Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

ট্রলি ঠেলতে টাকা, নালিশ

মাসিদুররা একা নন, মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে এসে ট্রলির জন্য এমনই সমস্যার মুখে পড়তে হয় অন্যান্য রোগীর আত্মীয় পরিজনদেরও। তাঁদের অভিযোগ, ট্রলির জন্য হাসপাতালের কর্মীদের একাংশ টাকা দাবি করেন। এমনকী, ট্রলি ঠেলে রোগীকে ওয়ার্ডে নিয়ে যেতেও ২০ থেকে ৩০ টাকা করে নেওয়া হয়।

অসুস্থ: এ ভাবেই মাকে নিয়ে গেলেন দুই ভাই। নিজস্ব চিত্র।

অসুস্থ: এ ভাবেই মাকে নিয়ে গেলেন দুই ভাই। নিজস্ব চিত্র।

অভিজিৎ সাহা
মালদহ শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৭ ০২:২৮
Share: Save:

পেটের যন্ত্রণায় কাতর বৃদ্ধা মাকে কালিয়াচক থেকে অ্যাম্বুল্যান্স করে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন মাসিদুর রহমান ও দিলবর শেখ। রোগীকে অ্যাম্বুল্যান্সে বসিয়েই ট্রলির জন্য ছুটে যান জরুরি বিভাগে। কিন্তু মিনিট দশেকের অপেক্ষাই সার। মেলেনি ট্রলি। বাধ্য হয়ে অসুস্থ মাকে কোলে করে জরুরি বিভাগে নিয়ে যান দুই ভাই।

মাসিদুররা একা নন, মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে এসে ট্রলির জন্য এমনই সমস্যার মুখে পড়তে হয় অন্যান্য রোগীর আত্মীয় পরিজনদেরও। তাঁদের অভিযোগ, ট্রলির জন্য হাসপাতালের কর্মীদের একাংশ টাকা দাবি করেন। এমনকী, ট্রলি ঠেলে রোগীকে ওয়ার্ডে নিয়ে যেতেও ২০ থেকে ৩০ টাকা করে নেওয়া হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সব জেনেও নিশ্চুপ থাকায় ক্ষোভে ফুঁসছেন মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে আসা রোগীর আত্মীয় স্বজনেরা।

মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরনো এবং নতুন মিলিয়ে মোট ৫০টি ট্রলি রয়েছে। জরুরি বিভাগে রয়েছে পাঁচটি ট্রলি। এ ছাড়া প্রতিটি ওয়ার্ডে গড়ে চার থেকে পাঁচটি করে ট্রলি রয়েছে। যা প্রয়োজনের তুলনায় কম বলে দাবি হাসপাতালের কর্মীদের একাংশের। তাঁদের দাবি, মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে কমপক্ষে ১০০টি ট্রলি মজুত রাখা প্রয়োজন। কারণ এই হাসপাতালে রোগীর ভিড় অত্যন্ত বেশি। মালদহের পাশাপাশি, দুই দিনাজপুর, মুর্শিদাবাদ এবং বিহার ও ঝাড়খন্ড থেকেও রোগীরা রেফার হয়ে চিকিৎসার জন্য মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে আসেন। চিকিৎসা করাতে এসে অন্যান্য সমস্যার মতো ট্রলি নিয়েও নাজেহাল হতে হয় রোগীর আত্মীয় পরিজনদের।

জানা গিয়েছে, জরুরি বিভাগে মোট দু’জন স্থায়ী কর্মী রয়েছেন। এছাড়া অস্থায়ী কর্মী রয়েছেন ১৫ জন। দিন ও রাতে ভাগ করে ডিউটি করেন তাঁরা। তবুও রোগীদের অ্যাম্বুল্যান্স থেকে নামিয়ে জরুরি বিভাগ থেকে ট্রলি জোগাড় করে রোগীকে ভিতরে নিয়ে যেতে হয় সঙ্গে আসা আত্মীয়দেরই। জরুরি বিভাগ থেকে ওয়ার্ডে ট্রলি ঠেলে নিয়ে যান অস্থায়ী কর্মীরা। তখনই তাদের একাংশ ২০ থেকে ৩০ টাকা করে টাকা নেয় বলে অভিযোগ। রাতের দিকে আদায় করা হয় ৫০ টাকা পর্যন্ত। অনেকে দিতে অস্বীকার করলে, ট্রলিতে হাত দেন না ওই কর্মীরা।

হবিবপুরের বাসিন্দা সুনীল বর্মন বলেন, ‘‘প্রসব যন্ত্রণা শুরু হওয়ায় আমার স্ত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছিলাম। অস্থায়ী কর্মীদের দাবি মতো টাকা না দেওয়ায় প্রসুতি বিভাগ থেকে হেঁটেই স্ত্রীকে ওয়ার্ডে নিয়ে যেতে হয়েছে। হাসপাতালের সুপার তথা সহ অধ্যক্ষ অমিত কুমার দাঁ বলেন, ‘‘এমন অভিযোগ কখনও পাইনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে। আর ট্রলির পরিমাণও বাড়ানো হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE