হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরেও, বাড়ি থেকে কেউ নিতে আসেননি। গৌতম ঘোষ নামে এক রোগী সম্ভবত সেই অভিমানেই সোমবার ভোরে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তিনি অস্থি চিকিৎসা বিভাগে ভর্তি ছিলেন। আগুনে তাঁর শরীরের বেশির ভাগ অংশই পুড়ে গিয়েছে।
হাসপাতালের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, পরিবারের লোকেরা তাঁর খোঁজ খবর করতেন না। তা নিয়ে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন ওই রোগী। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার মৈত্রেয়ী কর জানান, শৌচালয়ে ঢুকে দরজা আটকে গায়ে আগুন দিয়েছেন ওই রোগী। পরে স্বাস্থ্যকর্মী এবং সেখানে থাকা লোকজন মিলে দরজা ভেঙে তাঁকে উদ্ধার করেছে। তিনি বলেন, ‘‘তাঁকে চিকিৎসকরা ছুটি দিলেও বাড়ি যাননি।’’ তাঁর পরিবারের লোকেরা কেউ এখনও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি।
পুলিশ এবং হাসপাতাল সূত্রেই খবর, গত ২৪ জানুয়ারি ডান হাতের কনুইয়ের অংশ ভেঙে যাওয়ায় তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন। রোগী নিজেই এসে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে ভর্তি হয়েছিলেন। অর্থোপেডিক ওয়ার্ডে ভর্তি করিয়ে তাঁর চিকিৎসা চলছিল। চিকিৎসক হাতে অস্ত্রোপচারের কথা জানালেও তিনি রাজি হননি। হাতে প্লাস্টার করে দেওয়া হয়েছিল। ১৭ ফেব্রুয়ারির পর তাঁকে ছুটি-ও দেওয়া হয়। তবে পরিবারের লোকেরা নিতে না-আসায় তিনি বাড়ি যাননি।
তবে হাসপাতাল সূত্রে খবর, তিনি বাড়ি যেতে চেয়েছিলেন। বাড়ির লোকজনের সঙ্গে তাঁর কীসের বিবাদ, কেন তাঁরা তাঁকে নিয়ে যেতে আসছেন না, সে কথাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। কী ভাবে তাঁর হাত ভেঙেছিল, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এদিন শৌচালয়ে গিয়ে দরজা আটকে দেশলাই দিয়ে গায়ে আগুন লাগান বলে পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে। পরে চিৎকার শুনে ওয়ার্ডের নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীরা যান। বারবার বলার পরেও দরজা খুলছেন না দেখে দরজা ভেঙে তাঁকে উদ্ধার করেন। শরীরের বেশির ভাগ অংশই পুড়ে গিয়েছে। সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি করিয়ে তাঁর চিকিৎসা চলছে।
ভর্তির সময় নিজের ঠিকানা শুধু মালবাজার বলে জানিয়েছিলেন। মালবাজার থানাকে বিষয়টি জানিয়ে পরিবারের হদিশ পেতে চেষ্টা চলছে। মৃত্যু মুখে থাকা ওই রোগীর জবানবন্দি নিতে পুলিশের তরফে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে। একটু সুস্থ হলে তবেই তিনি কথা বলতে পারবেন বলে হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy