগী মৃত্যুতে চিন্তা বেড়েছে স্বাস্থ্য-প্রশাসনের।

কোচবিহারের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুমিত গঙ্গোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, “কর্তৃপক্ষের রিপোর্ট না দেখে কিছু বলা যাবেনা।” কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার রাজীব প্রসাদ বলেন, “জ্বরের সঙ্গে ওই ব্যক্তির উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিসের সমস্যাও ছিল।”

হাসপাতাল সূত্রের খবর, গত ১৩ জুলাই ওই ব্যক্তিকে পরিবারের লোকেরা কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যাতেও তিনি কাবু ছিলেন। তার জেরে তাঁর ‘সিএসএফ’ বা ‘সেরিব্রো স্পাইনাল ফ্লুইড’ পরীক্ষা সম্ভব হয়নি। সাধারণভাবে ওই রিপোর্ট ছাড়া জাপানি এনসেফ্যালাইটিস (জেই) নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব হয় না। তবে ওই রোগীর জ্বর ও অন্য লক্ষ্মণ দেখে তিনি এইএসে আক্রান্ত বলে অনুমান করা হচ্ছে। এক স্বাস্থ্যকর্তার দাবি, মৃতের সিরাম পরীক্ষা রিপোর্টে ওই ইঙ্গিত মিলেছে।

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এ নিয়ে চলতি বছরে এইএসে জেলায় তিন জনের মৃত্যু হল। আগে গত এপ্রিল ও ফেব্রুয়ারিতে কোচবিহার ১ ও তুফানগঞ্জ ১ ব্লকে একজন করে বাসিন্দার মৃত্যু হয়। এ ছাড়াও চলতি বছরে জাপানি এনসেফ্যালাইটিসে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। সব মিলিয়ে বর্ষার মুখে এইএসে প্রথম মৃত্যুতে চিন্তা বেড়েছে। কোচবিহারের উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শ্যামল সোরেন জানিয়েছেন, মশারি টাঙিয়ে ঘুমনো, বাড়িতে জল জমতে wwwনা দেওয়া, এলাকা পরিচ্ছন্ন রাখার মতো বিভিন্ন ব্যাপারে সচেতনতা বাড়াতে অভিযান চলছে। কিছু এলাকায় শুয়োরের রক্তের নমুনাও ফের সংগ্রহ হবে।

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, আজ বৃহস্পতিবার থেকে কোচবিহারের আশঙ্কাপ্রবণ এলাকা বলে চিহ্নিত একাধিক ব্লকে ওই নমুনা সংগ্রহ করা শুরু হবে। শুক্রবারেও তা চলবে। শনিবার ওই নমুনা ডিব্রুগড়ে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে। আগে ওই নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। কয়েকটি রিপোর্ট নিয়ে সংশয় থাকায় ফের দ্বিতীয় দফায় পরীক্ষার সিদ্ধান্ত হয়েছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death Fever Cooch Behar Medical College
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE