Advertisement
E-Paper

দূরত্ব অতীত, প্রার্থী হয়েই রবির বাড়িতে গেলেন মিহির

প্রার্থী হয়েই ‘ভাঙা’ সম্পর্ক মেরামত করতে তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতির বাড়ি গেলেন দলের অন্যতম নেতা মিহির গোস্বামী।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৬ ০১:৪৬
মিহির গোস্বামীর নামে দেওয়াল লিখন কোচবিহারে। —নিজস্ব চিত্র।

মিহির গোস্বামীর নামে দেওয়াল লিখন কোচবিহারে। —নিজস্ব চিত্র।

প্রার্থী হয়েই ‘ভাঙা’ সম্পর্ক মেরামত করতে তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতির বাড়ি গেলেন দলের অন্যতম নেতা মিহির গোস্বামী।

শনিবার দুপুরে কোচবিহার দক্ষিণ কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী মিহিরবাবু কোচবিহার শহরের নতুন পল্লী এলাকায় দলের জেলা সভাপতির বাড়িতে যান। দলীয় সূত্রের খবর, সেসময় অবশ্য রবীন্দ্রনাথবাবু নির্বাচনী প্রচারের কাজে বাইরে ছিলেন। রবিবাবুর সঙ্গে দেখা না হলেও ফোনে কথা বলেন তিনি। এমনকী, প্রায় আধঘণ্টা ওই বাড়িতে কাটান। পরিবারের লোকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আজ রবিবার সকালে বৈঠক করবেন ওই দুই নেতা।

তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “এ দিন দুপুর বারোটার মধ্যে ওঁনার আসবার কথা ছিল। অপেক্ষাও করেছিলাম। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের অনেকটা পরেও তিনি না আসায় নির্বাচনী প্রচারে বেরোতে হয়।” অন্যদিকে তৃণমূলের কোচবিহার দক্ষিণ কেন্দ্রের প্রার্থী মিহির গোস্বামী বলেন, “সভাপতি হিসেবে রবীন্দ্রনাথবাবুর নেতৃত্বেই দল জেলায় কাজ করবে। আমিও ওঁর পরামর্শ নিয়ে আলোচনা করে নির্বাচনী কাজ শুরু করব। এ দিন জেলা সভাপতির কর্মসূচি থাকায় দেখা হয়নি। তবে ফোনে কথা হয়েছে। রবিবার আলোচনায় বসব।”

দলীয় সূত্রেই জানা গিয়েছে, কোচবিহার জেলা রাজনীতিতে ওই দুই নেতাই পরিচিত মুখ। আশির দশকে একসঙ্গে চুটিয়ে যুব কংগ্রেস করেছেন। তাদের মধ্যে একসময় দারুণ সুসম্পর্কও ছিল। ১৯৯৬ সালে মিহিরবাবু কংগ্রেসের টিকিটে কোচবিহার উত্তর কেন্দ্র থেকে জয়ী হন। তৃণমূলের প্রতিষ্ঠার সময় মিহিরবাবু অবশ্য কংগ্রেসেই ছিলেন। অন্যদিকে রবীন্দ্রনাথবাবু তৃণমূলে যোগ দেন। তখন থেকে কোচবিহার জেলা সভাপতির দায়িত্বে আছেন তিনি। সম্পর্কের চিড় সেখান থেকেই। ১৯৯৯ সালে মিহিরবাবু তৃণমূলে যোগ দিলেও সেই সম্পর্কের মেরামত হয়নি। বরং জেলা রাজনীতিতে বিভিন্ন সময় ওই দুই নেতার অনুগামীদের মতবিরোধ একাধিকবার প্রকাশ্যে এসেছে। ঠান্ডা লড়াইয়ে দূরত্ব বেড়েছে যুযুধান দুই নেতার। এবার কোচবিহার দক্ষিণ কেন্দ্রে প্রার্থী হিসাবে মিহিরবাবুর নাম ঘোষিত হতেই তিক্ততা ভুলে ভাঙা সম্পর্ক জোড়া দেওয়ার ব্যাপারে উঠেপড়ে নেমেছেন মিহিরবাবু।

কিন্তু কেন এমন তৎপরতা? দলের অন্দরের খবর, মিহিরবাবু জেলা রাজনীতিতে পরিচিত মুখ হলেও ওই এলাকায় তাঁর নিজস্ব তেমন সাংগঠনিক শক্তি নেই। তার ওপর দীর্ঘদিন জয়গাঁ ডেভেলপমেন্ট অথরিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থাকায় জেলার বাইরে থাকতে হয় তাঁকে। অন্যদিকে টানা জেলা সভাপতির দায়িত্বে থাকায় রবীন্দ্রনাথবাবুর নিজস্ব সাংগঠনিক শক্তি রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে জেলা সভাপতিকে স্বাভাবিকভাবেই পাশে পেতে চাইছেন তিনি। সেজন্যই তড়িঘড়ি রবীন্দ্রনাথবাবুর বাড়িতেও ছুটে যান। মিহিরবাবু অবশ্য বলেন, “কোনও সময়েই আমাদের সম্পর্ক কোনও দিনই খারাপ ছিল না। কোনও মত বিরোধও নেই।”

মিহিরবাবু আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু না করলেও কোচবিহারের বাকি আটটি আসনের তৃণমূলের অন্য প্রার্থীরা অবশ্য আসরে নেমে পড়েছেন। নাটাবাড়ি কেন্দ্রের প্রার্থী গতবাবের জয়ী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ সকালে বলরামপুর, বাবুরহাট এলাকায় প্রচার চালান। মাথাভাঙা শহরে কর্মী বৈঠক করে নির্বাচনী কমিটি গড়েন বিনয়কৃষ্ণ বর্মন। দিনহাটা কেন্দ্রের প্রার্থী উদয়ন গুহ বুড়িরহাট এলাকায় কর্মিসভা করেন। হলদিবাড়ি এলাকায় নিজের ছাত্র জীবনের শিক্ষকদের বাড়ি বাড়ি প্রচারে যান মেখলিগঞ্জ কেন্দ্রের প্রার্থী অর্ঘ্য রায় প্রধান। তুফানগঞ্জের প্রার্থী ফজল করিম মিঁয়া অন্দরান ফুলবাড়ি ও বালাভূতে কর্মিসভা করেন। কোচবিহার উত্তরের প্রার্থী পরিমল বর্মন মধুপুর, পুন্ডিবাড়ি-সহ একাধিক এলাকায় নির্বাচনী কর্মিসভা করেন। শীতলখুচি কেন্দ্রের প্রার্থী হিতেন বর্মন অনুগামীদের নিয়ে কোচবিহারে দলের জেলা সভাপতির বাড়িতে যান। নির্বাচনী রণকৌশল চূড়ান্ত করার ব্যাপারে দীর্ঘ আলোচনা হয়।

প্রার্থী তালিকা ঘোষিত না হলেও বসে নেই বিরোধীরাও। কোচবিহার দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের কর্মিসভা করে বিজেপি। পান্থনিবাসের সভায় রাজ্য সম্পাদক রথীন বসু ছিলেন। তুফানগঞ্জের দেওচড়াইয়ে কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করেন সিপিএম নেতা তারিণী রায়, তমসের আলি। কংগ্রেসের জেলা সভাপতি শ্যামল চৌধুরী জানান, সাংগঠনিক কাজ হচ্ছে। তালিকা ঘোষণার পরে প্রচার হবে।

Cooch Behar district TMC election
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy